আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মন- ইড, ইগো, সুপার ইগো

‘তুমি যাকে মৃত্যু বল, তুমি যাকে বল শেষ, সমূল পতন

মানব স্বত্তা মূলত তিনটি মানষিক অবস্থার সমন্বয়ে গঠিত। যাকে আমরা মন বলি তা মূলত এটাই। এর একটি হলো ইড, অন্যটি ইগো এবং শেষটি সুপার ইগো। ইড মূলত: মানুষের আদিম স্বত্তা হিসাবে কাজ করে। মানব মনের স্বভাবজাত চাহিদা পূরনে কাজ করে ইড।

এটাকে অনেকটা ‘মন যা চায় তাই’ এর সাথে তুলনা করা যেতে পারে। সুপার ইগোকে বলা যেতে পারে মানুষের বিবেক। ইড যখন মানুষের কামনা-বাসনা পূরনে উদ্দীপ্ত করে, সুপার ইগো তখন তাকে বাঁধা দেয়। সুপার ইগো সবসময় মানুষকে মানবিক চাহিদার উর্ধে থেকে ভালো কাজ করতে উদ্দীপিত করে। অন্যদিকে, ইগো হচ্ছে এই দুই অবস্থার একটি মধ্যবর্তী স্বত্তা।

ইগো এবং সুপার ইগোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলাই ইগোর কাজ। যে মানুষের ভিতর এই ভারসাম্য রক্ষাকারী ইগো মতা বেশী, স্বাভাবিক সমাজে তার অভিযোজন ক্ষমতা তত বেশী। ইগো না থেকে, কেবল যদি কারো ভিতর ইড কাজ করতো, তাহলে সে অমানুষ বা উম্মাদ হয়ে যেতো। আবার যদি কারো ভিতর কেবল সুপার ইগো কাজ করে, তাহলে সে সাধু-সন্নাসী হয়ে যেতো। ইগো এই দুই অবস্থার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে।

একটা উদাহরণ দেয়া যাক, কোন এক বাড়ির উঠানে বসে একজন মা তার দুই সন্তানকে ভাত খেতে দিয়েছেন। এদের একজন তার নিজের সন্তান অন্যজন সৎ সন্তান। আশেপাশে কিছু প্রতিবেশীও রয়েছেন। তরকারী হিসাবে মাছের একটি বাটি রয়েছে। যেখানে রয়েছে মাছের একটি মাথা অন্যটি লেজ।

এখন খুব স্বাভাবিক ভাবেই মায়ের মনে কাজ করবে, মাথাটি তার নিজের সন্তানকে দিতে। কিন্তু এমনটি করা হলে, প্রতিবেশীরা সমালোচনা করতে পারে এই চিন্তা থেকে তিনি মাথাটা তার সৎ সন্তানকে দিলেন। লেজটা দিলেন আপন সন্তানকে। এখানে, মায়ের ইড কাজ করছিলো তার আপন সন্তানকে মাছের মাথাটা দেয়ার জন্য। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে (প্রতিবেশীদের সমালোচনার ভয়ে) তিনি সেটা তার সৎ সন্তানকে দিলেন।

এখানে তার সুপার ইগো কাজ করেছে। ফলে ইড এখন বিক্ষিপ্ত। এই বিক্ষিপ্ত অবস্থাকে শান্ত করার জন্য এখন কাজ করবে ইগো। ইগো সেই মাকে রাতে স্বপ্ন দেখাবে, যে সে তার আপন সন্তানকে এর চেয়ে বড় একটি মাছের মাথা (তুলনামূলক ভালো) দিয়ে খাওয়াচ্ছে। এখানে ইগো স্বপ্নের মাধ্যমে ভারসাম্য করে দিলো।

একইভাবে জীবনের বিভিন্নে ক্ষেত্রে সুপার ইগোকে প্রধান্য দিয়ে আমরা আমাদের বিভিন্ন ইচ্ছা বা চাহিদা পূরন করতে পারিনা। এই ভয়ে যে; পাছে, লোকে কিছু বলে। আমাদের এই অপূরনীয় চাহিদায় বিক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মন। তখন মন বা ইডকে শান্ত করতে স্বপ্নে আমরা আমাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে থাকি। (প্রিয় পাঠক, আমাদের একাডেমিক পড়াশোনা আর শিক্ষকদের লেকচার শুনে এবং এর সাথে বাস্তব জীবনকে মিলিয়ে মন সম্পর্কে আমার যে সীমিত ধারনা, তা থেকেই এই লেখাটি লিখেছি।

এজন্য নতুন কিছু জানানোর জন্য অথবা অসঙ্গতিগুলো ধরিয়ে দেবার জন্য আপনাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।