আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজব বন্ধুতা

সব শেষ হয়ে যাবার পরও, কিছু স্বপ্ন বেঁচে থাকে- সব সময় ইন্টার মিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। প্রতিদিন একা একা কলেজে যাওয়া আসা করি। পথে একটা ছেলেকে প্রায়ই লক্ষ্য করতাম। ও ও আমাকে আড় চোখে দেখতো। কারণ দুজনের পরনেই থাকতো এক কলেজের ড্রেস।

কে প্রথম আগে কথা বলেছিলো তা এ মূহুর্তে মনে করতে পরছি না। তবে দ্রুত সম্পর্কের উন্নয়ন হলো আমাদের। ওর নাম জানলাম আরিফ সারোয়ার। বাবা মারা গেছেন ১বছর হয়েছে। মা আর বোনকে নিয়ে থাকে আমাদের পাড়াতেই।

দুজন তখন থেকেই ছিলাম সিগারেটের পোকা তাই জমতো দুজনের বেশ। ওর কিছু বিষয় আমার কাছে দারুণ উপভোগ্য ছিলো, এখনো তাই- সেগুলো হলো ওর অগোছানো কথা বার্তা, বোকা টাইপ হাশি, চা-সিগারেটের বিল ওর পকেট থেকে দেয়া ইত্যাদি। এক সঙ্গে প্রাইভেট, কলেজ এবং এখানে সেখানে আড্ডা চলতো নিয়মিত। আমি একবার হিমুর মতো বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গেলাম! কয়েক দিন পর এসে শুনি আম্মা ওকে ধরে কান্নাকাটি করতো(আরিফ আর আমার চেহারা এবং শারীরিক গঠনে মিল আছে)। সত্যি বলতে কী ও যে আমার এতো কাছে কবে চলে এলো সেটা কখনো বুঝতে পারিনি।

ওর আর আমার বন্ধুত্বটা হচ্ছে তিলে তিলে জমানো সঞ্চয়। ২০০৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি হঠাত্‍ ওর মা মারা যায়। নানী চলে যাবার পর আরিফ প্রায় পাগলের মতো হয়ে যায়। এখনো ভালোবাসা দিবসে কেঁদে বুক ভাসায় আমার দোস্তটা। ও আমার অনেক সুখ দুঃখের নীরব এবং বিশ্বস্ত স্বাক্ষী।

আরিফ টিউশনি করে এবং ভাই বোনের কাছ থেকে যা পায় তার সিংহভাগ খরচ করে আমাকে নিয়ে। এ খরচের পেছনে ও অবশ্য যথেষ্ট চাতুর্যতার আশ্রয় নেয়। হঠাত্‍ একদিন বলবে- আজ বিজয় মামার দোকানে চা খাবো না, চল ভালো রেঁস্তোরায় যাই। চা খাওয়ার কথা বলে গিয়ে অর্ডার দেবে গ্রিলের! যে মানুষটি অন্য কাউকে ছোলা বুটের ভাগ দিতে চায় না সেই মানুষটাই আমার জন্য জীবন দিয়ে দিতে প্রস্তুত! এই লেখাটা পরে আরেক দিন শেষ করবো..... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।