আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লীগগুলার তামশা দেখেন।

বোরহান উদ্দিন আহমেদ (মাসুম) নারায়ণগঞ্জে তুলকালাম, আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে হাতাহাতি, গালাগালি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। এমপিদের উপস্থিতিতে সরকারদলীয় দু’পক্ষের মধ্যে গালাগাল ও হাতাহাতি হয়। লাঞ্ছিত হন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। সভার শুরু থেকে সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও পরিবহন মালিকদের মারমুখো অবস্থানের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ছিলেন কার্যত অসহায়।

পরে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলেও কোন প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয়। বর্ধিত বাসভাড়া নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আগামীকাল সোমবার যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম আহূত হরতালের আগে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে দুই পক্ষের সমর্থকদের উত্তেজনার কারণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বাইরে উভয় গ্রুপের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। ঘটনার সূত্রপাত সূত্রমতে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটসহ নারায়ণগঞ্জের অভ্যন্তরের বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ শহরে আগামীকাল অর্ধবেলা হরতাল আহ্বান করে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম।

উদ্ভূত সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে গতকাল দুপুরে সভা আহ্বান করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক এম. সামছুর রহমান। সভায় উপস্থিত হন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি সারাহ বেগম কবরী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক এমপি শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ পৌর মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা বারের সভাপতি আনিসুর রহমান দিপু, পৌর কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কমান্ডার দুলাল সাহা, জেলা বাসদ নেতা এডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, পরিবহন নেতা ইব্রাহীম চেঙ্গিস, মোক্তার হোসেন, আলী আহাম্মদ, এহসানুল হাসান নিপু প্রমুখ। সভা চলার একপর্যায়ে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, এর জবাবদিহি শামীম ওসমানের কাছে কেন করা হবে? আবদুর রহমানের কথা সমর্থন করেন এমপি সারাহ বেগম কবরী ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। শামীম ওসমান এ সময় আনোয়ার হোসেনকে বিএনপি’র দালাল বলে আখ্যায়িত করলে শুরু হয় এমপি কবরী, আনোয়ার হোসেন ও শামীম ওসমানের মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডা।

এক পক্ষ অপর পক্ষকে গালাগাল করতে থাকলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শামীম ওসমানের পক্ষ নিয়ে জেলা বারের সভাপতি আনিছুর রহমান দিপু এমপি কবরীর সঙ্গে বাকযুদ্ধে লিপ্ত হন। শামীম ওসমানও তার আসন ছেড়ে উঠে এলে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় পরিবহন নেতা চেঙ্গিস গং এসে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে ঘিরে ফেলেন ও তাকে ধাক্কা দেন। ঘটনার এক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ পৌর মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী সভাকক্ষে প্রবেশ করেন।

এদিকে দুই পক্ষের মধ্যে সাংঘর্ষিক অবস্থার সৃষ্টি হলেও জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ছিলেন কার্যত অসহায়। পরে এমপি নজরুল ইসলাম বাবু উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। সভাটি আবার শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত বাস ভাড়া কমানোর বিষয়ে কার্যকর কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। গোটা সভাতেই উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করে। এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ভাড়া কমানোর জন্য বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে বাস মালিকরা তাদের সিদ্ধান্ত পরে জানাবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডার খবর পেয়ে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেন। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের বিবৃতি এদিকে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম নেতৃবৃন্দ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, পরিবহন মালিকদের পক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত থাকেন সাবেক এমপি একেএম শামীম ওসমান। সভায় যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের পক্ষ থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের বাস ভাড়া ২৪ টাকা, নারায়ণগঞ্জ-চিটাগাং রোডের ভাড়া ১৪ টাকার পক্ষে যুক্তি ও অবস্থান তুলে ধরা হয়।

কিন্তু মালিকপক্ষ কোনভাবেই ভাড়া কমাতে রাজি না হওয়ায় সভা থেকে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম ও বাস মালিকদের পক্ষের ৩ জন করে প্রতিনিধি নির্বাচন করে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা, একজন বর্তমান সংসদ সদস্য এবং একজন সাবেক সংসদ সদস্য সকলেই পরিবহন মালিক সিন্ডিকেটের পক্ষ অবলম্বন করেন। জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে সভা চলাকালীন একপর্যায়ে অশালীন বাক্যবিনিময় ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় সিন্ডিকেট মাফিয়াচক্র বেড়ে ওঠার কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের দাবি প্রতিষ্ঠায় ডাকা হরতালকে সামনে রেখে এটি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে সিন্ডিকেট চক্রের একটি মহড়া।

বাস ভাড়া কমানো ছাড়া এ আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটার কোন লক্ষণ নেই। যে কোন মূল্যে ২০শে জুনের হরতাল সফল করার জন্য নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বিকালে হরতালের পক্ষে আলী আহাম্মদ পৌর পাঠাগারের সামনে একটি সভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সুত্রঃ Click This Link  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।