আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

০ “একজন বখাটের কথা” ০

বিটলা বিটলা বিটলা হ্যাঁ ............... আমি একজন বখাটে। বর্তমান ভাষায় “ইভটিজার’। ইভটিজিং করাই আমার কাজ !!! আমি যেমন বখাটে আমার বন্ধুরাও বখাটে। তাদের মাঝে আবার কিছু “অতি বখাটে”। এদের কয়জনের একটা সমস্যার কথা আগে বলি।

ওরা সকালে সিগারেট না জ্বালিয়া বাথরুম গেলে নাকি “বাথরুম” ঠিকমত হয় না। আমার অবস্তাও প্রায় একই। সকালে স্কুলগামী কিশোরীদের উত্তক্ত না করলে আমার দিনটা কেমন যেন অপূর্ণ থাকে!!! সবাই বখাটেদের বিরুদ্ধে, ইভেটিজিং এর বিরুদ্ধে কথা বলছে। কিন্তু তথাকথিত এ সকল বখাটেদের পক্ষে কথা বলার কেউ নাই। তাই আজ আমায় সিগারেট ফেলে কলম নিতে হল।

বন্ধু মহলে আমি হলাম স্বনামধন্য(আপনারা হয়তো কুখ্যাত বলবেন) “বিটলা বাবা”। আজ সবাই ইভটিজিং এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে, বখাটেদের শাস্তি দাবি করছে!!! এইতো সেদিন “চ্যালান আই” এর তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠান দেখলাম। উপস্থিত ছিলেন জনাব দুদু সাহেব(বি এন পি), জনাব মাহবুবুর রহমান (প্রতিমন্ত্রি,পানি সম্পদ মন্ত্রলায়) এবং কাজী ফিরোজ রশীদ (বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি)। এদের মাঝে ফিরোজ সাহেব বলেই ফেললেন ইভটিজারদের সরাসরি ক্রসফায়ার দেওয়া উচিত। যাই হোক কিছু সময় পর তারা পরস্পর দলীয় রাজনীতির কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করেন এবং যথারীতি মূল বিষয় আড়ালে পরে যায়।

আমাদের এই প্রিয় তিন নেতা কি একদিনেই কারও সাহায্য ছাড়া রাজনীতিবিদ হয়েছেন??? না!!! ঠিক তেমনি কোনো বখাটে একদিনে বখাটে হয়নি। নেতা হতে যেমন সাহায্য আর পরিবেশ (পারিবারের কারও রাজনীতি সাথে সম্পৃক্ততা) প্রয়োজন ঠিক তেমনি বখাটে হতে হলেও প্রায় একই রকম উপাদান প্রয়োজন। আমরা সবাই বখাটেদের শাস্তির কথা ভাবছি এবং বলছি। কিন্তু আমাদের মাঝে একজনও ভাবছি না – “আমাদের প্রিয় সন্তানটি কেন বখাটে হিসাবে পরিচিতি পাচ্ছে??? কি করলে তারা আর উচ্ছন্নে যাবে না। “ এই কয়দিন তো অনেক বড়বড় লেখক, গবেষক আর কর্তাব্যক্তি পত্রিকায় অনেক প্রবন্ধ লিখলেন, টিভি তে লাইভ শো করলেন এবং সবাই কঠোর শাস্তি দাবি করলেন।

একটা কথা আছে – “প্রতিকার থেকে প্রতিরোধ ভাল”। আমার মনে হয় ইভটিজিং এর ক্ষেত্রে এই কথা আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত। ইভটিজিং কোন অপরাধ নয়!!! কখন ছিল না আর হবেও না। এটা একটা ভয়াবহ ও মারাত্তক মানুষিক আর সামাজিক ব্যাধি। আমরা সবাই মিলে যা শুরু করেছি তাতে করে আর কয়দিন পর কান্সার অথবা আইচ.আই.ভি আক্রান্তদের ধরে ধরে হাজতে ভরতে হবে অথবা ক্রসফায়ার দিতে হবে (কাজী ফিরোজ সাহেবের মতে) নতুবা মোবাইল কোর্ট চালু করে তাদের জরিমানা করতে হবে।

এইবার বলি সে সকল নারীদের কথা যারা বখাটেদের কারনে আত্মহত্যা করেছে। আপনারা সবাই তাদের “প্রতিবাদী নারী” প্রতিক হিসাবে ধরে নিচ্ছেন। কিন্তু আমার দৃষ্টিতে ওরা মানুষিক রোগী ছাড়া আর কিছু নয়। শুধু আমি কেন মনোবিজ্ঞানও তাই বলে-“ আত্মহত্যা করা বা করার ইচ্ছা পোষণ করা এক প্রকার মানুষিক ব্যাধি(যদিও আমি মনোবিজ্ঞানের তেমন কিছুই জানি না)”। আবার বিভিন্ন ধর্মে(যেমনঃ ইসলাম)আত্মহত্যা কে পাপ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে।

কোন এক সময় পৃথিবীর একটি দেশে কেউ যদি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে সফল না হত তবে তাকে শাস্তি দেয়া হত মৃত্যুদণ্ড!!! তাহলে বুঝুন আত্মহত্যা কতখানি বর্জনীয় ব্যাপার। আমি ৭১’এর যুদ্ধ দেখি নাই! মায়ের কাছে শুনছি তখন নাকি অনেক নারী সক্রিও ভাবে যুদ্ধ করছে আর হাসতে হাসতে মৃত্যুকে গ্রহন করছে। এখন আপনারাই বলেন আমি যখন শুনি বখাটের ভয়ে কোন বাজ্ঞালী নারী আত্মহত্যা করছে, তখন আমি তাকে কিভাবে সুস্থ বলব??? তাহলে কি বলতে হয়না আমাদের পারিবারিক শিক্ষা, সামাজিক শিক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ত্রুটিপূর্ণ। আমাদের পরিবার-সমাজ তথা রাষ্ট্র সুস্থ ও স্বাভাবিক নাগরিক গঠন করতে পারছে না। আমার মনে হয় বখাটেদের (মানুষিক রুগী) নিয়ে আরও বেশী চিন্তা-ভাবনা, গবেষণা ও আলোচনা হওয়া উচিত।

আমরা কি কখন ভেবেছি ইভটিজিং এর সূচনা কোথায়??? নিজেকে দিয়েই উদাহরণ দেই-আমার বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত। আমার জন্ম ও জীবনের ২০ বছর দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসগুলোতে কাটিয়েছি। সেনানিবাসগুলোতে অসংখ্য খেলার মাঠ রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আমি খুব কম সেনানিবাসে বিকালবেলা খেলার সুযোগ পেয়েছি। আবার ছাদে উঠাও মানা, কারন চাচীরা তাদের রূপবতী কন্যাদের নিয়ে ছাদে উঠবেন!!! কি আর করা বিনোদনের উপায় খুঁজতে গিয়ে বখাটেদের খাতায় নাম লিখালাম।

রাস্তায় হাঁটি আর দেখি- কোন ছাদে কোন রূপবতী, কোন বারান্দায় কোন সুন্দরী!!! সন্ধ্যা হলে বাসায় গিয়ে পড়া বাদ দিয়ে প্রেমপত্র লিখা আর সকালে স্কুল যাবার সময় তা দেওয়া!!! এবার একটু ব্যাখ্যা দেই- “যদি খেলার মাঠ থাকত তাহলে আমরা বখাটেরা খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম, ইভটিজিং এর মাধ্যমে বিনোদন করতে হত না। এখন হয়তো সবাই বলবেন-“আমাদের মাজা-ভাঙ্গা অর্থনৈতিক অবস্থায় বাসস্থানের ব্যবস্থা করাই যেখানে দুষ্কর সেখানে আবার খেলার মাঠ!!!” এর উত্তরে আমি খুব সাধারন একটা উদাহরণ দেই- ২০০৭ অথবা ২০০৮ সালে শুধু মাত্র সাভার সেনানিবাসে ফুল গাছ লাগান বাবদ ১ কোটি টাকা প্রদান করা হয়। যার মাত্র ১০% অর্থ ব্যায় করলে অত্র সেনানিবাসের ছেলে-মেয়েদের বিনোদনের ব্যাবস্থা করা যেত,যা তাদের শারীরিক ও মানুষিক বিকাশ লাভে সহায়ক হত। আসলে সত্যি বলতে আমাদের অর্থের যতো অভাব তার থেকে বেশী অভাব আমাদের ইচ্ছা, মানুষিকতা ও বিচক্ষণতার। অথচও একবার ভেবে দেখুন ঐ কিশোর-কিশোরীদের মাঝেই লুকায়িত আছে ভবিষ্যতের মেধাবী আর চৌকশ সেনা কর্মকর্তা।

যাদের কে আপনারা ইভটিজিং করার সুযোগ দিচ্ছেন!!! ইতিমধ্যে বখাটেদের ধরা শুরু হয়ে গেছে। । । স্কুল-কলেজের সামনে থেকে, চা স্টলের সামনে থেকে, অলিগলি থেকে। লাভ নাই!!! কোন লাভ নাই!!! আমার মত বখাটেরা ঠিকই পাড় পেয়ে যাবে।

ধরা পড়বে যতো সব সাধারণ-নিরীহ কিশোর আর যুবক। যাদের কিনা “বেক-আপ” নাই!!! যারা কিনা আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী কে ঘুষ দিতে জানে না। আবার সেনানিবাস নিয়ে ১টা উদাহরণ দেই কারণ ওখানেই আমি বড় হয়েছি-“ মাঝে মাঝে সেনানিবাসে সাইকেল চুরি হয়। তখন সকালে জগিং করা যাবে না!!! বিকালে রাস্তায় হাঁটা যাবে না!!! সন্ধায় ক্যান্টিনে যাওয়া যাবে না!!! বাসা থাকে বের হলেই ডি.জি.আফ.আই এর জেরার সম্মুখীন হতে হবে। যেন আমরাই সাইকেল চোর!!! নিজের বাপ-চাচার সাইকেল চুরি করছি!!! তাই মনে হয় ইভটিজার কে না ধরে যা তাকে ইভটিজিং এ উৎসাহিত করে তা বন্ধ করা উচিত।

আমি জানি না শুধু ঢাকা শহরে কতোগুলা পত্রিকার দোকান আছে। কিন্তু আমি জানি এদের ৯৫% দোকানে পর্ণ ম্যাগাজিন ( বখাটের ভাষায় “চটি”) পাওয়া যায়। আবার এই বিখ্যাত “চটির” উপর লেখা থাকে “ শুধু মাত্র প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য”। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই চটির সিঙ্ঘভাগ ক্রেতাই স্কুল-কলেজের ছাত্র। আবার ভিডিও সিডির দোকানে যান।

খুব অল্প টাকায় পেয়ে যাবেন “ব্লু ফ্লিম” । সহজ বাংলায়- নীল ছবি। সাইবার ক্যাফেতে যান, দেখবেন অসংখ্য স্কুল-কলেজের ছাত্ররা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ওখানে ভীর করেছে। কেন??? এর উত্তর আমি যেমন জানি আপনিও তেমন জানেন- ওরা যায় পর্ণ ওয়েবসাইটগুলো দেখতে। তাই বলি আমার মত বখাটেদের ধরে লাভ নাই।

তাদের কে ধরুন আর ঐ সব জিনিস বন্ধ করুন যা আমাকে বখাটে করেছে। পর্ণ ম্যাগাজিন-ভিডিও আর ওয়েবসাইট বন্ধ করুন। সামান্য হলেও উপকার হবে। আমি ঢাকার অদুরে সাভারে একটা স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পরছি। তাই কিছুটা হলেও বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যাবস্থা সম্পর্কে অবহিত।

আর এ কারনেই বলছি আমার মত বখাটেদের জেলে ভরে রাখা সম্ভব নয়। কোন না কোন ভাবে আমরা বের হয়ে আসবই। অর্থ অথবা রাজনৈতিক ক্ষমতার দ্বারা আমরা নিরাপদ থাকব। বরং প্রশাসন তাদের ক্ষমতা প্রকাশের জন্য কিছু সাধারন আর নিরীহ কিশোর ও যুবককে আটক করে রাখবে( যেমন হরতালের আগের রাতে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়)। এক বছর জেল অথবা অর্থ জরিমানা করে বা বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে জুতার মালা গলায় দিয়ে কানে ধরে উঠ-বস করালে ইভটিজিং বন্ধ হবে না।

বরং এসিড সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও খুনের মত ভয়াবহ ও মারাত্তক অপরাধগুলো আরও অনেক বেশী বেড়ে যাবে। আমার দেশের আইন বিজ্ঞানীরা কেন ইভটিজিং কে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করছেন তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। এটা মনোবিকার ছাড়া আর কিছু হতেই পারে না। ইভটিজিং এর শাস্তির ব্যাবস্থা করে আমরা আমাদের নারী সমাজকে আরও বেশী বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছিনা তো??? এর চেয়ে কাজী ফিরোজ সাহেবের মতানুসারে ক্রসফায়ার দেয়াই ভাল। অন্তত আমাদের নিপীড়িত নারীদের পুনরায় একই ব্যাক্তি দ্বারা নিপীড়নের কোন সম্ভাবনা থাকবে না।

ইদানীং একটা নতুন শব্দ শুনছি –“ আদমটিজিং”। শব্দটা আমার মনে ধরেছে। অপরাধ নিয়ে একটা কথা আছে –“মানুষ সুযোগ পায়না তাই অপরাধ করে না”। তারমানে মানুষ সুযোগ পেলে অপারাধ করবেই। তাই মানুষ কে এই সুযোগ দেয়া যাবে না।

ছেলেরা কি টিজ এর শিকার হয় না??? হয়!!! কিন্তু সেটা সংখ্যায় কম, তাই আমাদের চোখে পড়ে না। স্বাভাবিক ভাবেই যেকোনো ক্ষমতা মানুষকে অহংকারী আর স্বেচ্ছাচারী করে তোলে। অনেক নারী যে “ইভটিজিং আইন” এর অপব্যাহার করবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে!!! আমি যখন “অমক বয়েজ স্কুল” “তমক গার্লস স্কুল” দেখি তখন আমার খুব রাগ হয়। স্কুল হল স্কুল। তার আবার বয়েজ আর গার্লস কেন??? আমরা সবাই “লিঙ্গ-বৌষম্য” নিয়ে হৈই-চৈই আর লাফালাফি করছি।

কিন্তু নিজের সন্তানদের বায়েজ স্কুল আর গার্লস স্কুল এ পড়াচ্ছি। নারী-পূরুষ পাশাপাশি থাকবে, হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের উন্নয়ন আর মঙ্গলের জন্য কাজ করবে এটাই তো সবার চাওয়া। তাহলে ছেলে-মেয়ে একই প্রতিষ্ঠানে পরলে ক্ষতিটা কোথায় আর বাধাটাই বা কি??? বরং এর মাধ্যমে ছেলে-মেয়ে ছোটবেলা হতেই সাহায্য-সহযোগিতা আর সহমর্মিতার শিক্ষা গ্রহন করবে। কথাটা একটু পরিস্কার করার চেষ্টা করি- ধরুন সিমা কম্বাইন্ড স্কুলে(ছেলে-মেয়ের একই স্কুল) পড়ে আর রিমা গার্লস স্কুলে পড়ে। দুজনের বয়স ১৩।

ওরা দুইজনই ইভটিজিং এর শিকার হল। এতে রিমার মনে স্থায়ী হবে যে, ছেলে মানেই খারাপ আর ভয়াবহ কোন জীব (কারন সে বখাটে ছাড়া অন্যকারও সাথে মিশার সুযোগ পাবে না)। যা তার পরবর্তী সামাজিক, পারিবারিক ও বাক্তিগত জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। অপর দিকে সিমা কম্বাইন্ড স্কুলে পড়ার কারনে তার কিছু ছেলে বন্ধু থাকবে। যারা তাকে সেই সময় সাহায্য-সহযোগিতা-সমবেদনা দিবে।

এতে করে সিমার মনে রিমার মত কোন ভ্রান্ত ধারনা স্থায়ী হবেনা। একটা কথা আছে- “যার হয় না নয় বছরে তার হয় না নব্বই বছরে”। আবার মনোবিজ্ঞান অনুসারে –“ মানুষের মনের বিকাশ ১৬ বছর বয়েসে সীমাবদ্ধ”। মানে ১৬ বছর পরে মানুষের মনের ধ্যান-ধারনা সাধারণত বদলায় না। অর্থাৎ যদি শিশুকালেই যথাযথ শিক্ষা প্রদান করা না হয় তবে তার শিক্ষা কখনই পূর্ণতা পাবে না।

৫ কিম্বা ৭ বছরের কোন ছেলেকে(শিশু) কি কখন রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে কোন মেয়েকে টিজ করতে দেখেছেন??? নিশ্চই না!!! কেন??? ছেলেরা টিজ করে যৌবনপ্রাপ্ত হবার পরে মানে ১২-১৮ বছর বয়স থেকে তারা টিজ করে থাকে। যদি এই বয়েসে সন্তানদের যথাযথভাবে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হত তবে ইভটিজিং এর পরিমান কমতো। ১২-১৮ বছর বয়সে মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন ছেলেদের থেকে অনেক বেশী। কিন্তু মানুষিক পরিবর্তন??? এটা কিন্তু সমানই। ষষ্ট শ্রেনীর গারস্থঅর্থনীতি বইয়ে তাদের বয়ঃসন্ধি নিয়ে একটা অধ্যায় রয়েছে।

কিন্তু ছেলেদের পাঠ্যপুস্তকে তেমন কিছু নেই। । আমি মনে করি, যৌনতা, যৌনজীবন,যৌনবাহিত রোগ, জন্মনিয়ন্ত্রণ আর বিকৃত যৌনাচার নিয়ে আমাদের পাঠ্যপুস্তকে পরিচ্ছন্ন, বিস্তারিত ও বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা হওয়া দরকার। একটা কথা আছে- “যদি তুমি ভালো-খারাপের সজ্ঞা না জান তবে তুমি ভাল আর খারাপ কে আলাদা করতে পারবে না”। একবার ভেবে দেখুন যে যৌনক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার আর আমার এই পৃথিবীতে আগমন তা নিয়ে আলোচনা করতে এত কুণ্ঠাবোধ কেন? ইভটিজিং রোধ করতে হলে আমাদের অবশ্যই এই ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের কিশোর ও যুব সমাজের সাথে পরিস্কার আলোচনা হওয়া অতি দরকার।

কারণ ইভটিজিং এর মূলটা কিন্তু এই যৌনতাই!!! আমরা সবাই কোন না কোন ধর্মের অনুসারী (যদিও নামে, কাজে নয়)। ধর্ম কি??? এবং কেন??? খুব সহজ ভাষায় বললে-“কিছু নির্দিষ্ট নিয়মের অনুশাসনই হল ধর্ম। যেকোন ধর্মই মানুষকে নিয়মতান্ত্রিক আর সুশৃঙ্খল করে”। আবার যে কোন ধর্মেই বিয়ে নামক ব্যাপার রয়েছে। আর বিয়ে হল নির্দিষ্ট নারী ও পুরুষের শারিরিক সম্পর্ক কে বৈধ ঘোষণা করা।

গবেষণায় দেখা গেছে বেশীরভাগ যৌনরোগের উৎপত্তি অবৈধ, অরক্ষিত ও অনিয়ন্ত্রিত যৌনসম্পর্ক (যা সকল ধর্মে বিবাহ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে)। সুতরাং যেকোনো ধর্মের যথাযথ অনুশাসন আমাদের ইভটিজিং ও যৌনবাহিত রোগ হতে দূরে রাখবে। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি সেখানেও যেকোনো ধর্মীয় লেবাস নিষিদ্ধ!!! আমি আশা করি কতৃপক্ষ ব্যাপারটি অনুধাবন করবেন। আমি মনে করি প্রত্যেক ধর্মের মানুষের জন্য তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন বাধ্যতামূলক করা উচিত। প্রয়োজনে আইন প্রণয়ন করা উচিত।

কেননা কোন ধর্মই মানুষকে বিপথগামী করে না। ইদানীং কিছু উন্নত দেশে সমকামিতা কে আইনগতভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু গবেষণায় জানা গেছে HIV এর মত ভয়াবহ সংক্রামক ব্যাধির অন্নতম প্রধান কারণ এই সমকানিতা (যদিও পরবর্তীতে প্রমাণিত হয় এর প্রধান কারণ ভাইরাস)। হয়তো আর কিছুদিন পর আমাদের এই উন্নয়নশীল বাংলাদেশেও একই আইন প্রণয়ন করা হবে!!! আমি আশা করি আমার মত আর কোন সন্তান বখাটে হিসাবে পরিচিতি পাবে না। এর জন্য প্রয়োজন যথাযথ পারিবারিক শিক্ষা, সামাজিক শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষার এক অনন্য সমন্বয়।

বিটলা বাবা +880 16 80 28 60 55 গবি , সাভার, ঢাকা - ১৩৪৪ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।