আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সড়ক দুর্ঘটনাঃ সামান্য ব্যবস্থাপনার পরিবর্তনে প্রতিবছর বেঁচে যেতে পারে হাজারো প্রাণ

শিক্ষা যেখানে অসম্পূর্ণ, জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, মুক্তি সেখানে অসম্ভব। আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর লক্ষ লোক মারা যায়। দুর্ঘটনায় হাত-পা বা শরীরের কোন অঙ্গহানী হয়ে অনেকেই বেঁচে থাকেন জড় পদার্থের মত। অথচ সড়ক ব্যবস্থাপনায়, বিশেষ করে Roadside Plantation এবং রাস্তার মোড়ের স্থাপনাগুলোর ব্যবস্থাপনায়, সামান্য পরিবর্তন এনে প্রতিবছর হাজারো প্রাণকে রক্ষা করা যেতে পারে, বাঁচানো যেতে পারে পঙ্গুত্বের হাত থেকে। আমাদের দেশের হাই্ওয়েসহ আন্তজেলা, আন্ত থানা সংযোগ সড়কগুলোতে রয়েছে প্রচুর বাঁক।

প্রতিবছর আমাদের দেশে যে প্রচুরসংখ্যক দুর্ঘটনাগুলো ঘটে তার বেশিরভাগই ঘটে রাস্তার বাঁকগুলোয়। বাঁকগুলোয় এত দুর্ঘটনাপ্রবণ হওয়ার প্রধান কারণ বাকগুলোয় একজন ড্রাইভারের ভিজিবিলিটি কমে আসে। পুরো বাঁকটা না ঘুরে সে দেখতে পারে না যে ওপাশ থেকে কোন যানবাহন আসছে কিনা। অথবা চালককে উঁকি মেরে ওপাশের যানবাহন দেখতে হয়। হাইওয়েতে, বিশেষ করে রাজধানীর সাথে সংযোগ সড়কগুলোয় এ সমস্যা কিছুটা হলেও কম।

কিন্তু জেলা-জেলা, জেলা-থানা, থানা-ইউনিয়ন সংযোগ সড়কগুলোয় এ সমস্যা খুবই প্রকট। কিন্তু এ সমস্যাটি সমাধান করতে তেমন কোন খরচ নেই বললেই চলে, প্রয়োজন কেবল ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা। নিচের ছবিগুলো লক্ষ্য করুন (কোনরকমে আঁকা এবং চাইনিজ মোবাইলে তোলা)। একটা তিন রাস্তার মোড়। এটা একটা বাঁক।

একটা আঁকাবাঁকা রাস্তা। উপরের ছবিগুলোয় রাস্তার বাঁকগুলোতে কিছুটা অংশে আমি 'xxxxx' চিহ্ন দিয়ে রেখেছি। এই ক্রশচিহ্নিত এলাকায় গাছ বা অন্য কোন স্থাপনা থাকলে চালকদের ভিজিবিলিটি কমে আসে। ফলে এসব জায়গায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আমি মনে করি শুধুমাত্র এটুকু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রতিবছর কয়েক হাজার প্রাণ রক্ষা সম্ভব।

কিন্তু আমাদের সড়ক ও জনপথ বিভাগ, এলজিইডি, বন বিভাগ এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। আমাদের এসব কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপার জানেন বলেই মনে করি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ না জানলেও রাস্তা বনায়ন কর্তৃপক্ষ (সামাজিক বনায়ন বিভাগ) অবশ্যই জানেন। কাজটি মোটেই দুরূহ নয়। আমাদের সবুজ প্রয়োজন।

প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই প্রয়োজন। কিন্তু যে প্রাণের জন্য আমাদের সবুজ প্রয়োজন সে প্রাণের বিনিময়ে, হোক না সে কেবল একটাই, সবুজ আমরা চাই না। দ্বিতীয়ত, এতে এমন কতখানি রোডসাইড প্লানটেশন ধ্বংস হচ্ছে না যা আতংকজনক, বরং মৃত্যু বা পঙ্গুত্বগুলোই বেশি আতংকজনক। তৃতীয়ত, রাস্তার পাশের গাছ হল নেতাদের লুটেপুটে খাওয়ার জন্য, সাধারণ মানুষ কতখানি লাভবান হয় তা এদেশের প্রতিটা নাগরিকই জানে। শুধু গাছ নয়, রাস্তার মোড়গুলোয় অবৈধ স্থাপনাগুলোও উচ্ছেদ প্রয়োজন।

গাছের ফাঁকা দিয়ে হয়তো একটু আধটু দেখা যায়, ঘর-বাড়ী-দোকান-পাট থাকলে ভিজিবিলিটি শুণ্যে নেমে আসে। সুতরাং এ বিষয়টিকে যত দ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষের নজরে আনা উচিত বলে মনে করি। ==================== ছাত্রজীবনেই এ চিন্তাটা আমার মাথায় এসেছিল (একাডেমিক কারণে অবশ্য)। তখন ভাবছিলাম পত্রিকায় লিখব। কিন্তু পত্রিকায় লিখতে চাইলেই তো লেখা যায় না! তাই লেখা হয়নি।

চট্টগ্রামের দুর্ঘটনাটাই আজ এ লেখাটির কথা মনে করিয়ে দিল। কতগুলো শোকাহত পরিবারের সারা জীবনের কান্না হয়ে থাকল আজকের দুর্ঘটনাটি। ভাবতেই বিষাদ ছুঁয়ে যায়। যদিও কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে আমি জানি না, তবে এ কারণটি অনেক গুরুত্বের দাবিদার এবং এখনই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া জরুরী মনে করছি। ছাত্রজীবনেও যেমন ছিলাম, এখনও তেমন আছি।

আপনারা যারা পত্রিকায় লেখালেখি করেন তারা এ ব্যাপারটিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে পত্রিকায় দু'কলম লিখলে খুশী হব। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।