আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাঙামাটির তরুণরা আসক্ত ‘বাবা’র হাতে (একই চিত্র সারাদেশে)

আমি বেশ চুপচাপ!! রাঙামাটির তরুণরা ধীরে ধীরে ‘বাবা’র বেড়াজালে বন্দি হয়ে পড়ছে। হেরোইন ও ফেনসিডিলের চেয়ে ‘বাবা’র নেশা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়। তাই রাঙামাটির অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল পরিবারের নেশাখোর তরুণেরা এখন আশঙ্কাজনকহারে বাবার নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ছে। ইয়াবার সাংকেতিক নাম ‘বাবা’, কেউ কেউ একে লাল বড়ি বা ‘গুটি’ও বলে। বহনে ঝুঁকি কম হওয়ায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো রাঙামাটির নেশা বিক্রেতারাও ‘বাবা’ বিক্রির নতুন মিশন শুরু করেছে।

শহরের কলেজ গেইট, দেবাশীষ নগর, হ্যাপির মোড়, চম্পকনগরের বিদ্যুৎ রেস্ট হাউজের কোনা, বনরূপা, কাঁঠালতলী, বাসষ্ট্যান্ড, রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি, আসামবস্তি ও মাঝিরবস্তির অন্ততঃ ১৫ থেকে ২০টি পয়েন্টে নেশা জাতীয় এই বড়ি পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে এক ইয়াবাসেবী। তবে নকল ইয়াবাও বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সে। মায়ানমার থেকে আনা এক ধরণের ক্ষতিকর নেশার বড়ি ‘বাবা’ নামে চালিয়ে দিচ্ছে কেউ কেউ। হেরোইনের নেশায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণের বাবা বলেন, ‘মরণনেশা আমার ফুটফুটে ছেলেটার জীবন শেষ করে দিল। যখন টের পেয়েছি, তখন আমাদের আর কিছুই করার নেই।

দুইবার নিরাময় কেন্দ্রে নিয়েও কোনো ফল হয়নি। এখন সে বদ্ধপাগল। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ‘একেকবার একেকটি নতুন নেশাদ্রব্য আসে, আর আমাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। এখন যা শুনছি, তাতে ছেলেমেয়েদের ঘরে আটকে রাখা ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। ’ তিলে তিলে একটি ফুটফুটে জীবন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এ দৃশ্য সহ্য করা যায়না, কিন্তু শত চেষ্টা করেও আমরা তাদের বশে রাখতে পারছিনা।

উপরন্তু নানা জায়গা থেকে মিথ্যে বলে বাহানা করে অর্থ যোগাড় করছে নেশার জন্য, এর প্রায়শ্চিত্য করতে গিয়ে আমরা নানাভাবে অপদস্থ হচ্ছি’। পরিবারটা তছনছ হয়ে যাচ্ছে। ’ এদিকে রাঙামাটি শহরে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকদিন আগে কাঁঠালতলী সড়ক বাঁধে অটেরিক্সা থামিয়ে এক ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের সময় ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করলে তাকে রাঙামাটি হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। রিজার্ভ বাজার পার্কের আশেপাশে বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা সবার মুখে মুখে।

তবে এ বিষয়গুলো নিয়ে থানায় কোন রিপোর্ট না হওয়ায় শহরের ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো রেকর্ডভূক্ত হচ্ছে না। অভিভাবকরা মনে করছেন নেশাখোররা তাদের নেশার টাকা জোগাড় করতেই বেপরোয়া হয়ে এধরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। মাত্র কয়েকদিন আগে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নেশাদ্রব্য নিয়ে বচসার জের ধরে একজনকে ছুরিকাঘাতে পেটের নাড়িভুড়ি বের করে ফেলা হয়। আহত ব্যক্তি এখনো রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সবচেয়ে আশংকার বিষয় হলো রাজনৈতিক দলগুলোর তরুণ নেতৃত্বের একটি বড় অংশ নেশার বেড়াজালে বন্দি হয়ে পড়ায় তরুণ প্রজন্মের নিরাপদ জায়গা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে।

এসব তরুণ নেতা বড়ভাই সেজে প্রথমে নিজের পকেটের পয়সায় নেশা করাচ্ছে। এক পর্যায়ে নেশায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়ার পর তারাই বড়ভাইয়ের নেশাদ্রব্যের যোগান দিচ্ছে। রাঙামাটি শহরে ১৭ থেকে ৩০ বছর বয়সী প্রজন্মটি বিশেষ করে এ বেড়াজালে বন্দি হয়ে পড়ছে। আবার রাঙামাটি শহরে ১০থেকে ১২বছর বয়সের কিশোরদের দিয়েও এ সব নেশাদ্রব্য বিক্রি করানো হচ্ছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে বেশ কয়েকজন হেরোইনসেবী। মানভেদে একেকটি ইয়াবা বড়ি ৫০০ থকে ৭০০টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

একেকটি পাতায় লাল রঙের ২০টি করে বড়ি থাকে। একটি বড়ি সেবন করলে কমপক্ষে দুই দিন নেশা থাকে। অপর এক সেবনকারী বলেছে, ইয়াবা এখন নকল হচ্ছে। আগে একটি ট্যাবলেট সেবন করলে দুই-তিন দিন নেশা থাকত, এখন দুই-তিন ঘণ্টার বেশি থাকে না। চিকিৎসকদের মতে ইয়াবা একটি যৌন উত্তেজক (অ্যান্টিসাইকোপিক)বড়ি।

এই বড়ি সেবনকারীর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত ও মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে। বড়ি সেবনে সাময়িক যৌন উত্তেজনা বাড়লেও একসময় আসক্ত ব্যক্তি যৌন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সরকারি সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টি তড়িৎ ক্ষতিয়ে দেখে হেরোইন, ফেন্সিডিল ও ‘বাবা’ ক্রয় বিক্রয়ের সকল আস্তানা উৎখাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছে অভিভাবকমহল। সূত্র - Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.