আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেট আর উইলিয়ামসের বিয়ের মতো কোন ঘটনা যদি বাংলাদেশে ঘটতো!

'কিছু মাতাল হাওয়ার দল... শুনে ঝড়ো সময়ের গান... এখানেই শুরু হোক রোজকার রূপকথা... / কিছু বিষাদ হোক পাখি... নগরীর নোনা ধরা দেয়ালে কাঁচ পোকা সারি সারি... নির্বান নির্বান ডেকে যায়...'

** এই পোস্টে আমি আমার খুব প্রিয় কয়েকজন ব্লগীয়, ফেসবুকিও ও ক্লোজ বড় ভাইয়ের নাম উল্লেখ করেছি তাদের অনুমতি ছাড়া। আশা করি সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। সারা দুনিয়া কাপানো এক বিয়ের অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করলো বিশ্ব। ভালোই লাগলো।

কিন্তু এই ঘটনা যদি বংলাদেশে ঘটতো! তারেজ জিয়া কিংবা জয়ের বিয়ের সময় যদি এরকম হাউকাউ হতো! তাহলে কি হতো! যেহেতু আওয়ামীলিগ ক্ষমতায় তাই ধরে নিলাম জয়(হাসিনার ব্যাটা) আর ক্রিস্টিনার বিয়ে হচ্ছে বাংলাদেশে। কি কি হতো তখন!! আসুন একবার দেখা যাক। ব্লগঃ ১। ব্লগে মোটামোটি তোলপাড় শুরু হয়ে যেতো। তোলপাড়ে প্রথম তেল ঢালতো নাগরিক ব্লগ।

“অপমানে লজ্জায় যে বিয়ের কবুল হয়না” শিরোনামের তারা পোস্ট স্টিকি করে বসতো। পোস্টে রাজনীতিবিদদের বিশেষ করে আওয়ামিলীগারদের মোটামোটি ন্যাংটা করে ফেলা হতো। একটা গরীব দেশের সম্পদ একজন রাজনীতিবিদ এভাবে বিয়ে করে খরচ করতে পারেন না এটা নিয়ে তারা হাউকাউ শুরু করতো। ২। প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়তো ব্লগ থেকে ব্লগে।

সামহোয়ারে ফিউশন ফাইভ পোস্ট দিতেন- “বিয়ে করুন ভালো কথা! কিন্তু দেশের সম্পদ নষ্ট করবেন কেনো! এটা কি রাষ্ট্রীয় মাস্তানী নয়?” পোস্ট সাথে সাথে প্লাস আর সহমত মূলক কমেন্টে ভরে যেতো। দাবী উঠতো যাতে পোস্টটি স্টিকি করা হয়। ৩। আলিম আল রাজির মতো হিটখোর ব্লগার এই চান্সে কিছু হিট কামিয়ে নিতো। সরকারকে চরম পচানী দিয়ে সে পোস্ট দিতো “আজ জয়ের বিয়ে(১৮+)"।

এই পোস্ট হিটের বন্যায় ভেসে যেতো। ৪। আস্তিক নাস্তিক ইস্যুও এই চান্সে চাঙ্গা হয়ে উঠতো! আসিফ মহিউদ্দিন পোস্ট দিতেন, “বিয়ে! আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে কতোটা গুরত্বপূর্ন?”। সেই পোস্টে ধর্মের চৌদ্দ গোষ্টি উদ্ধার করে আসিফ ভাই বোঝাতেন যেখানে দুজন পূর্ন বয়ষ্ক মানুষ মানষিকভাবে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এ আছে সেখানে বিয়ের কোন দরকার নেই। বলা বাহুল্য! আস্তিক ভাইদের কাউন্টার পোস্টে সাথে সাথে প্রথম পাতা ভরে যেতো।

৫। সুশীল পোস্ট আসতো সচলায়তনে। শিরোনাম হতো একটু কাব্যিক। যেমন- "রোদ হয় বৃষ্টি হয়; জয় মামুর বিয়ে হয়। " ৬।

সব চেয়ে বেশী জ্বলুনী সৃষ্টি হতো জামাতি ব্লগারদের। সোনা ব্লগে পোস্ট স্টিকি হতো- “ইসলামী আন্দোলনকারীদের কারাগারে রেখে নাফরমানী বিয়েতে মজেছে দেশ! এর শেষ কোথায়?” ছাগু ব্লগারদের পোস্টে টেকাই কঠিন হয়ে যেতো। এক মুসলমান কেনো খ্রিষ্ঠানকে বিয়ে করবে তা নিয়ে মুহুর্মুহু পোস্ট আসতো ব্লগে। ৭। ফটোব্লগ আসতো।

বিয়ের অনুষ্ঠানে কি কি পোষাক পরবেন জয় ক্রিস্টিনা। ফেসবুকঃ ১। দেশপ্রেমের জোয়ার বয়ে যেতো ফেসবুকের বুকে। স্ট্যাটাস দিয়ে এর প্রতিবাদ জানাতো সবাই। আলিম আল রাজি স্ট্যাটাস দিতেন - “রাষ্ট্রিয় খরচে ব্যাক্তিগত অনুষ্ঠান।

বর্জন করলাম এই বিয়ে” ২। বিডি আইডল ভাই দেখাতেন রাষ্ট্রের কতো টাকা খরচ হচ্ছে এই বিয়ের কারনে। ভুখা শিশুদের ছবি দিয়ে বলতেন এই টাকা দিয়ে কতোজন ভুখা শিশু কতোবছর খেতে পারতো। ৩। হাহাকার মূলক স্ট্যাটাসে ভরে যেতো ফেসবুক।

রাজসোহান ভাই লিখতেন- “জয়ের বিয়ে হয় আমার হয় না! আম্মা শুনতে পাচ্ছো?” ৪। ফেসবুকে কোশ্চেন করা হতো- “আপনি কি বিয়েতে যাচ্ছেন?” মিডিয়াঃ ১। “জয়ের বিয়েতে খালেদাকে কার্ড পাঠিয়ে আমন্ত্রন জানিয়েছেন হাসিনা” ছোট্ট এক কলামের এমন খবর থাকতো সব পত্রিকায়। ২। জয়ের বিয়েতে শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্রলীগ বড় বড় বিজ্ঞাপন দিতো।

৩। বিয়ের অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার নিয়ে ঝামেলা হতো। শেষ পর্যন্ত দায়ীত্ব পেতো এ টি এন ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট কোং। তারা বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু করতো ইভা রহমানের গান দিয়ে। ৪।

বিয়ের প্রতিবাদে বড় বড় মন্তব্য প্রতিবেদন ছাপা হতো দৈনিক "আমার দেশে"। এই চান্সে দেশপ্রেমের বন্যা ছুটিয়ে দিতেন মাহমুদুর রহমান। ৫। প্রথম আলো, কালের কন্ঠ, যুগান্তর, সমকালের সম্পাদকরা আগেই বিয়ের বিশেষ দাওয়াত পেয়ে যাওয়ায় তারা বিয়ে নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্চ করতেন না। উল্লেখ্য যুগান্তরের সুকন্ঠী সম্পাদিকা বিশিষ্ঠ আইনজীবি সালমা ইসলাম একটি গান গাইতেন ঐ অনুষ্ঠানে।

৬। আনিসুল হক কাব্যিক ঢং-এ গদ্য কার্টুন লিখতেন- "ঐশ্বরিক বিয়েতে শরিক হয়ে ঐশ্বর্য লাভ করবো"। তিনি বিয়েতে যেতেন, তার সাথে থাকতেন কবি নির্মলেন্দু গুন, সিমু নাসের, আশিফ এন্তাজ রবি। রাজনৈতিক অঙ্গনঃ ১। বিয়ের দিন হরতাল ডাকতেন আমিনী।

মুসলমানের ছেলে কোন সাহসে খ্রীষ্টান মেয়ে বিয়ে করে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন তিনি। কোরয়ান হাতে হরতাল করে পুরা দেশ অচল করে দিতেন আমিনী। ২। বিয়ের অনুষ্ঠানে বিশেষ দাওয়াত পেতেন মনমোহন সিং সহ ভারতের রাজনৈতিক হর্তাকর্তারা। ৩।

বি এন পি-র কিছু নেতা বিয়েতে গেলেও পাত্তা না পেয়ে বিয়ে থেকে ওয়াক আউট করে আসতেন তারা। ৪। এরশাদ বিয়েতে যেতেন বিমর্ষ বদনে। একবার তাকাতেন নিজের বউ এর দিকে আরেকবার ক্রিস্টিনার দিকে। তারপর লম্বাআআআআ একটা নিঃশ্বাস ফেলতেন।

৪। পরের বার ক্ষমতায় এসে নানান ভুজং ভাজং দিয়ে বিয়ে বাতিল করে দিতো বি এন পি সরকার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।