আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভালোবেসে হত্যা!

সংসার আমার ভাল লাগে না ...সংসার হইলো বিষের কলশি ,আমি হইলাম দিওয়ানা... লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ তিনি। বিদ্রোহীদের দমন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে অস্ত্র হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন বিপক্ষ দলের নারীদের ধর্ষণের সিদ্ধান্ত! আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান আইনজীবী লুইস মোরেনো ওকাম্পো অভিযোগ করেছেন, লিবিয়ার নেতা ধর্ষণকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। লিবিয়ায় কর্মরত সাহায্যকর্মীদের মতে, ধর্ষণ বিশ্বব্যাপী একটি স্পর্শকাতর বিষয়। কিন্তু লিবিয়ায় এটা নিষিদ্ধ বিষয়ের চেয়েও বেশি কিছু।

সেখানকার যেসব নারী ও মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়ছেন, কথিত ‘অনার কিলিং’-এর নামে তাঁদের হত্যা করছে নিজ পরিবারেরই লোকজন। লিবিয়ায় কর্মরত জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার কর্মকর্তা আরাফাত জামাল জানিয়েছেন, লিবিয়ায় কোনো অঞ্চলে যখন ধর্ষণ সংঘটিত হয়, তখন সমগ্র গ্রামবাসী বা শহরকেই অসম্মানের চোখে দেখা হয়। লিবিয়ার দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, দেশটির রক্ষণশীল এলাকা বলে পরিচিত পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে বলে তাদের কাছে খবর আসছে। গাদ্দাফির সেনারা নারী ও মেয়েদেরকে তাঁদের পিতা ও ভাইদের সামনেই ধর্ষণ করছে। ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়ার পরই এই নারীদের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ।

লিবিয়ায় কর্মরত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য হানা এলগাদির বলেন, ‘এই মানুষদের কাছে তাঁদের স্ত্রী ও মেয়েদের নগ্নতা ও সতীত্ব হরণ মৃত্যুর চেয়েও খারাপ। ’ এলগাদির জানান, এটা এমন একটা অঞ্চল, যেখানে নারীরা বোরকা না পরে বাড়ির বাইরে যায় না। ‘কিছু সময়ের জন্য গর্ভধারণের বিষয়টি লুকিয়ে রাখা যায়। কিন্তু তা বেশি সময়ের জন্য নয়। সম্মান বাঁচাতে অনেক বাবাই তাঁদের মেয়েকে হত্যা করেন।

তাঁদের কাছে এটা ভালোবাসার হত্যা। তাঁরা বিশ্বাস করেন, এর মাধ্যমেই তাঁরা তাঁদের মেয়েকে রক্ষা করছেন। ’ হানা এলগাদির জানান, ধর্ষণের শিকার হয়ে যেসব নারী গর্ভবতী হয়ে পড়েন, তাঁরা তাঁদের গর্ভপাতের খরচ বহন করার প্রস্তাব দেন। তবে ধর্ষণের পর গর্ভপাত না করার জন্য ইতিমধ্যে লিবিয়ার বিভিন্ন রক্ষণশীল এলাকায় ফতোয়া জারি করা হয়েছে। ফলে ধর্ষণের শিকার নারীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।

এ সমস্যা সমাধানে ওয়ার্ল্ড ফর লিবিয়া নামের একটি সংগঠন তিউনিসিয়া সীমান্তে ইমামদের দিয়ে এই বলে প্রচার চালাচ্ছে যে ধর্ষণের ক্ষেত্রে নারীদের কোনো অপরাধ নেই। তবে এ পদক্ষেপও ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীদের জীবন রক্ষায় খুব একটা কাজে আসছে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, ধর্ষণকে উত্সাহিত করার জন্য গাদ্দাফি তাঁর সেনাদের যৌন উত্তেজক বড়ি (ভায়াগ্রা) সরবরাহ করেছেন। নাম প্রকাশ না করা গাদ্দাফির পক্ষ ত্যাগকারী এক মেজর জানিয়েছেন, লিবিয়ার নিয়মিত সেনাবাহিনীকে ধর্ষণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। বরং ভাড়াটে সৈনিকদের দিয়ে এটা করানো হচ্ছে।

তবে লিবিয়ায় কর্মরত জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেছেন, গাদ্দাফির অনুগত সেনা ও বিদ্রোহী উভয় পক্ষই ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত বলে তাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। বিবিসি অনলাইন অবলম্বনে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।