আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পতিতার প্রেম (অনুবাদ গল্প)

মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়| বেঁচে থাকলে বদলায়| কারণে অকারণে বদলায়........ মূল গল্পঃ জেমস স্যান্ডার্স বিষয়বস্তু বড়দের| ছোটদের পড়া বারণ| *** *** *** প্রতিটি দ্বিপাক্ষীক খেলার সাধারণ ফলাফল হল-একপক্ষের জয় এবং অপরপক্ষের পরাজয়| একজন বারবনিতার কাছ থেকে যখন একজন পুরুষ ফেরত আসে, তখন উভয়েই খুশীমনে থাকে|একজন অর্থ পেয়ে খুশী,একজন সুখ পেয়ে| এই খেলায় কোন পরাজয় নেই| সবাই এখানে জয়ী| সম্ভবত এ কারণেই রয় বেনসন বারবনিতাদের পছন্দ করে না| তবে এই মুহূর্তে সে একটা পতিতালয়েই যাচ্ছে| ছিমছাম লন্ডন শহরের পশ্চিমে অবস্থিত এই পতিতালয়টি সবচেয়ে অভিজাত| এখানকার মেয়েদের গুনগান শহরের প্রতিটি ধনী পুরুষের মুখে মুখে ঘুরে ফেরে| রয় বেনসন বাস থেকে নেমে পতিতালয়ের সামনের গলিটিতে প্রবেশ করলো| বেনসনের পরনে ধূসর রঙের স্যুট| কালো টাই| অফিসে যাওয়ার জন্য আদর্শ পোষাক,তবে পতিতালয়ে যাবার জন্য অনেকটাই বেমানান| বেনসনের সম্ভ্রান্ত,শান্ত-গোবেচারা চেহারায় কিছুটা অসহায়ত্ব ফুঁটে রয়েছে| বেনসন আগে কখনোই এ দিকে পা বাডায়নি| বেনসন হাতঘডিতে সময় দেখলো| রাত আডাইটা| শহরের নাইটগার্ডগুলোও হয়ত এতক্ষণে ঢুলুনি বাদ দিয়ে পুরোপুরি ঘুমিয়ে পডেছে| পতিতালয়ের প্রবেশপথে দু'জন শক্তিশালী গডনের গার্ড| বেনসনকে এগোতে দেখে একজন বলল, -কি ভাইয়া, মদ টদ খেয়ে মাতাল হয়ে এসেছ নাকি? রয় শান্ত-ভরাট গলায় বলল, -আমাকে দেখে তোমার মাতাল মনে হচ্ছে? -মমমম,না মনে হচ্ছে না| তবুও নিশ্চিত হয়ে নিলাম| তা,তোমার কাছে টাকা আছে তো? কৌতুক বোধ করল বেনসন| -হ্যা,আছে|যথেষ্টই আছে| -ঠিক আছে,তাহলে তুমি যেতে পারো| পথ ছেডে দিল সে বেনসনকে| বেনসন ভিতরে ঢুকলো| ভিতরে অনেকগুলো মেয়ে চেয়ারে বসা| পরণে তেমন কিছু নেই বললেই চলে| তাদের থেকে একটু দূরে সামনে কয়েকজন পুরুষ দাডিয়ে দাডিয়ে সঙ্গী নির্বাচন করতে ব্যস্ত| বেশিরভাগ পুরুষই ওভারকোট পরে আছে| একজন আবার হুডও পডেছে| চেহারা গোপন রাখাটা তাদের কাছে জরুরী| যদিও পতিতালয়ের স্বল্প আলো চেহারা চিনে রাখার জন্য যথেষ্ঠ নয়| কারণ চেহারার কোন মূল্য নেই এখানে| শরীরটাই আসল| বেনসনের পোষাক ও চেহারা দেখে সবাই একটু অস্বস্তি বোধ করলো| মেয়েগুলোর নজরও ওর উপর স্থির হলো| আসরের মধ্যমনি হয়ে উঠেছে বুঝতে পেরে একটু অস্বস্তি বোধ করলো বেনসন| এমন সময় এক চল্লিশোর্ধ মহিলা বেনসনকে দেখে ছুটে এলো| এ বয়সেও মহিলার শরীরের বাঁধন মজবুত| দেখতেও যথেষ্ঠ সুন্দরী| সে বেনসনকে স্বাগত জানানোর পর বললো, -নতুন মনে হচ্ছে আপনাকে স্যার| বাই দা ওয়ে, আমি মাদাম সোফিয়া| -আমি রয় বেনসন| মাদাম সোফিয়ার সাথে করমর্দন করলো বেনসন| মাদাম সোফিয়া বললো, -আমিই গত এগারো বছর ধরে ব্যবসাটা চালাচ্ছি| তো মি. বেনসন,আপনি কোন ধরণের মেয়ে চান আজ রাতের জন্য? -আমি......আসলে..... -বুঝেছি| আপনি সামান্থাকে দেখুনতো কেমন লাগে! সামান্থা নতুনদের সাথে খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে| তাছাডা ও অক্লান্তভাবে অনেকক্ষণ ধরে করে যেতে পারে| কি বলেন মি.বেনসন? -না....মানে ইয়ে..... -চলবে না ওকে দিয়ে? ঠিক আছে|আপনি ক্রিস্টিনাকে দেখুনতো, ক্রিস্টিনা বিছানায় খুবই স্ব-উদ্যোগী| আমি শিওর,আপনি বিষয়টা উপভোগ করবেন| -আমি আসলে অন্য... -অন্য মেয়ে চাইছেন? হ্যা,আছে তো| লিজাকে কেমন লাগে আপনার? লিজা এখানকার সবচেয়ে আবেদনময়ী মেয়ে| ও আবার পুরো সময় ধরেই জোরে শীতকার দিতে পছন্দ করে| কিন্তু আপনার উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই, আমাদের কামরাগুলো সব সাউন্ডপ্রুফ| -মাদাম সোফিয়া, আমি আপনার কাছে মেয়ের জন্য আসিনি| আমি সার্জেন্ট রয় বেনসন| স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড থেকে পাঠানো হয়েছে আমাকে| আপনাদের এখানে আজ ভোরে যে একজোডা খুন হয়েছে তার তদন্ত করতে| মাদাম সোফিয়া আঁতকে উঠলেন| -সার্জেন্ট,আপনি কি আমার খদ্দেরদের ভয় পাইয়ে ভাগিয়ে দিতে চান?এদিকে আসুন| সে বেনসনকে টেনে নিয়ে গেল| করিডরের কোনায় গিয়ে বেনসনকে নিচুস্বরে সে বললো, -দেখুন সার্জেন্ট,বিষয়টা খুবই বিব্রতকর এবং আমার ব্যবসার জন্য নেতিবাচক| তাছাডা এটা আসলে খুনও না| আত্মহত্যা| আপনি দয়া করে আজ রাতের মধ্যেই রিপোর্ট লিখে বিষয়টার সুরাহা করে দিয়ে যান| -নিশ্চয়ই মাদাম| স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডও একটা পতিতার খুন...কিংবা আত্মহত্যা যাই হোক,এটা নিয়ে বেশী সময় নষ্ট করতে রাজি নয়| আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন| আমি যত দ্রুত সম্ভব আপনাকে ঝামেলামুক্ত করবো| -ধন্যবাদ সার্জেন্ট| আপনি নিশ্চয়ই লাশ দু'টো দেখতে চান? -চাই|তবে আগে আপনার কাছে থেকে ঘটনার বিবরণ পেলে খুশী হবো| -ওহ,ঘটনা খুবই পরিস্কার সার্জেন্ট| যে মেয়েটি মারা গেছে তার নাম হলো জেন| সে গত তিন বছর ধরে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে| এই জেনের একজন নিয়মিত খদ্দের ছিলো ফার্নান্দেজ| সে প্রতি সপ্তাহে দু'বার আসতো| ফার্নান্দেজ আর জেন একে অপরের প্রেমে পডে গিয়েছিলো| বোকার হদ্দ মেয়েটা! জানত না এই পেশায় প্রেমে পডাটা বোকামী ছাডা কিছুই নয়| তারপর যা হবার তাই হলো| ফার্নান্দেজ ওকে বিয়ে করতে চাইতো| কিন্তু আবার সামাজিক সম্মান হাডানোর ভয়ও করতো| জেনও এখান থেকে বেডিয়ে সভ্য সমাজে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার মত মানসিক শক্তি অর্জন করতে পারে নি| তারপর আজ সকালে ফার্নান্দেজ জেনকে খুন করে করে নিজে আত্মহত্যা করে| আর দেয়ালে লিখে যায়-"আমাদের আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ী নয়|আমরা ইহলোকে তো এক হতে পারলাম না| পরলোকে নিঃসন্দেহে মিলিত হবো|" আপনিই বলুন অফিসার| এর কোন মানে হয়? -জেনকে ফার্নান্দেজ খুন করলো আর জেন কিছুই করলো না? সে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করে নি? -না সার্জেন্ট| জেন বাঁধা দেয়ার মত অবস্থায় হয়তো ছিলো না|আমার ধারণা জেনকে ফার্নান্দেজ নেশা জাতীয় কিছু খাইয়ে চেতনাহীন করে নিয়েছিলো| -কিভাবে আপনার ধারণা হলো? -আমি ফার্নান্দেজকে বারে বসে মদের সাথে কি যেন মেশাতে দেখেছি| -ফার্নান্দেজ কি জেনের জন্য মদ নিয়ে আসতো? আর মিশাতে দেখে কিছু বলেন নি আপনি? -জ্বী| ফারনান্দেজ ওর জন্য মদ নিয়ে আসতো| আমি কিছু বলিনি কারণ আমি ভেবেছিলাম মদের সাথে পানি মেশাচ্ছে| যেটা সবাই করে| -আচ্ছা| তো আপনারা কখন কিভাবে বুঝতে পারলেন যে জেন খুন হয়েছে| ফারনান্দেজ আত্নহত্যা করেছে| -আমি জেনের চিতকার শুনি| তারপর ছুটে যাই| যদিও কামরাগুলোর দরজা বাহির থেকে খোলা যায় না| কিন্তু আমার কাছে সবগুলো কামরার ডুপ্লিকেট চাবি থাকে| তারপর আমি গার্ডদের ডাকি|পুলিশকে খবর দেই| -কিভাবে মারা যায় দু'জন? -ফার্নান্দেজ আপেল কাটার ছুরি দিয়ে প্রথমে জেনের গলা কাটে|তারপর নিজের বুকে নিজে ছুডি চালায়| প্রেম মানুষকে কি পরিমানে বোকা বানিয়ে দেয় দেখুন| নিজের বুকে ছুরি চালানো কি চাট্টিখানি কথা? -চলুন|ওদের কামরাটা দেখে আসি| মাদাম সোফিয়া বেনসনকে নিয়ে করিডরের শেষ মাথায় জেনের কামরার সামনে নিয়ে গেলো| দু'জন প্রহরী সেখানে পাহাডা দিচ্ছিলো|তারা সোফিয়াকে দেখে সসম্ভ্রমে মাথা নোয়ালো|তারপর বেনসনের দিকে প্রশ্নবোধক চোখে তাকিয়ে রইলো| তবে সোফিয়া সম্মতির শুরে হালকা মাথা নোয়াতে পথ ছেডে দিল তারা| সোফিয়া বেনসনকে নিয়ে কামরায় প্রবেশ করলো| বেশ বড বিলাসবহুল কামরা| বিছানায় দুটো লাশ ইংরেজী L অক্ষরের মত হয়ে পডে আছে| মাদাম সোফিয়ার বক্তব্যের সাথে মিলে গেল পুরোপুরি| জেন নামের মেয়েটির গলা কাটা| তার নগ্ন স্তনের মাঝ দিয়ে বয়ে চলছে রক্তের ধারা| আর ফার্নান্দেজের বুকে আমূলবিদ্ধ ছুডি| কারো গায়েই পোষাকের বালাই নেই| হয়তো ইহজগতে শেষবারের মত সঙ্গম করে নিতে চেয়েছিলো ওরা| বিছানা হতে একটু দূরেই একটা তেপায়া| সেখানে একটা আধখালি মদের বোতল আর দু'টো খালি গ্লাস| দু'টো গ্লাসেই তলানী পডে আছে| কামরার দেয়ালে বড বড করে লেখা সুসাইড নোট| সোফিয়া আশা করলো বেনসন এবার সিনেমায় দেখা গোয়েন্দাদের মত হাতে দস্তানা পডে এটা সেটা নেডে চেডে দেখবে আর তীক্ষ্ম চোখে পর্যবেক্ষণ করবে| বেনসন এসবের কিছুই করলো না| সে চুপ করে ঘরের একমাত্র সোফায় গিয়ে বসে পডলো| হালকাভাবে কামরার এদিক ওদিক তাকিয়ে তিন মিনিট তেত্রিশ সেকেন্ড পার করলো|তারপর বললো, -চলুন মাদাম| -আপনি কি রিপোর্ট লেখার মত যথেষ্ঠ তথ্য পেয়েছেন| -পেয়েছি|শুধু একটা কাজ বাকী| জেনের কোন বন্ধুর সাথে কথা বলা| -তাই? আপনি সেক্ষেত্রে মারিয়ার সাথে কথা বলতে পারেন| মারিয়া জেনের সবচেয়ে ঘণিষ্ঠ বান্ধবী|অবসর সময়টা ওরা একসাথে কাটাতো| তবে সে এখনো জেনের শোক কাটিয়ে উঠতে পারে নি| আপনি দোতালার বারো নম্বর কামরায় চলে গেলে ওকে পাবেন| এখন,যদি আমাকে ক্ষমা করেন,তাহলে আমি খদ্দেরদের সময় দিতে চাই| -ঠিক আছে| আপনি যেতে পারেন| আমার অসুবিধা হবে না| বেনসন দোতালায় গিয়ে মারিয়ার দরজায় নক করলো| দু'মিনিট দরজা খুলে দিলো মারিয়া| মারিয়ার চোখ দু'টো লাল| হয়তো কাঁদছিলো|পরনে একটা রোব| ঢিলেঢালা রোবের উপর দিয়ে সুডৌল বক্ষের অনেকটাই উন্মুক্ত ছিলো| সে একটু ব্যস্ত সুরে বললো, -দুঃখিত| আমি আজ রাতে ছুটি নিয়েছি,কাজ করছি না| আপনি অন্য কাউকে খুঁজে নিন| -আমি সার্জেন্ট রয় বেনসন| স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড| মিস জেনের খুনের ব্যাপারে কথা বলতে এসেছি| -ওহ,দুঃখিত| আমি আসলে......আপনি ভিতরে আসুন| বেনসন ভিতরে ঢুকলো| অনেকটা জেনের কামরার মতই আরেকটা বিলাসবহুল কামরা| সে সোফায় গিয়ে বসে পডলো|মারিয়া ডিভানের উপর বসলো,বেনসনের মুখোমুখি হয়ে| -আমি আসলে....এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না যে জেন আর নেই| মারিয়ার চোখে পানি না থাকলেও বন্ধু-হাডানো বেদনার ছাপ স্পষ্ট| যদিও বেনসনের সেদিকে নজর নেই| মারিয়ার রোব সরে যাওয়া সুন্দর উরুর দিকে তার চোখ আটকে গেছে| -আমি আপনার বন্ধুর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত| আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো| -বলুন| অনেক কষ্টে মারিয়ার উরু হতে চোখ ফিরিয়া তার চোখের দিকে তাকালো বেনসন| -আমি জেন আর ফার্নান্দেজের সম্পর্কের ব্যাপারে জানতে চাই| জেন কি সত্যিই ফার্নান্দেজের প্রেমে পডেছিলো? -হ্যা,পডেছিলো| উত্তর দিলো মারিয়া| তারপর যোগ করলো, -জেন ছিলো আমাদের সবার ঈর্ষার পাত্রী| ফার্নান্দেজ ওর শরীর নিয়ে বেশি খেলত না| এমন অনেকরাত নাকি পার হয়েছে, যখন সারারাত দু'জনে গল্প করে পার করে দিয়েছে| আমাদের সবারই দু'একজন করে নিয়মিত খদ্দের আছে| কিন্তু কেউই ফার্নান্দেজের মত সহানুভূতিশীল ছিলো না| সবারই নজর থাকতো শরীরের উপর| শুনেছি,জেন আর ফার্নান্দেজ বিয়ের কথাও ভাবছিলো| কিন্তু আফসোস, বোকা দু'টো আত্মহত্যা করে বসলো| -জেনের সাথে কারো শত্রুতা ছিলো? -জেনের সাথে? নাহ! ওর মত নির্ঝন্জাট মেয়ে দ্বিতীয়টা নেই এখানে| -ধন্যবাদ আপনাকে| আমি চলি| -আপনার আর কিছু জানার নেই? -নাহ|খুবই সাদাসিধে কেস| নীচে নেমে বেনসন একটা ফোন করলো অফিসে| বললো, -ফরেনসিক এক্সপার্টদের পাঠিয়ে দাও লাশ নিতে| আমি ফিরে এসেই রিপোর্ট জমা দেবো| মাদাম সোফিয়া বেনসনকে দেখে হাসলো| -আপনার কাজ শেষ অফিসার? -হ্যা| -আমি আর কোন সাহায্য করতে পারি? -হ্যা, একটা ছোট্ট প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সাহায্য করতে পারেন| -বলুন,কি প্রশ্ন| -আপনি কি নিজ হাতে খুন করেছেন ওদের,নাকি প্রহরীদের সাহায্য নিয়েছেন? -কি? আপনি ঠিক আছেন তো অফিসার| কি বলছেন বুঝতে পারছেন? -অবশ্যই| বেনসন অসম্ভব দ্রুততার সাথে সোফিয়াকে হ্যান্ডকাফ পডিয়ে দিলো| -হোয়াট দা হেল অফিসার? হ্যাভ এউ টোটালি লস্ট ইওর মাইন্ড? -আপনাকে জেন-ফার্নান্দেজের হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হলো| -আমি?আমি কেন হত্যা করতে যাবো ওদের? -কারণ জেন চাইছিলো এখানকার ব্যবসা ছেডে ফার্নান্দেজকে বিয়ে করে সংসারী হতে|আপনার ভয় ছিলো,জেন এমনটা করলে অন্যান্য মেয়েরাও একই কাজ করতে পারে| যেটা আপনার জন্য অমঙ্গলজনক| তাই আপনি ওদের খুন করেছেন| বেনসন আর সোফিয়াকে ঘিরে ভীর জমে গেলো| সবাই উতসুক হয়ে ঘটনা জানতে চাইছে| -আপনি অর্থহীন কথা বলছেন সার্জেন্ট| আপনি আপনার কথা প্রমাণ করতে পারবেন? -না পারার কোন কারণ নেই| -কিভাবে? -আপনার স্টেটমেন্ট আমি মাইক্রোফোনে রেকর্ড করে নিয়েছি| আপনি যে আত্মহত্যার গল্পটা বলেছেন, সেটার কোন অর্থই হয় না| এই স্টেটমমেন্টই আপনাকে ফাঁসাবে| -কেন? কেন অর্থ হয় না? -চারটি কারণে| এক-আপনি বলেছেন, আপনি জেনের চিতকার শুনে ওর রুমে যান| কিন্তু আপনাদের কামরাগুলো তো সাউন্ডপ্রুফ| তাহলে আপনি কিভাবে তার চিতকার শুনতে পেলেন? দুই-জেনকে ফার্নান্দেজ নেশার অষুধ খাইয়ে এতটাই অচেতন করেছিলো যে জেন ফার্নান্দেজকে গলায় ছুডি চালাতে দেখেও বাঁধা দিতে পারে নি| সেই অচেতন জেনই এত জোডে চিতকার দিলো যে তা সাউন্ডপ্রুফ কামরা ভেদ করে আপনার কানে গিয়ে পৌঁছলো? তিন-আমি জেনের কামরায় দু'টি তলানীযুক্ত গ্লাস আর একটা আধখালি মদের বোতল দেখেছি| অর্থাত জেন আর ফার্নান্দেজ দু'জনই মদ খেয়েছিলো| কিন্তু জেন অচেতন হলো আর ফার্নান্দেজ সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিস্কে জেনকে খুন করে দেয়ালে সুসাইড নোট লিখলো? কিভাবে সম্ভব? চার-মানুষ যখন দাডিয়ে থেকে দেয়ালে কিছু লেখে,তখন সবসময় সেটা তার চোখ বরাবর হয়,অর্থাত উচ্চতার কাছাকাছি একটা লেভেলে সে লিখে| কিন্তু দেয়ালে যে লেখাটা আছে, সেটা পাঁচ ফুট চার ইন্চি উপরে| অথচ ফার্নান্দেজের উচ্চতা পাঁচ ফুট এগারো ইন্চি| আর আমার ধারণা মাদাম সোফিয়া,আপনার উচ্চতা পাঁচ ফুট পাঁচ কিংবা ছয় হবে| সুতরাং সুসাইড নোটটা যে আপনারই লেখা সেটা বলাই বাহুল্য| তাছাডা, বারে গিয়ে মদের সাথে ঔষধ মিশিয়ে দেয়াটাও আপনার পক্ষে খুব সহজ ছিলো| আর যেহেতু আপনার কাছে প্রতিটি কামরার চাবি আছে,তাই অচেতন প্রেমিকযুগলকে খুন করাটাও আপনার জন্য জলবত তরলং| আপনি কি এখনও অস্বীকার করবেন? মাদাম সোফিয়ার মুখ ফ্যাকাশে|কাঁধ দুটো ঝুলে পডেছে| তার চোখে অপরাধবোধ আর আত্মগ্লানির অশ্রু| মাদাম সোফিয়াকে গ্রেফতার করে থানার উদ্দেশ্যে পা বাডালো বেনসন| দরজার কাছে গিয়ে কি মনে করে পিছু ফিরলো| ভীরের মধ্যে মারিয়াকে দেখতে পেলো সে| এখনো সেই সংক্ষিপ্ত রোবটাই পডে আছে সে| মারিয়ার চোখে নীরব ধন্যবাদ| চোখ থেকে নজর একটু নীচে নেমে আসতেই নিজেকে শাসন করলো বেনসন| দ্রুত প্রস্থান করলো|

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৯৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।