আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৫ হাজার টাকা হতে মাসিক উপার্জনের উপর অন্তত ২% আয়কর এবং মোবাইল গ্রাহকদের মাসে ৫০ টাকা কর বাধ্যতামূলক করা হউক!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ ট্যাক্স তথা আয়কর দিতে আমাদের বেশীর ভাগ জনগণের বরাবরই চরম অনীহা। একটি দেশের আর্থসামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আয়করের অবদান কত গুরুত্বপূর্ণ তা নতুন করে বলার দরকার নাই। আমাদের দেশে এখন ৪০% লোক দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে। যাদের বেশীর ভাগেরই আয় দৈনিক ২ ডলারেরও কম। সরকারকে প্রতি বছর বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য বিশ্ব ব্যাংক, আই.এম.এফ, এডিবি, জাতিসংঘ, বিদেশী দাতা দেশ সমূহের দ্বারস্থ হতে হয়।

আমাদের দেশে একজন ব্যাক্তি আয়কর দেওয়ার উপযূক্ত হয় যখন সে বছরে ১,৬৫,০০০ টাকার অধিক আয় করে(পুরুষদের ক্ষেত্রে); For individuals (other than female taxpayers, senior taxpayers of 65 years and above and retarded taxpayers), tax payable for the First 1,65,000/- Nil: Next 2,75,000/- 10%: Next 3,25,000/- 15%: Next 3,75,000/- 20%: Rest Amount 25% (মহিলাদের ক্ষেত্রে); For female taxpayers, senior taxpayers of age 65 years and above, tax payable for the First 1,80,000/- Nil: Next 2,75,000/- 10%: Next 3,25,000/- 15%: Next 3,75,000/- 20%: Rest Amount 25% Click This Link উপরোক্ত আয়কর দেওয়ার নিয়মটি আমার কাছে যুক্তি যূক্ত মনে হয় না। আমাদের দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে কয়জন ব্যাক্তির পক্ষে এক লক্ষ পয়ষট্টি হাজার টাকা প্রতি বছরে আয় করা সম্ভব? তাই বলে কি বিশাল উপার্জনক্ষম জনগোষ্ঠী সামান্য পরিমাণ আয়কর দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে না? বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৫% তথা ৭ কোট ২০ লক্ষ লোক বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সাথে জড়িত; Click This Link [Economy ::Bangladesh] এর মধ্যে ধরি ৬ কোটি ৬০ লক্ষ লোকের আয় মাসে ৫ হাজার টাকা বা তার উপরে, সেক্ষেত্রে যদি ২% হারে এদের কাছ থেকে কর ধার্য করা হয় তো ৬৬০০০০০০ x ১০০(৫০০০ এর ২%) = ৬৬০ কোটি টাকা। তবে এটা কমই কারণ বাস্তবে সবার আয়ই ৫০০০ টাকা নয় বরং উপরে। যদি বাংলাদাশের মাথাপিছু বার্ষিক গড় আয় বর্তমানে ৭০০ মার্কিন ডলার ধরা হয় সেক্ষেত্রে সাড়ে ৬ কোটির অধিক লোকের আয় আনুমানিক ১৫০০ হতে ২১০০ মার্কিন ডলারের মধ্যে হবে। সেক্ষেত্রে এদের(৬ কোটি ৬০ লক্ষের) বার্ষিক ১৮০০ ডলার ধরলে মাসে ১৫০ মার্কিন ডলার অথবা ১১১০০ টাকা (১ ডলার = ৭৪ টাকা) হবে।

তারা যদি ২% হারে মাসে কর দেয় ৬৬০০০০০০ x ২০০ = ১৩২০ কোটি টাকা যা বছরে হবে ১৫৮৪০ কোটি টাকা। এটার যথাযথ প্রয়োগ এবং সঠিক ভাবে আদায় করা গেলে বছরে ২০ হাজার কোটি টাকার বা এর বেশী আয় হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আমাদের দেশে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবি, হিসাব রক্ষক যাদের অনেকের মাসিক আয় লক্ষ টাকারও অধিক তাদের যদি মাসে ন্যূনতম ২০০০ টাকা আয়কর দিতে কষ্ট হয় তাদেরকে বিবেকহীন না বলে উপায় কি? উন্নত দেশ গুলোতে মেথর-পিয়ন হতে রাষ্ট্র প্রধান সবাইকেই কম-বেশী কর দিতে হয়। তাই ৫ লক্ষের নীচে মাসে যাদের আয় তাদের জন্য ২% কর দেওয়া খুব আহামরি বা অসম্ভব বিষয় নয়। এদের অনেকেই ধুমপানের পিছনেই মাসে ৫ হতে ৬ হাজার টাকা ব্যায় করে।

অন্যান ফালতু খরচের কথা বাদই দিলাম। বিচিত্র হলেও সত্য এদেশে অনেক নিম্ন আয়ের লোকজন যারা মাসে ৫ হাজার টাকারও কম আয় করে তাদের অনেকেই বিড়ি-সিগারেটের পিছনে মাসে ৫০০-১০০০ টাকা ব্যায় করে। কিন্তু কেউই কর দিতে চায় না। সিহভাগই আমরা মনে করি কর না দিয়ে বেচে গেলাম এবং অনেক সময় নিজেকে বড় বাহাদুর মনে হয়। অথচ উল্লেখিত উপার্জনক্ষম সব ব্যাক্তিদের হতে মাসে ১৩-১৫শত কোটি টাকা কর আদায় হলে তা দেশের কয়লা-গ্যাস, বিদ্যুৎ, পরিবহন, রপ্তানীমুখী শিল্প ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগ করলে দেশে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব।

এছাড়াও মানুষ মৌলিক কিছু বিষয় যেমন স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা রাষ্ট্র হতে পেতে পারে। মোবাইল গ্রাহক হতে কর আদায়ঃ আজ থেকে ২০-২১ বছর আগে যেখানে বাংলাদেশে টেলিডেন্সিটি(ল্যান্ড লাইন) মাত্র ১% ছিল তা বর্তমানে মোবাইল ফোনের কল্যাণে তা প্রায় ৪৭% এ দাড়িয়েছে। অর্থাৎ দেশের ৭ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যাবহার করে; Click This Link দেখা যায় যে মাসে তারা গড়ে ১০০ টাকা হতে ৫০০ টাকা পর্যন্ত সেল ফোনের পিছনে ব্যায় করে। তাই এদের উপর যদি মাসে ৫০ টাকা কর ধার্য করা হয় ৭৫০০০০০০ x ৫০ = ৩৭৫০ কোটি টাকা তাই দেখা যাচ্ছে উপরোক্ত দুই ভাবে কর আদায় ব্যাবস্থা সঠিক ভাবে কার্যকর করা গেলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় ভাবে বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকার অধিক আয় করতে পারে। এভাবে করে অগ্রসর হওয়া গেলে আগামী ৫ বছরে দেশের কর্মসংস্থানে জড়িত মানুষের সংখ্যা দাড়াবে ৫০-৬০%।

তখন যদি গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবারাহে ঘাটতি বহুলাংশে কমে আসে এবং যোগাযোগ ব্যাবস্থা যথাযথ সচল থাকে তবে দেশে রীতিমত অর্থনৈতক বিপ্লব হবে। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮-৯% হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আমার তখন বিশ্বের মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব; Click This Link কিন্তু এই সবই সম্ভব সরকারের আগে আমাদের জনগণের মন মানসিকতার চরিত্র বদলানো। তাহলেই তা যেকোন সরকারকে ১০০% না হলেও বহুলাংশে র্দূনীতি কমিয়ে আনতে বাধ্য করবে। কর ফাকি দিয়ে শুধু দেশ নয় ভবিষ্যত প্রজন্মকে র্দূবিষহ অবস্থায় ফেলে দিবে।

এর সাথে অবশ্য জনসংখ্যাও কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ তথা পরিবার পরিকল্পনা মেনে চলতে হবে। তাই উপরে উল্লেখিত কর সহ সার্বিক ভাবে প্রচলিত অন্যান্য খাতের যথাযথ কর আদায় করা গেলে বিশ্ব ব্যাংক, আই.এম.এফ, এডিবি সহ সবাইকে গুড বাই জানানো যাবে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।