আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জোট সরকারের আমলে দাপিয়ে বেড়ানো হারিছ চৌধুরী এখন কোথায়?

বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে দাপিয়ে বেড়ানো হারিছ চৌধুরীর এখন কোন খবর নেই। দলীয় নেতাকর্মী দূরে থাক তার আÍীয়-স্বজনরাও বলতে নারাজ কোথায় আছেন হারিছ চৌধুরী। হারিছ চৌধুরীর আপন ভাই সেলিম চৌধুরী আল্লাহর নামে কসম কেটে বলেন, হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে তার কোন যোগাযোগ নেই। তিনি কোথায় আছেন জানি না। ভাইয়ের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তার জন্য আমি মামলা খেয়েছি।

অনেক যন্ত্রণা ভোগ করেছি। এজন্য যোগাযোগ রাখি না। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ইলিয়াছ আলী জানালেন, সেই ওয়ান-ইমলভেনের সময় ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে তার সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছিল। এরপর আর কোন যোগাযোগ হয়নি। হারিছ চৌধুরীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত তার চাচাতভাই সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আশিকুর রহমান চৌধুরীও বললেন একই ধরনের কথা।

তিনি বলেন, ভাই আমি কিছু জানি না। শুনেছি তিনি লন্ডনে থাকেন। কানইঘাট থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান চৌধুরী দাবি করেন, ওয়ান-ইলেভেনে হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পরে তিনি বিদেশে চলে যান। আর ফেরত আসেননি। তার সঙ্গে কোন কথাও হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

সিলেটের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, নিজে বাঁচার জন্য আপন ভাই সেলিম চৌধুরীর নামে ব্যাংকে ছয়-সাত কোটি টাকা রেখেছিলেন হারিছ চৌধুরী, সেই আপন ভাই এখন আছেন বিপদে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হারিছের নাম জড়িয়ে পড়ার খবরে সেলিম চৌধুরীর মাঝে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাংকে টাকা রাখা ছাড়াও শেয়ার ব্যবসাও করেছেন হারিছ চৌধুরী তার ভাইয়ের নামে। এ কারণে নিজের কোন ঝামেলা না থাকলেও ভাইয়ের কারণে তিনি বিপদে আছেন। ওয়ান-ইলেভেনের পরে এই ঘটনায় মামলা হওয়ায় সেলিম চৌধুরী ঘনিষ্ঠজনদের কাছে কেঁদে বলেছেন, ভাইকে তিনি তার অ্যাকাউন্টে টাকা রাখতে নিষেধ করেছিলেন।

ভাই শোনেননি। জানা গেছে, হারিছ চৌধুরীর স্ত্রী জোসনা আরা চৌধুরী ১৯৯৮ সাল থেকেই লন্ডনে বসবাস করেন। ছেলে নাইম সফি চৌধুরী জনি বার-অ্যাট-ল করতে লন্ডনে গিয়ে আর ফেরেননি। মেয়ে সামিরা তানজিম লন্ডনে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে এখন অস্ট্রেলিয়ায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করছেন। হারিছ চৌধুরীর স্থাবর সম্পত্তির বেশিরভাগই তার ছেলে-মেয়ের নামে।

অবৈধ সম্পদ অর্জনে দুদকের একটি মামলায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে হারিছ চৌধুরীর। এছাড়া মানি লন্ডারিং, গাড়ির তেল খরচের একটি মামলা, আলোচিত সরকারি ১৮টি বাড়ির একটি বাড়ি অন্যের নামে কেনার ঘটনায় একটি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে একটি মামলা ছাড়াও বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রভাবশালী রাজনৈতিক সচিব হিসেবে প্রায় সাড়ে তিন বছর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও হাওয়া ভবন দাপিয়ে বেড়িয়েছেন হারিছ চৌধুরী। সরকারি ফাইলের একটিও তার হুকুম ছাড়া নড়েনি। ফাইল আটকে রেখে কোটি কোটি টাকা আয় করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এসব ঘটনা জানাজানি হওয়ায় সরকারের শেষ দেড় বছরে তার কাছে কোন ফাইল যায়নি। বলতে গেলে ওই দেড় বছর নামমাত্র রাজনৈতিক সচিব হিসেবে ‘ঠুঁটোজগন্নাথ’ ছিলেন তিনি। বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার প্রথম ‘গ্লোরি’ নষ্ট করেন হারিছ চৌধুরী। ফলে শেষ পর্যন্ত হাওয়া ভবনও তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। জোট সরকারের মেয়াদ শেষের পরে তিনি দলে ভেড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান কেউ আর তাকে গ্রহণ না করায় নিজ দলেই এক পর্যায়ে অপাঙতেয় হয়ে পড়েন হারিছ চৌধুরী। ওয়ান-ইলেভেনের পর সিলেট সীমান্ত দিয়ে প্রথমে তিনি ভারতের আসামে তার মামার বাড়ি যান বলে শোনা গেলেও এখন তিনি কোথায় আছেন তা কেউ জানে না। ওয়ান-ইলেভেনের পরে পালিয়ে যাওয়া; এমনকি সাজাপ্রাপ্ত সব নেতা দেশে ফিরে এলেও হারিছ চৌধুরী ফেরেননি। কারণ তার জায়গা বিএনপিতে নেই। এক সময়ের যুগ্ম-মহাসচিব হারিছ চৌধুরীর কোন কমিটিতেই নাম নেই।

যঃঃঢ়://লঁমধহঃড়ৎ.ঁং/বহবংি/রংংঁব/২০১১/০৫/২৪/হবংি০৩৯২.যঃস ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।