আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের খনি ও খনিজ বিধি

খুব জানতে ইচ্ছে করে...তুমি কি সেই আগের মতনই আছো নাকি অনেকখানি বদলে গেছো... বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলন, খনি ও খনিজ সম্পদ নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন ১৯৯২ সনের ৩৯নং আইনের আওতায় বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা নতুন করে সংশোধন করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সংশোধন কমিটি খনি ও খনিজ বিধির বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা শুরু করেছে। খনি ও খনিজ সম্পদ বিধি ১৯৬৮ (সংশোধিত ২০০৪) অনুযায়ী কোন কোম্পানির অনুসন্ধান ও খনি স্থাপনের ৰেত্রে আবেদনের কোন সংখ্যা নির্ধারিত নাই। তবে একটি আবেদনের ৰেত্রে ২৯ (১) ধারানুযায়ী সর্বোচ্চ ৪০০০ (চার হাজার) হেক্টর এবং মাইনিং বা খনি স্থাপনের ৰেত্রে ধারা ৪১ অনুযায়ী ৮০০ হেক্টর নির্ধারিত রয়েছে। সংশোধিত হতে যাওয়া বিধিটিতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ৰেত্রে খনিজ অনুসন্ধানের আবেদনের সংখ্যা নির্দিষ্ট করার কথা বলা হচ্ছে।

কারও মতে, খনিজ সম্পদ অনসুন্ধানের ৰেত্রে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচটি আবেদন নির্দিষ্টকরণের কথা বলা হচ্ছে। প্রচলিত বিধি অনুযায়ী যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দেশের যে কোন এলাকায় খনিজ অনুসন্ধানের জন্য আবেদন করতে পারবে। সে ৰেত্রে একই এলাকায় একাধিক আবেদনপত্র জমা পড়লে প্রথমে যিনি আবেদন করবেন তার আবেদনপত্রটি বিবেচনায় নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আবেদনকারীর যোগ্যতা ও কারিগরি দিক বিবেচনা করার জন্য বর্তমানে বাধষঁধঃরড়হ বা সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটি নেই। যার ফলে প্রচলিত বিধির কারণে অনেক অনভিজ্ঞ ও অযোগ্যও ব্যক্তি বা কোম্পানিরও লাইসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

প্রচলিত বিধির এ ধারাটি সংশোধিত হওয়ার প্রয়োজন। সংশোধিত বিধিতে এমন ধারা যোগ করা যায় কিনা তা ভেবে দেখা যেতে পারে। ১. ইচ্ছে করলেই যে কেউ ট্রেজারির মাধ্যমে অনুসন্ধান ফি জমা দিয়ে আবেদন করার যে বিধান চালু আছে তা রোহিত করতে হবে। বরং খনিজ অনুসন্ধানের আবেদনপত্রের জন্য বছরের নির্দিষ্ট সময়ে বিডিংয়ের আয়োজন করা যেতে পারে। ২. কোম্পানি সিলেকশনের জন্য দৰ ও কারিগরি বা বাধষঁধঃরড়হ কমিটি গঠন করে যোগ্য কোম্পানি যাচাই-বাছাই করতে হবে।

এ সেক্টরের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের লব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে খনিজ সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলতে হবে। ৩. খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নে দেশীয় কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য উৎসাহ প্রণোদনা প্যাকেজ গঠন করা যেতে পারে। যাতে এ সেক্টরে দেশীয় কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দেশীয় কোম্পানি পিট কয়লা, কয়লা ও খনিজ বালি উন্নয়নে নিজেদের সম্পৃক্ত করছে। ৪. বিদেশী বিনিয়োগকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করার জন্য প্রচলিত কর অবকাশের সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হবে।

৫. মিনারেল সেক্টরের উন্নয়নের জন্য দেশী-বিদেশী পার্টনারশিপ ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেলে দেশীয় স্বার্থ রৰার নিশ্চয়তা প্রদান করা সম্ভব। সার্বিকভাবে এ সেক্টরের উন্নয়নের জন্য সরকারকে যুগোপযোগী খনি ও খনিজ বিধি প্রণয়ন করতে হবে। সরকারী পর্যায়ে, বড়পুকুরিয়া কয়লার খনি ছাড়া অন্য কোন কয়লা খনির উন্নয়ন হয়নি এমন কি বেসরকারী পর্যায়েও কয়লা নীতির অভাবে কয়লা জনকল্যাণে কোন ভূমিকাই রাখতে পারছে না। তাই সুষম খনি ও খনিজ বিধি প্রণয়ন ও কয়লা নীতি চূড়ান্তকরণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে ভবিষ্যত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। তবে বিধি প্রণয়নে পরিবেশগত বিষয়টির সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ প্রয়োজন।

হাসান কামরুল, ভূতত্ত্ববিদ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।