আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সময় যেন কাটে না ................. !

সময় যেন কাটে না....... একটি জনপ্রিয় গানের কলি। কাজের তাড়া না থাকলে সময় এ রকম দুর্বহ হয়ে পড়ে। সময় যেন দীর্ঘ হতে শুরু করে। আরো ভয়ঙ্কর হলো অপেক্ষার সময়। সে অপেক্ষা যদি প্রিয় জনের জন্য হয় সেটা হয়ে যায় চরম মর্মঘাতী।

প্রতিটি সেকেণ্ড হয়ে যায় যুগের চেয়ে বড়ো। এটাতো মনের কথা। সময় নিয়ে সময়ের কারবারীরা কি বলেন ? আন্তর্জাতিক সময়ের মান নির্ধারিত হয় ''সেকেণ্ড''কে ভিত্তি করে। সেই সেকেণ্ড আসলে কত বড় ? বিজ্ঞানের জটিল হিসাবে আমরা আম জনতা কোনো ঠাঁই পাবো না। একেবারে সহজ করে বললে যেটা দাঁড়ায় সেটা হলো- একটি 'সিজিয়াম-১৩৩' পরমানুর ৯১৯ কোটি ২৬ লাখ ৩১ হাজার ৭৭০ বার রেডিয়েশন সম্পন্ন করতে যে সময় লাগে সে সময়কে ধরা হয় ১ সেকেণ্ড।

গণিত বা পদার্থ বিদ্যার শিক্ষার্থীরা এর ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারেন। এ বাবদে আমার দৌড় ''মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত'' টাইপের। সেকেণ্ডের এই বিশাল হিসাব যেন প্রেমিক হৃদয়ের অপেক্ষার প্রহরের সাথে মিল রেখে করা ! তাদের অপেক্ষার প্রহরে প্রতিটি রেডিয়েশন যেন আলাদা করে অনুভব করা যায়। সেকেণ্ডের কারবারীরা আরো সূক্ষ্ম হিসাবে গেছেন। এর কয়েকটা এমন- ১ মিলি সেকেণ্ড = ১ সেকেণ্ডের ১ হাজার ভাগের এক ভাগ।

১ মাইক্রো সেকেণ্ড = ১ সেকেণ্ডের ১ মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ। ১ ন্যানো সেকেণ্ড = ১ সেকেণ্ডের ১ বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ। ১ পিকো সেকেণ্ড = ১ সেকেণ্ডের ১ ট্রিলিয়ন ভাগের এক ভাগ। রান্না ঘরে আরো আছে। আমি সেদিকে আর গেলাম না।

এ সব হিসাব পর্যন্ত ঠিকই আছে। ধাক্কা খেলাম আমাদের হিসাবে। একেকটা শব্দের যে মানে ধরে আমরা ব্যবহার করি তার আসল অর্থ সে রকম না। শুধু একটা শব্দের মানে আমাদের ভাবনার সাথে মিলে সেটা আবার আমরা ব্যবহার করি না বললেই চলে। সেটা হলো ''বিপল''।

বিপল = এক সেকেণ্ডের চার ভাগের দুই ভাগ বা ৬০ ভাগের ১ পল। আর এক ''পল'' = ২৪ ভাগের ১ সেকেণ্ড। কিশোর কুমারের সেই গানের কথা মনে পড়ে গেলো- এক পলকে একটু দেখা আরো একটু হলে ক্ষতি কি ? ক্ষতি নেই। কিন্তু পলকটা যে পলের মতোই ছোট। এ পর্যন্তও না হয় মিললো।

ড. সৈয়দ মুজতবা আলীর ''পাদটীকা"' গল্পের পণ্ডিত মশাই লেখককে (সংস্কৃত জ্ঞান দেখে) ভালোবেসে বলেছিলেন তিনি যেন ইংরেজী বিদ্যা শিক্ষা ছেড়ে দেন। বলেছিলেন, ''এই দণ্ডেই তুই চতুষ্পাঠীতে যা। সেখানেই তোর সত্য বিদ্যা হবে। '' গোলমাল বেঁধেছে ''দণ্ড'' নিয়ে। দণ্ড = ৬০ পল।

তার মানে ২৪ মিনিট ! এক দণ্ড অপেক্ষা করতে হলে থাকতে হবে পুরা ২৪টি মিনিট। কাউকে যখন বলবেন এই মুহূর্তে আমার সামনে থেকে সরে যা। তার মানে হবে তাকে আপনার সামনে থেকে সরতে হবে ৪৮ মিনিটের মধ্যে। কারণ ১ মুহূর্ত = ১ দিনের ৩০ ভাগের ১ ভাগ তথা ৪৮ মিনিট ! আমি এ কারণে আমার ''সময়জ্ঞান'' নিয়ে ভারী উদ্বিগ্ন হয়ে আছি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।