আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাশ্চাত্য সভ্যতা : নারী স্বাধীনতা : ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গী

গর্জে ওঠার এইতো সময়.... তিতাস বাচাও, দেশ বাচাও

বর্তমানে পাশ্চাত্য সভ্যতা নারী ও পুরুষের মধ্যে মানবীয় সম্পর্কের শেষ বন্ধনটুকু নিঃশেষ করে দিয়ে মানুষকে নিতান্তই পাশবিক স্তরে উপনীত করার লক্ষ্যে নারী সম্পর্কে নানা ধরণের নীতিমালা দেশে দেশে তাদের বশংবদদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। কারণ পাশ্চাত্য সভ্যতায় পাশবিক উত্তেজনা ও যৌন লালসার পরিতৃপ্তিই হচ্ছে সাধারণ নারী-পুরুষের সম্পর্কের একমাত্র ভিত্তি। আর ঠিক এ কারণেই পশ্চিমা দেশসমূহে নারী একজন পুরুষকে স্বামী হিসেবে বরণ করে প্রেম ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত যেমন একত্রে বসবাস করা কল্পনাও করে না, তেমনি একজন পুরুষও একজন নারীকে স্ত্রী হিসেবে সুখ-দুঃখ তথা সমব্যাথার সঙ্গিনী বানিয়ে জীবন অতিবাহিত করার কথা চিন্তাও করে না। ফলে পশ্চিমা দেশসমূহে পারিবারিক প্রথা ও বিয়ে প্রথা বিলুপ্ত প্রায়। বিয়ের বন্ধনে যারা আবদ্ধ হয়, স্বল্প দিনের মধ্যেই দাম্পত্য জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে তালাক তথা বিচ্ছেদের মাধ্যমে।

ফলে পাশ্চাত্য দেশসমূহে জারজ সন্তানের জন্মহার বর্তমানে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। কারণ নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে ওঠে যে প্রেম-ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে, এর পরিবর্তে তারা নারী-পুরুষের সম্পর্কের ভিত্তি রচিত করেছে যৌন-লালসা তথা পাশবিকতার ওপরে। এ কারণেই তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে লিভ টুগেদার তথা বিয়ে ব্যতীতই নারী-পুরুষের একত্রে বসবাস এবং যে কোনো মুহূর্তেই তারা প্রয়োজনে যৌনসঙ্গী পরিবর্তন করতে পারে। ইসলাম নারীকে পরাধীনতার অন্ধকার গহ্বর থেকে বের করে দাসত্বের নাগপাশ থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করিয়েছে। কন্যা হিসেবে, বধু হিসেবে এবং মা হিসেবে নারীকে সম্মান-মর্যাদার উচ্চ সোপানে আসীন করেছে।

নারী জীবনের উক্ত তিনটি স্তরের কোনো একটি স্তরেও নারীকে পরাধীন করা হয়নি, করা হয়নি কারো দয়া-দাক্ষিণ্যের মুখাপেক্ষী। প্রত্যেক স্তরেই নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দেয়ার জন্য পুরুষদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কন্যা সন্তানের জন্মের বিষয়টিকে সুসংবাদ, সুখবার, ফিরিশতাদের দোয়া, কন্যা সন্তান সৌভাগ্যের প্রতীক ইত্যাদি কথা বলে নারীকে পুরুষদের কাছে মূলত সম্মান-মর্যাদার প্রতীক হিসেবেই উপস্থাপন করা হয়েছে। পাশ্চাত্য সভ্যতার পূজারীদের সুরে সুর মিলিয়ে যারা নারী স্বাধীনতার জিগির তুলে ইসলামের বিরোধীতা করছেন তাদের জানা উচিত, নারী স্বাধীনতার উদ্দেশ্য প্রণোদিত আওয়াজ সেই সমাজ থেকেই সর্বপ্রথম উঠেছে, যে সমাজে নারীকে পরিণত করা হয়েছে পুরুষের দাসী, ভোগের সামগ্রী, চিত্তবিনোদন ও যৌন কামনা পূরণের উপকরণ হিসেবে। শয়তানের সহচরী হিসেবে আখ্যায়িত করে নারীর আত্না বলে কিছুই নেই- এ রায় নারী সম্পর্কে তারাই দিয়েছিল।

নারীর মৌলিক অধিকার হরণ করে তাকে খেল তামাসার সামগ্রীতে তারাই পরিণত করেছিলো। নারীকে সম্মানজনক স্বাধীনতা ইসলাম দিয়েছে, তার সকল প্রকার অধিকার ইসলামই সংরক্ষন করে তাকে তার ইজ্জত-আব্রুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পুরুষকে বাধ্য করেছে। নারী যৌন উপকরণের সামগ্রী নয় বরং নারীই আদর্শ ও সুনাগরিক গড়ার কারিগর- এ কথা সর্বপ্রথম ইসলামই ঘোষণা করে তাকে স্বামী তথা পুরুষের কর্মে সহযোগীতা, তাকে উৎসাহ-উদ্দীপনা, সাহস দান, পরামর্শ দেয়া এবং সন্তানকে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ার দায়িত্ব ও অধিকার দিয়েছে। হযরত আবু বকর (রা) এর বড় মেয়ে (হযরত আয়িশা রাঃ এর বড় বোন) হযরত আসমা (রা) তার স্বামীকে অর্থোপার্জনে সার্বিক সহযোগীতা দিয়েছেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) এর স্ত্রী নিজে উপার্জন করতেন, তার উপার্জিত অর্থ তিনি ইয়াতিমদের জন্য ব্যয় করতেন এবং স্বামীকেও দিতেন।

পাচ ওয়াক্ত নামাজসহ জুমুয়া ও ঈদের নামাজে তার অংশগ্রহণ করেছেন। নিজেদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য তার কোনো মাধ্যম ব্যতীতই নবী করীম (সঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। সমাজে সুকৃতির প্রসার ঘটানো ও দুষ্কৃতির প্রতিরোধে এবং শিক্ষার প্রসারে তারা পুরুষদের পাশাপাশি ভূমিকা পালন করেছেন। আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তারা প্রতিপক্ষের দ্বারা চরমভাবে নির্যাতিতা হয়েছেন। আদর্শ প্রতিষ্ঠা, রক্ষা, দেশ ও জাতিকে রক্ষার প্রয়োজনে যদ্ধের ময়দানে তারা নিজের জানবাজি রেখে এমন দুঃসাহসী ভূমিকা পালন করেছেন যে, ক্ষেত্র বিশেষে পুরুষের ভূমিকাকে তারা ম্লান করে দিয়েছেন।

সুতরাং এ কথা যারা বলে- ইসলাম নারীকে চার দেয়ালে আবদ্ধ করে বন্দিনী করেছে, হয় তারা ইসলামে নারী অধিকার ও স্বাধীনতা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না, অজ্ঞ মূর্খ অথবা তারা জেনে বুঝেই পশ্চিমা প্রভুদের উচ্ছিষ্ট কুড়ানোর লোভে ইসলাম সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.