আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অসংখ্য ছাত্রীর সাথে যৌন মিলনের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন, শিক্ষক পরিমল।

আপনাদের সমর্থন আমাকে লিখার প্রেরনা যোগায়। শুধু অভিযোগকারীই নয়, ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আরও অনেক ছাত্রীকে বশ করেছিলেন পরিমল জয়ধর। তার মূল টার্গেটে ছিল বাসায় পড়তে যাওয়া ছাত্রীরা। লোভ দেখাতেন বেশি নম্বরের। বিয়ের কথা গোপন করে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করেছিলেন তাদের কয়েকজনকে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে যৌন নির্যাতনের এমন অভিযোগ কবুল করেছেন শিক্ষক পরিমল। গতকাল সকালে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানিগঞ্জের আমিরাবাগ (জিঞ্জিরা) গ্রামে স্ত্রীর বড় বোনের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর বিকালে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে গোয়েন্দা পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে ডিসি (দক্ষিণ) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, পরিমলের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আরও কোন শিক্ষক জড়িত কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত পরিমল অভিযোগকারী ছাত্রীর ওপর কয়েক দফায় নির্যাতন করেছে।

আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করেছে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী শিক্ষকের এমন নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে প্রথমে সহপাঠী পরে পরিবারকে। একপর্যায়ে ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখাসহ বেইলি রোডের মূল ভবনেও ছাত্রী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে ছাত্রী ও অভিভাবকরা একজোট হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দারা পরিমলকে গ্রেপ্তার করার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পারচালনা করেন।

এক পর্যায়ে গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার গোলাম মোস্তফা রাসেলের একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গোয়েন্দারা জানান, সকাল ৬টার দিকে গ্রেপ্তারের পরপরই পরিমলকে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগকারী ছাত্রীর ওপর যৌন নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছে সে। একই সঙ্গে আরও একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে ব্ল্যাকমেইল করার তথ্য দিয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, কোচিং করতে যাওয়া ছাত্রীদের বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দিতো পরিমল।

বেশি নম্বর দেয়ার লোভ দেখিয়ে বাসায় একা একা যেতে প্রলুব্ধ করতো। যেসব ছাত্রী তার ফাঁদে পা দিতো, তাদের কাছে নিজের স্ত্রী ও ১০ বছর বয়সী ছেলে সন্তানের কথা গোপন করে ভাব জমাতো। পড়ানোর নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতো। এমন কলাকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তাদের বশে আনতো। পরে সুযোগমতো ওই ছাত্রীদের জিম্মি করে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করতো।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, একজন ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক ছাত্রী পরিমলের লাম্পট্যের কথা প্রকাশ করেছে। নির্যাতিত ছাত্রীরা একযোগে তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। কোচিংয়ে পড়ানোর নাম করে ওই শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরেই এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড করছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। গোয়েন্দারা জানান, পরিমল জয়ধরের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানার লাটেঙ্গা ভাঙ্গার হাট গ্রামে। কোটালীপাড়া বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স পাস করে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন খুলনা বিএল কলেজ থেকে।

সমপ্রতি অনুষ্ঠিত ২৯ বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এর আগে ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের প্রিন্সিপাল হোসনে আরা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে এমন লম্পট ব্যক্তির নিয়োগ ঠেকাতে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হবে। পরিমলের সাবেক সহকর্মীরা জানান, পরিমল তার স্ত্রী ও সন্তানকে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ২৬ নম্বর রোডের ৭ নম্বর ভাড়া বাসায় রাখতেন। নিজে একা থাকতেন বাড্ডা এলাকায়। এক সন্তানের জনক হয়েও ছাত্রীদের কাছে অবিবাহিত বলে পরিচয় দিতেন।

অভিযোগকারীর অশ্লীল ভিডিও চিত্রের সন্ধানে গোয়েন্দারা: গোয়েন্দারা জানান, অভিযোগকারী ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও চিত্রের সন্ধানে পরিমলের বাসাসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। তার ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল সেটের একটি উদ্ধার করা হয়েছে। অশ্লীল ভিডিও চিত্র কোথায় রেখেছে- সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ওই ভিডিও চিত্রটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। গোয়েন্দারা জানান, যে সেটটি দিয়ে ছাত্রীর নগ্ন চিত্র ধারণ করেছিল পরিমল সেই সেটটি আগেই লুকিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার ১০ম শ্রেণীর এক ছাত্রী ওই স্কুলের বাংলা বিভাগের শিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে। সুত্র ঃ মানব জমিন। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।