আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুভ জন্মদিন প্রিয় লেখক

শিশুতোষ যে কোন রচনা।   শার্লক হোমসের অমর স্রষ্টা আর্থার কোনান ডয়েল (জন্ম ২২ মে, ১৮৫৯ ; মৃত্যু ৭ জুলাই ১৯৩০) বর্তমানে রহস্য উপন্যাস, গল্প যে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করছে তার একক কৃতিত্বের দাবিদার ডয়েল। স্কটল্যান্ডের অধিবাসী চিকিৎসক স্যার আর্থার কোনান ডয়েল ও তার কল্পলোকের সৃষ্টি শার্লক হোমসের নাম আজও একসঙ্গে উচ্চারিত। ডাক্তার হিসেবে রোগীর জন্য অপেক্ষমাণ অবস্থায় ডাক্তার ডয়েল সময়ক্ষেপণের জন্য কাগজ-কলম নিয়ে তার কাল্পনিক চরিত্র শার্লক হোমসের সৃষ্টি করেছিলেন, তা হলে হয়তো অনেকে অবাক হবেন। শার্লক হোমসের মতো বুদ্ধিদীপ্ত গোয়েন্দার জš§রহস্য গল্পের মতোই রহস্যময়।

১৮৮২ সালে ডাক্তারের চেম্বারে জš§ হলো শার্লক হোমসের। শার্লক হোমস গোয়েন্দা হিসেবে অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত। দৌড়ঝাঁপ না দিয়ে শুধু বুদ্ধি খাটিয়ে, পাইপে তামাকের ধোঁয়া উড়িয়ে তিনি রহস্যের জট খোলেন। ড্রয়িং রুম গোয়েন্দার প্রতিভূ তিনি। রহস্য কাহিনী কিংবা গোয়েন্দা কাহিনী যাই বলি না কেন, এই জনপ্রিয় ধারার জনক হিসেবে স্যার আর্থার কোনান ডয়েলকে বিবেচনা করা হয়।

শার্লক হোমস ও তার সহকারী ড. ওয়াটসন জুটিকে বলা হয় বিশ্বের সেরা গোয়েন্দা জুটি। এদের একজন যেন অন্যজনের পরিপূরক। অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ এই জুটি ছাপার হরফের সীমা অতিক্রম করে রূপালি পর্দায়ও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ডয়েল সাহিত্য জগতে গোয়েন্দা কাহিনীনির্ভর উপন্যাসের রূপকার। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পূর্বাপর ঘটনার বিস্ময়কর বর্ণনা আর বাস্তবে হুবহু মিলে যাওয়া ব্যাপারগুলো পাঠক মাত্রকেই শিহরণ জায়গায়।

ডয়েলের জš§ ব্রিটেনের এডিনবরাতে, এক আইরিশ পরিবারে। বাবা-মা ক্যাথলিক ধর্মানুরাগী। এডিনবরাতেই মেডিকেলে পড়াশোনা করে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত হন। পরে লন্ডনে এসে হন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। এরপর এক জাহাজে চিকিৎসকের কাজ নিয়ে ঘুরে বেড়ান পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল।

ভারতবর্ষেও এসেছিলেন চিকিৎসক হয়ে। রোগীদের প্রাথমিক অবস্থা জেনে বলে দিতেন তাদের আয়-রোজগার, অবস্থান, সংস্কৃতি ইত্যাদি। অভিভূত হতেন রোগীরা। পূর্বসুরি লেখক এডগার এ্যালান পো, উইলকি কলিনস ও গোবেরিওর লেখা গোয়েন্দা কাহিনীগুলো পড়ে নেন ভালোভাবে। অর্থ উপার্জনের জন্যই লেখালেখি শুরু করেন ডয়েল।

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা আর পূর্বসুরিদের লেখা অধ্যয়ন সব মিলে লেখা শুরু করেন তিনি। ১৮৮৭ সালে তার প্রথম লেখা ‘এ স্টাডি ইন স্কারলেট’ প্রকাশিত হয়। বিশ্বজুড়ে পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে বইটি। বুয়র যুদ্ধের সময় আর্মিদের স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করেন। আর এ অভিজ্ঞতা দিয়ে লেখেন ‘দি গ্রেট বুয়র’ ও ‘দি ওয়ার ইন সাউথ আফ্রিকা’।

গ্রন্থ দুটিতে ব্রিটিশ সরকারের সমর্থন থাকায় পান ‘নাইট’ উপাধি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসও লেখেন ডয়েল। ‘ব্রিটিশ ক্যামপেন ইন ক্যান্ডার্স’ প্রকাশিত হয় ছয় খণ্ডে। এ যুদ্ধে তার প্রথম সন্তান মারা যায়। সন্তানের মৃত্যুর পর পরকালীন জীবনের দিকে ঝুঁকে পড়েন ডয়েল।

রচনা করেন ‘দি ওয়ান্ডার অব এস্পিরিচ্যুয়ালিস্ট’ ও ‘দি হিস্টোরি অব স্পিরিচ্যুয়ালিজম’ (২য় খণ্ড)। তার রচিত মোট বই প্রায় ৭০, সংকলন গ্রন্থ ৫। চীন ও মিসরে গোয়েন্দা পুলিশ ট্রেনিংয়ে পড়ান হয় স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের বই। ফ্রান্সের লায়ন্সে অবস্থিত বিখ্যাত অপরাধ গবেষণাগারের নাম দেওয়া হয়েছে তারই নামে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, রাষ্ট্রেরপ্রধান থেকে সাধারণ জনতা সবাই ছিল তার পাঠক।

এর প্রমাণ পাওয়া যায় তার মৃত্যুর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের বক্তব্য থেকেই। তিনি বলেন, “তার (স্যার আর্থার কোনান ডয়েল) প্রতি আমার প্রশংসার অন্ত নেই। নিশ্চয়ই তার প্রতিটি লেখা আমি পড়েছি এবং মুগ্ধও হয়েছি। ” ১৯৩০ সালের ৭ জুলাই আর্থার কোনান ডয়েল মৃত্যুবরণ করেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।