আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জুন মাসে দেখা মুভিস

যতটুকু মনে করতে পারি, একমাসে সব্বোচ্চ সিনেমা দেখলাম এই জুন মাসেই, ১৮টা। এত সিনেমা দেখার কিছু সমস্যা হলো, কোন সিনেমাই খুব ভালো করে দেখা হয় না, জানা্ও হয় না। তাই মনে হয় এটাই রেকর্ড হিসেবে থাকবে। হ্যাপি মুভি টাইম। আপনার দেখা সিনেমাগুলো শেয়ার করতে পারেন এখানে Shallow Grave, ইউএসআ, ১৯৯৪ স্লামডগ মিলিওনেয়ার খ্যাত ড্যানি বয়েলের প্রথম দিকের সিনেমা।

দুটো ছেলে আর একটা মেয়ে যে বাসাটায় ভাড়া থাকে সেখানে একজন নতুন রুমমেট দরকার। নতুন যে লোকটি উঠল, দুদিন পরে তার মৃতদেহ পাওয়া গেল বিছানায়, আত্মহত্যা। কিন্তু তার ট্রাঙ্কভর্তি টাকা, অনেক টাকা। সেই টাকা আর লোকটার খোজে এল পুলিশ, তার দলের সদস্যরা। সেই টাকার দখল আর ভাগ বাটোয়ারা তিনটে মানুষকে কেমন পাল্টে দিলো।

দারুণ সিনেমা। স্বল্প বাজেটে টানটান উত্তেজনা। ড্যানি বয়েলের প্রথম দিকের সিনেমার সাথে বর্তমানের সিনেমা তুলনা করতে বেশ প্রয়োজনীয় সিনেমা। রেটিং: ৪.৫/৫ No mans land, বসনিয়া, ২০০১ ঘটনাচক্রে একটি নো ম্যানস ল্যান্ডের ট্রেঞ্চে আটকা পড়ে একজন বসনিয়ান একজন সার্ব যোদ্ধা। ক্ষমতার লড়াই, মিডিয়ার আধিপত্য আর রক্ষাকারীর অক্ষমতার এক অপূর্ব সমন্বয় এই সিনেমায়।

অসাধারণ এক গল্প, যুদ্ধবিরোধী দারুন এক সিনেমা। রেটিং: ৫/৫ Juno, ইউএসআ, ২০০৭ বারো বছরের এক মেয়ে সেক্স কি জিনিস সেইটা জানতে চেয়ে সহপাঠির সাথে মিলন এবং অকাল প্রেগন্যান্সি নিয়ে কাহিনী। আমি বুঝি নাই, এইটা কি খুব কমেডি কোন সিনেমা নাকি? এই সিনেমা দেখার সময় মনে হচ্ছিল আমি বোধহয় এই যুগের না, কোন ভাবে প্রস্তরযুগ থেকে চলে আসছি – কারণ এই স্টোরি মেনে নিতে আমার কষ্ট হচ্ছিল। রেটিং: ৪/৫ A walk to remember, ইউএসআ, ২০০২ এই রোমান্টিক সিনেমাটার নাম এত এত শুনছি যে কান ঝালাপালা। সিনেমাটা দেখতে দেখতে আমি মনে মনে বাংলায় ট্রান্সলেশন করে ফেললাম – এক হুজুরের বোরকা পড়া মেয়ের সাতে হঠাৎ লাফাঙ্গা টাইপের এক ছেলের প্রেম হয়া গেল।

হুজুর কোন ভাবেই মেনে নিবে না, কিন্তু একদিন হঠাৎ বোরকা পড়া মেয়েটা তারে গিয়া বুঝাইল – বাবা আমি কি বুঝি না, ডেটিং এ গেলেই কি আমি খারাপ হয়া যাবো? আমরা দর্শকরা কি সাধারণ, তাই না? সিনেমার পরিচালকরা যাই দেখান, তাই দেখি আর আহা উহু করি। ডিসগাস্টিং। রেটিং: ৩.৫/৫ The Seventh Seal, বেলজিয়াম, ১৯৫৭ ইঙ্গমার বার্গম্যানের বিশ্ববিখ্যাত সৃষ্টি। যম যখন দুয়ারে, নাইট তখন তাকে প্রস্তাব দেয় দাবা খেলার জন্য। যদি যমদূত জিতে যায়, তবে নিশ্চিন্তে জান নিয়ে যেতে পারবে, অন্যথায় নয়।

শুরু হলো খেলা। সাদাকালোয় নির্মিত এই সিনেমাটা তার থিমেটিক বক্তব্যের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছে। সিনেমা শিক্ষার্থীদের মাস্ট সি সিনেমা। রেটিং: ৫/৫ Laboratory, ভারত, ২০১০ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ল্যাবরেটরি গল্প অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা। পরিচালক চেষ্টা করেছেন ভালোই, সিনেমার প্রয়োজনে রবীনা টেন্ডনকে দিয়ে ভাঙ্গা বাংলায় কথা বলিয়েছেন সত্য, কিন্তু নজর টানতে পারেন নাই।

আমি হতাশ। রেটিং: ৩/৫ Mr Bean’s holiday, ইউএসআ, ২০০৭ অলটাইম কমেডি সিনেমা। কার্সন ক্লে রচিত, প্রযোজিত, পরিচালিত, অভিনীত সিনেমাটার কথা মনে থাকবে সবসময়। আনন্দ দেয়ার যে উদ্দেশ্য নিয়ে সিনেমাটা নির্মিত, তা শতভাগ অর্জিত হয়েছে। রেটিং: ৫/৫ Ice Age 3, ইউএসআ, ২০১০ অ্যানিমেশন সিনেমা।

এনজয়েবল। রেটিং: ৪.৫/৫ My Japanese Wife, ভারত, ২০১০ অপর্না সেনের সর্বশেষ সিনেমা। চিঠির মাধ্যমে জাপানী এক মেয়ের সাথে প্রেম-পরিণয়। অথচ এখন পর্যন্ত মুখ দর্শন হলো না। কঠিন রোগে আক্রান্ত জাপানী বউ, চলে ভারতীয় চিকিৎসা, অথচ শেষ পর্যন্ত মরে গেল জামাইটা।

দারুন গল্প। অপর্নার অন্যান্য কাজগুলোর মতোই এখানে লোকেশন এবং সিনেমাটোগ্রাফি দারুন। রেটিং: ৫/৫ Peepli [live], ভারত, ২০১০ বহুল আলোচিত সিনেমা। দারিদ্রের যাতনা সইতে না পেরে দুই ভাইয়ের একজন আত্মহত্যায় রাজী হয়, কারণ তাহলে সরকার থেকে পাওয়া যাবে ১ লাখ রূপী। লোকাল সাংবাদিকের কান থেকে সেই কথা চলে যায় মুম্বাইয়ের টিভি ইন্ডাস্ট্রিতে।

তাদের আগমনে মেলা বসে দরিদ্রের পর্ণকুটিরে, আসে সার্কাস, খাবার বিক্রেতারা। রাজনৈতিক নেতারাও আসে – এ যে তাদের জন্য বিশাল ইস্যূ। দারুন পটভূমি। দারুন সিনেমা রেটিং: ৫/৫ The day of the Jackal, ফ্রান্স, ১৯৭৩ গতমাসে দেখা ১৮ টি সিনেমার মধ্যে সবচে’ পছন্দের সিনেমা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট চার্লস দ্য গলকে হত্যা করার জন্য নিয়ে আসা হয় এক ভারাটে খুনীকে, নিজেকে সে জ্যাকল বলে পরিচয় দেয়।

ধীরে ধীরে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে প্রেসিডেন্টকে হত্যার জন্য একটু একটু করে এগোয় সে, ওদিকে তাকে ধরার জন্য পুলিশ ছুটিতে থাকা এক ডেপুটি কমিশনারকে ডেকে পাঠায়। ফ্রেডারিক ফোরসাইথের গল্প অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা। তার এই জ্যাকল চরিত্রটি পরবর্তীতে এক বাস্তব মানুষের সাথে জড়িত হয়ে যায়, একজন ভারাটে খুনী হবার অপরাধে সে এখন জেল খাটছে। থ্রিলারপ্রেমিদের জন্য মাস্ট সি সিনেমা। রেটিং: ৫/৫ Grosse Point Blank, ইউএসআ, ১৯৯৭ দ্য ডে অব দ্যা জ্যাকল দেখার পরে ‘হিটম্যান’ সিনেমা দেখার আগ্রহ জন্মায়।

এই সিনেমাটার হিরো অনেকের সেরা হিটম্যানের তালিকায় রয়েছে, তাই দেখা হলো সিনেমাটা। এটা যতটা না অ্যাকশন সিনেমা তারচে বেশী কমেডি আর রোমান্টিক সিনেমা। খুব একটা ভালো লাগে নি, দেখার মতো নয়। রেটিং: ৩/৫ The Killer, হংকং, ১৯৮৯ মিশন ইম্পসিবল খ্যাত জন উ’র সিনেমা। এটিও একটি হিটম্যান সিনেমা।

পেছনে পুলিশ অফিসার, সামনে একদল মাফিয়া। এই টাইপের কাহিনী নিয়ে বোধহয় বাংলাদেশেও সিনেমা হয়েছে। জন উ’র পরিচালনায় এটা আরও উপভোগ্য হয়েছে এই যা। না দেখলেও চলে। রেটিং: ৩/৫ Tokhon 23, ভারত, ২০১০ সিনেমা নিয়ে লেখার সুবাদে মাঝে মধ্যে রিকোয়েস্ট পাই কোন নির্দিষ্ট সিনেমা নিয়ে লেখার জন্য।

‘তখন তেইশ’ সেই অনুরোধে দেখা। শৈশব থেকে শুরু করে এক পুরুষের জীবনে নারীর উপস্থিতি বিভিন্নরকম উপস্থাপন এই সিনেমায়। পাওলী দাম অভিনীত, আর আছে ইন্দ্রানী হালদার। সাইকোলজিক্যাল সিনেমার দিকে ভারতের এক ধাপ। রেটিং: ৪.৫/৫ The Proposition, অস্ট্রেলিয়া, ২০০৭ চার ভাইয়ের সম্মিলিথ গ্যাং, পুলিশের কাছে ধরা পড়লো দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ভাই।

তৃতীয়জনকে ছেড়ে দেয়া হলো এই শর্তে আগামী ক্রিস্টমাসের আগে বড়ভাইকে নিয়ে ফিরতে হবে, তাহলে ছেড়ে দেয়া হবে তৃতীয়ভাইটিকে, অন্যথায় ফাসিতে ঝুলবে। পুরোটাই ভিন্ন ধরনের ওয়েস্টার্ন সিনেমা। রেটিং: ৪.৫/৫ The Sting, ইউএসআ, ১৯৭৩ গ্রুপ জালিয়াতি কি জিনিস সেটা বুঝতে হলে এই সিনেমাটা অবশ্যই দেখতে হবে। নেতা পল নিউম্যান কিভাবে মন্দার সময় কতটা প্রফেশনালভাবে ঠকাতে পারে তার জন্য এই সিনেমার তুলনা নেই। রবার্ট রেডফোর্ট আছেন নিউম্যানের সাথে।

রেটিং: ৫/৫ August Rush, ইউএসআ, ২০০৭ মিউজিক নিয়ে এই সিনেমাটার কথা এতবার শুনেছি, তার ইয়ত্তা নেই। হয়তো এ কারণেই কিনা জানি, আমি প্রচন্ড হতাশ সিনেমাটা দেখে। কাহিনীটাই অবাস্তব, তবে মিউজিক আর গিটার বাজানোর নতুন পদ্ধতি জানতে এই সিনেমা দেখতে হবে। প্রত্যেকের কাছে জীবন সংক্রান্ত ধারনাটাও বোঝা চাই। রেটিং: ৩.৫/৫ It’s a wonderful Life,ইউএসআ, ১৯৪৫ এটাও বন্ধুর অনুরোধে দেখা।

ফ্রাঙ্ক কাপরার শেষ সময়ের ফ্লপ কিন্তু অন্যতম সেরা ক্ল্যাসিক সিনেমা। সমাজে ভালো মানুষরা কিভাবে গুরুত্বপূর্ন তার একটা সুন্দর উদাহরণ এই সিনেমা। দেখার পর আমার উপলব্ধি: সমাজে ভালো মানুষরা হলো মেয়েদের চুলের কাটার মতো, যাদের অবর্তমানে সবাই অবাধ্য আর উশৃংখল হয়ে যায়। রেটিং: ৫/৫ ভারতীয় সিনেমা আমদানীর বিরোধিতা প্রসঙ্গে আমার ৩ পর্বের পোস্ট: ভগবান বাঙলাদেশী সিনেমাকে তুমি বাচিয়ে রেখো সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে কেন আমি ভারতীয় সিনেমা আমদানী বিরোধিতা করি আপনাকে আমন্ত্রন, দারাশিকোর সিনেব্লগ, চিত্রগ্রাফী এবং ডাউনলোডনামায় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।