আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রুমানার ওপর নির্যাতন রুমানার হাসপাতাল পরিবর্তন, নির্যাতনের কথা স্বীকার স্বামীর

একটি পৃথিবী ৭০০ কোটি মানুষ, তবুও আমি একা পারিবারিক নির্যাতনের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা মনজুরের একটি চোখ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য চোখের অবস্থাও খারাপ। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভারতের পদুচেরির অরবিন্দ আই সেন্টারে নেওয়া হয়েছে। এর আগে তিনি চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে চিকিৎসা নেন। ৫ জুন ধানমন্ডির বাসায় স্বামী হাসান সাইদের নির্যাতনের শিকার হন রুমানা।

১৪ জুন উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়া হয় তাঁকে। নির্যাতনের ঘটনায় গত বুধবার হাসান সাইদকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রিমান্ডে নেয়। গতকাল শুক্রবার রিমান্ডে তিনি স্ত্রীকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। রুমানার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, চোখের চিকিৎসার জন্য শংকর নেত্রালয় কর্তৃপক্ষ চক্ষু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করে। বোর্ডের সদস্যরা রুমানার দুই চোখ পর্যবেক্ষণ শেষে আঘাতে বাঁ চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

তবে ডান চোখ সামান্য ভালো আছে বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। শংকর নেত্রালয়ের চিকিৎসকেরা রুমানাকে দুই মাস পর আবার সেখানে নিয়ে যেতে বলেছেন। এই সময়ে চোখের ক্ষতের কিছুটা উপশম হলে চিকিৎসার হয়তো সুযোগ সৃষ্টি হবে। গতকাল রুমানাকে বিকল্প উন্নত চিকিৎসার জন্য পদুচেরির অরবিন্দ আই সেন্টারে নেওয়া হয়। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, ভারতের চিকিৎসকেরা রুমানার জন্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের চিন্তা করছেন।

৬ জুন রুমানার বাবা মনজুর হোসেন ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। ডিবির উপকমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, হাসান সাইদ জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তিনি তাঁর স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন এবং হীনম্মন্যতায় ভুগছিলেন। শেয়ার ব্যবসায় লোকসান, পারিবারিক ব্যর্থতা, নিজের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা নিয়েও তাঁর মধ্যে হতাশা ছিল। অনিশ্চিত জীবনের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে তিনি স্ত্রীকে নির্যাতন করেন।

তদন্তকারী সূত্র জানায়, রিমান্ডে সাইদ দাবি করেন, তিনি চশমা ছাড়া চোখে দেখেন না। উভয়ের মধ্যে মারামারির সময় একপর্যায়ে তাঁর চশমা খুলে নিচে পড়ে যায়। হয়তো আঙুল তাঁর স্ত্রীর চোখে ঢুকে গেছে। এ সময় তাঁর স্ত্রীর নাককে আঙুল মনে করে কামড়িয়েছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হলেও চোখের সমস্যার কারণে তিনি তৃতীয় বর্ষের পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি।

সাইদ দাবি করেন, বুয়েটে পড়ার সময় রুমানা মনজুরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে ’৯২ সালে তাঁদের প্রেম হয়। এর সাত বছর পর তাঁদের বিয়ে হয়। শ্বশুরের ঘরে তিনি অনেকটা অগ্রহণযোগ্য ছিলেন। এ কারণে তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কানাডা যেতে কিংবা তাঁকে একা যেতে দিতে চাইতেন না।

সেখানে গেলে তাঁকে কাজের ছেলের মতোই থাকতে হতো। তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, অনেক প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি হাসান। রিমান্ডে তিনি যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, তার সত্যতা কতটুকু, তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। আজ দুই দিনের রিমান্ড শেষে আগামীকাল তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।