আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দাহ ও আগুনে

/

বাইরে বেশ ডাকাবুকো গরম । মাঝে মাঝে তার ধারালো ফলাটা এমন ভাবে ধরে যে ভয়ে সাত তাড়াতাড়ি যা আছে নিজের কাছে প্রায় সবটাই দিয়ে দেই । কেউ যেন দেখে না ফেলে তাই আড়াল হয়ে হা পিত্যেস করতে থাকি যেন এক্ষুণি ছুটে আসে হিরোইক বাতাস । গরমের কি মা বোন নেই ? বলতে বলতে ছুটে আসে আমার সুপার হিরো । আমি একটু লজ্জা পেয়ে সামান্য দূরে পড়ে থাকা কাপড়টি জড়িয়ে ধরি ।

কিছুক্ষণ আগে ফিরলাম অফিসবাটি থেকে । বাড়িটি খুব চমতকার, ঠান্ডা রাখে শরীর আর গরম করে মাথা । বাটিটি থেকে বেরোলে রক্তচক্ষু গরম আমাকে খুন করতে আসে । আমি লাল হয়ে যাই । পড়িমড়ি করে খুঁজতে থাকি ছায়া ঘরের আশ্রয় ।

শপিং মলের ছায়ায় ছায়ায় হেঁটে অনেক রিক্সাচালক কে বিণীত নিবেদন করে তার ছোট্ট হুডের ছায়ায় গুটিসুটি মেরে বসে থাকি । এক হাতে রিক্সা আর এক হাতে ব্যাগ ধরে আগাতে আগাতে যখন ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে যাই তখন তৃতীয় একটি হাতের খুব প্রয়োজন পড়ে । ডাস্টবিনের পাশে কোন কুকুর দেখলাম না । ভাগাড় খেকো কাকও পেলাম না একটাও । তোমাদের সময় নাকি অনেক শকুন ছিল ।

মরা পঁচা খেতে শাঁ করে ছুটে আসতো ওরা । আমি শকুন দেখিনি । ভাবলাম, সে নাহয় আদ্যিকালের কথা । কিন্তু আমি তো আস্তাকুড়ে কুকুর কে নোংরা ঘাটতে দেখেছি, কাকের কর্কশ আওয়াজে ঘুমও ভাঙতো । কাকেরা একবার এখানে, আরেকবার ওখানে উড়ে বসতো ।

রাস্তার পাশে দু টো ডাস্টবিন পার হলাম । কোথাও কাক বা কুকুর নেই । সব কুকুররা কি মানুষ হয়ে গেল ? আমার সারাক্ষণ গরম লাগে । মশারি থেকে বেরিয়ে মেঝেতে শুই । মেঝে শক্ত বলে আবার উঠি ।

ফ্রেস রুমে গিয়ে হাতে মুখে পানির ঝাপটা দেই । পানি খাই । অন্ধকারে হাটি । কখনও একটা দুটো রিলাক্সিন । শান্তি হয় না ।

অস্থির লাগে । গরম সুঁইয়ের মত ফুঁড়তে থাকে । সুঁই ? অনেক দিন পর সুঁচ রাজকুমারের কথা মনে পড়লো । সুঁচ রাজকুমারের শরীর ভরা সুঁই, অনেক দিন তার ঘুম ভাঙে না । সেথায় আসলো এক দুঃখী রাজকুমারী ।

পাতা ছেঁচে রস ঢালে সে চোখের পাতায় । রাজকুমারের ঘুম ভেঙে যায় । আমার চোখেও সুঁই বিঁধেছে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।