আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেখ খলিফা বিন যায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল, আবুধাবী (শেষ পর্ব)

লিখতে ও পড়তে আগ্রহী
(স্কুল মসজিদ) (স্কুল অডিটরিয়মের একাংশ) (স্কুল ট্রান্সপোর্ট) (বাংলাদেশ অ্যাম্বাসী, আবুধাবী) তাঁর(লেভার কাউন্সিলর সিদ্দিকুর রহমান) পরিকল্পনার প্রথম টার্গেট হচ্ছে, যে কোন মূল্যের বিনিময়ে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা সাহেবকে স্কুলের চেয়ারম্যান হিসাবে অভিষিক্ত করা। তিনি আবুধাবী মিউনিসিপ্যালিটির বড় ইঞ্জিনিয়ার। ওনার অনুমোদনক্রমে আবুধাবীর বিভিন্ন প্রজেক্ট পাশ হয়ে থাকে। তাঁকে আবুধাবী সরকার এবং বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানী যথেষ্ট মূল্যায়ন করেন। তিনি চেষ্টা করলে স্কুলের জন্য কিছু করতে পারবেন।

নতুন একাডেমিক বিল্ডিং এর নকশা তৈরী এবং অনুমোদন তাঁরই হাতে। তাছাড়া তাঁর যেসব বড় বড় ক্লায়েন্ট আছেন তাদের নিকট থেকে স্কুলের জন্য নগদ এবং নির্মান সাগগ্রী সাহায্য পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষক এই প্রকৌশলী এতটাই দৃঢ় মনোবলের অধিকারী যে, কোন কাজ করার সংকল্প করলে তা বাস্তবায়ন করার জন্য যে কোন ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত থাকেন। ঘটনাক্রমে সিদ্দিকুর রহমান সাহেব এই প্রাকৌশলী গোলাম মোস্তফা সাহেবকে আবিস্কার করেছিলেন। শুরু করলাম সিদ্দিকুর রহমান সাহেবকে সাথে নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা সাহেবকে চেয়ারম্যান করার গোপন পরিকল্পনা।

যথা সময়ে নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করা হলো। সত্যিই এবার তেমন কোন প্রতিদ্ধন্দি গ্রুপ নির্বাচনে আসলেন না। অন্যান্যবার পাঁচ পাঁচ জন করে একাধিক প্যানেল নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্ধন্দিতা করতো। এবার (১) জনাব এস এম শামসুল আলম, (২) জনাব মোহাম্মদ আবু তাহের, (৩) জনাব মোহাম্মদ শাহজাহান (৪) জনাব হুমায়ুন কবির, এবং (৫) মোহাম্মদ লোকমান (লেখক) এই পাঁচ জনের প্যানেল সাবমিট করা হলো। আগেই উল্লেখ করেছিলাম, গঠনতন্ত্রের ধারা মোতাবেক নির্বাচিত পাঁচজন আরো তিন জনকে অন্তর্ভূক্ত করবেন।

আমি আর জনাব হুমায়ুন কবিরই শুধুমাত্র সিদ্দিকুর রহমান সাহেবের সমর্থক, এ কথাটি কিন্তু আমাদের প্রথম তিন জনের নিকট থেকে গোপন রাখলাম। তারা ধরে নিয়েছেন আমরা তাদেরই লোক। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা সাহেবকে অন্তর্ভূক্তির জন্য ৫ জনের মধ্যে অন্তত তিন জনের সমর্থন প্রয়োজন। আমাদের প্যানেলের প্রথম তিন জনের ইচ্ছা, ইঞ্জিনিয়ার জালাল আহমদ (তিনি শুরু থেকে বেশ কয়েকবার এই আসনটি অলংকৃত করেছিলেন) সাহেবকে অন্তুর্ভূক্ত করে তাঁকেই চেয়ারম্যান বানানো। সিদ্দিকুর রহমান সাহেব উক্ত তিনজনকে বুঝানোর চেষ্টা করছেন, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা সাহেবকে সমর্থন দিয়ে চেয়ারম্যান করলে তাঁর যোগ্যতা এবং ভাল পরিচিতির কারণে তিনি স্কুলের জন্য বড় ধরনের কিছু করবেন।

তারা বিশ্বাস করতে পারলেন না, বিশ্বাস না করারই কথা। কারণ এই পর্যন্ত নির্বাচনের পূর্বে তারা এমন মিথ্যা আশ্বাস (হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা) শুনতে শুনতে এখন আসলটাও নকল ভাবতে শুরু করেছেন এবং বললেন, "স্কুলের উন্নয়ন করতে চাইলে চেয়ারম্যান হওয়ার কি দরকার? এমনিতেই করতে পারেন"। তাদের এমন মনোভাবে আমরা হতাশ হলাম। আমাদের পরবর্তী করনীয় ঠিক করার জন্য দ্রুত গোপন বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিলাম, প্র্রথম তিন জনের শেষ জন অর্থাৎ জনাব শাহজাহান সাহেবকে যে কোন ভাবে ম্যানেজ করতে হবে, কারণ তাঁকেই তুলনামূলক একটু সফ্ট হার্টেড হিসাবে মনে হলো। তাঁকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব সিদ্দিকুর রহমান সাহেবই নিলেন।

শাহজাহান সাহেবকে অ্যাম্বাসীতে ডেকে নিয়ে সিদ্দিক সাহেব মোটামেটি মোটিভেট করতে পেরেছেন, তবে শর্ত হলো- তিনি (শাহজাহান সাহেব) সরাসরি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা সাহেবের পক্ষে হাত তুলতে পারবেন না। কারণ তিনি আমাদের প্রথম দুইজন, মানে জনাব শামসুল আলম এবং মোঃ আবু তাহের সাহেবের ভাল বন্ধু। বুঝা গেল, এভাবে সরাসরি বন্ধুদের নারাজ করতে তাঁর মন সায় দিচ্ছিল না। সিদ্দিক সাহেব জানালেন- ঠিক আছে, প্রয়োজনে হিজ এক্সসেলেন্সি অ্যাম্বাসেডর সাহেবের অনুমতি নিয়ে হাত তোলার বদলে গোপন ব্যালটে বাকী তিনজন রিক্রুট করা হবে। যেহেতু কোন প্রতিদ্বন্ধী নাই তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই পাঁচ জন নির্বাচিত হওয়ার কথা।

কিন্তু শেষ মুহূর্তে এক ব্যক্তি এসে প্রস্তাব করলেন তাঁকে ইসিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমাদের অপারগতার কথা জানিয়ে দেয়ার পর তিনি মনোনয়ন প্রত্র জমা করলেন এবং শেষতক নির্বাচন করতেই হলো। নির্বাচনে আমাদের কেউ বাদ পড়েননি। সেই ব্যক্তি ফেল করেছেন, যার কারণে নির্বাচন করতে হলো। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর আমরা পাঁচ জন মিটিং রুমে বসেছি বাকি ৩ জন মনোনিত করার জন্য।

পাশের রুমে ইঞ্জিনিয়ার জালাল আহমদ সাহেব তাঁর লোকজন নিয়ে বসে আছেন এই প্রত্যাশায় যে, একটু পরেই আমাদের মনোনয়ন পেয়ে তিনি ইসি মেম্বার হয়ে কমিটির চেয়ারম্যান পদটি নিশ্চিত করছেন। এক ফাঁকে জালাল আহমদ সাহেব আমাদের মিটিং রুম ঘুরে গেলেন এবং অনেক বাঙ্গালী নেতাদের ভোট বাগিয়ে নেয়ার চিরাচরিত কৌশলের অংশ হিসাবে একটা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে গেলেন। মিথ্যা আশ্বাসটি হলো- তার ভাষায়, "আগামী কাল সকালে দুইটি ক্যারাবান এসে যাচ্ছে"। এই ফাঁকে ক্যারাবান ইতিহাস বলে নেই- ক্যারাবান হচ্ছে বড় কন্টেইনার আকৃতির একধরনের টেম্পরারী রুম বা ঘর। ট্রাক লরীতে করে এসব আনা হয়।

স্কুলের ক্লাশ রুম সমস্য সমাধানের এটিই ছিল তাঁর সমাধান এবং তাও ছিল মিথ্যা আশ্বাস। যথা সময়ে নির্বাচন কমিশনার(অ্যাম্বাসীর অন্য একজন কাউন্সিলার) এবং সিদ্দিকুর রহমান সাহেব আসার পর গোপন ব্যালটে আমাদের পাঁচ জনের রায় নিলেন বাকী তিন জন রিক্রুট করার জন্য। এখন আমাদের প্রথম দুই জনের মনোনিত হচ্ছ্নে ১. ইঞ্জিনিয়ার জালাল আহমদ, ২.জনাব মোঃ আব্দুর রউফ এবং ৩. মোঃ গোলাম মোস্তফা(ছোট)। ইঞ্জিনিয়ার জালাল আহমদ ছাড়া বাকি দুই জনের ব্যাপারে আমাদের কোন আপত্তি ছিল না। হাত তুলে সমর্থনের পূর্বের নিয়ম বাদ দিয়ে গোপন ব্যালটে রিক্রুটের কথা বলাতে শামসুল আলম এবং আবুতাহের সাহেব আমাদের চক্রান্ত (!) মোটা মোটি আঁচ করে তার বিরোধীতা করলেন।

তারপরও হিজ এক্সসেলেন্সির নির্দেশ, তাই গোপন ব্যালটেই রিক্রুট করা হলো। নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হলো- পাঁচজন নির্বাচিত প্রতিনিধি কতৃক গোপন ব্যালটে যে তিনজন মনোনীত হলেন তারা হচ্ছেন সর্বজনাব ১.ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ২. মোহাম্মদ আব্দুর রউফ এবং ৩. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা(ছোট)। ফাইন্যাল রেজাল্ট পেয়ে ইঞ্জিনিয়ার জালাল আহমদ সাহেব মনক্ষুন্ন হয়ে চলেগেলেন। শামসুল আলম এবং তাহের সাহেব খুবই আপসেট হয়ে আমাদের তিন জনের উপর বেশ বিরক্ত হলেন এবং মোনাফেকি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করতেও বাদ রাখেন নি। স্কুল উন্নয়ন তথা অভাব মোছনের কাজ শুরু করলাম এভাবে : কয়েকদিন(তারিখ মনে পড়ছে না)পর ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের মিটিং আহ্বান করা হলো।

স্কুলের ট্রান্সপোর্টের জন্য বড় গাড়ী আছে কয়েকটি, কিন্তু কোন ছোটগাড়ী না থাকাতে বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজের বেশ ব্যাঘাত হয়। আমার প্লান ছিল ভাইস চেয়ারম্যান পদটি কাউকে অফার করে ওনার নিকট থেকে স্কুলের জন্য একটি প্রাইভেট গাড়ী জোগাড় করা। এজন্য আমি মনে মনে সিলেক্ট করলাম হুমায়ৃন কবির ভাইকে। নোয়াখালীর কবির ভাই, আবুধাবীতে অয়েলের ব্যবসা করেন, বেশ মালদার, তিনি অয়েল কবির নামেই পরিচিতি পেয়েছেন আবুধাবীতে। আমার সাথে খুব ভাল সম্পর্ক।

কমিটি গঠনের আগেই ওনার সাথে বৈঠক করে বললাম, আল্লাহ আপনাকে যথেষ্ট অর্থ-সম্পদ দিয়েছেন, স্কুলের জন্য একটি গাড়ী দিলে আল্লাহর নিকট এর উত্তম প্রতিদান পাবেন। স্কুলের ভাইস চেয়ারম্যান পদটি আপনার জন্য বরাদ্ধ করার চেষ্টা করব। এটি অবশ্যই একটি সম্মান জনক পদ নিঃসন্দেহে। কবির ভাই বললেন, ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য আমি কোন গাড়ী দিতে প্রস্তুত নই। তবে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ আমাকে খুবই অনুপ্রণীত করেছে, আমি আগামী কালই স্কুলের জন্য একটি প্রাইভেট কার দেব ইনশাআল্লাহ।

কবির ভাই তাঁর নিজের ব্যাবহারের ২০০১ মডেলের টয়োটা কোরলা স্টেশন ওয়াগন গাড়ীটি স্কুলের জন্য লিখে দিয়ে স্কুল পুণর্গঠনের প্রথম ডোনারের খাতায় নিজের নাম লিখালেন। স্কুলের জন্য আমার প্রথম হাত পাতা সফল হওয়াতে মনে মনে খুবই তৃপ্ত হলাম এবং আরো কাজ করার মনোবল বৃদ্ধি পেল। তারপরও আমি স্কুল পরিচালনা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যন পদটি হুমায়ুন কবির ভাইয়ের জন্য প্রস্তাব করাতে সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে এক্সিকিউটিভ কমিটি গঠিত হয় এভাবে- অনারারী চেয়ারম্যান : জনাব ইজ্ঞিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, অনারারী ভাইস চেয়ারম্যান : জনাব হুমায়ুন কবির, অনারারী সেক্রেটারী : জনাব মোহাম্মদ সামশুল ইসলাম, অনারারী জয়েন্ট সেক্রেটারী : জনাব মোঃ আবু তাহের, অনারারী ট্রেজারার : মোঃ লোকমান (লেখক), অনারারী জয়েন্ট ট্রেজারার : জনাব মোহাম্মদ শাহজাহান এবং অনারারী সদস্য বৃন্ধ হলেন সর্বজনাব মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, এ এইচ এম তাজুল ইসলাম, মোঃ শফিউল হক, মোঃ গোলাম মোস্তফা, মোঃ আব্দুর রউফ, বেগম হোসনা খালেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রফিক সিকদার, এবিএম দিদারুল আলম, এবং সৈয়দ এ এস বাকী বিল্লাহ (প্রিন্সিপ্যাল, পদাধিকার বলে)। এক্সিকিউটিভ কমিটি গঠনের পর দূতাবাসের সহায়তায় স্কুলের সাহায্যার্থ্যে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিত্তবানদের রিসিপশনের ব্যবস্থা করা হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানেই মটিবেশনের মাধ্যমে স্কুলের জন্য একটি বাস এবং লক্ষাধিক দিরহামের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়। এতে আমাদের মনোবল যথেষ্ট বৃদ্ধি পায় এবং "ইনশাআল্লাহ, আমরা পারবই" বলে শুরু করি প্রচন্ড গতিতে যুগপদভাবে তহবিল সংগ্রহ এবং নতুন একাডেমিক বিল্ডিং নির্মান সহ যাবতীয় পূর্ত কাজ। প্রায় পাঁচ মাসের মধ্যে নতুন একাডেমিক বিল্ডিং নির্মান, পুরাতন বিল্ডিং সংস্কার, নতুন বাউন্ডারী ওয়াল নির্মান, দুটি গাড়ী ক্রয়, খেলার মাঠ তৈরী, লাইব্রেরী স্থাপন সহ আরো অনেক ছোট খাট উন্নয়ন এবং সংস্কার সাধনের কাজ, যার মূল্য প্রায় দুই মিলিয়ন দেরহাম। উক্ত কাজ সমূহ সর্বাঙ্গিন সুন্দর এবং যথা সময়ে আঞ্জাম দেয়ার জন্য প্রতিটি ইসি মেম্বার বিরামহীন দায়িত্ব পালন করেছেন। যেন মনে হয়েছে সবাই নিজের বাড়ী তৈরী করেছেন, এমনকি তার চেয়েও বেশি।

তার চেয়েও বেশি এইজন্যই যে, নিজের ঘর তৈরী অথবা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে উক্ত ভদ্র লোকেরা জীবনের বিনিময়েও কারো কাছে হাত পাততেন না। কিন্তু স্কুল উন্নয়নের জন্য মানুষের নিকট হাত পাততে বিন্দু মাত্র সংকোচ বোধ করেননি। বাংলাদেশ কমিউনিটি এমন কি বিদেশী অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেননি। এসব দাতাদেরকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ইসির সুপারিশক্রমে ম্যামরেবল বোর্ড এবং স্টোনে তাদের নাম লিখে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যারা ৫০০০+ দিয়েছেন তাদের নাম বোর্ডে, যারা ১০০০০+ দিরহাম দিয়েছেন তাদের রুপালী এবং বিশহাজার+ দিরহাম দান করেছেন তাদের নাম সোনালী হরফে স্টোনে লিখে রাখা হয়।

ইতোমধ্যে আমাদের প্যানেলের সেই প্রথম দুই ব্যক্তি, জনাব শামসুল আলাম এবং মোঃ আবু তাহের (তাদের পছন্দের জালাল আহমদ সাহেবকে চেয়ারম্যান করতে না পেরে) যাঁরা আমাদেরকে মোনাফেক আখ্যায়িত করতেও ভুল করেননি, তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন এবং খুবই উদ্দীপনার সাথে কাজ করা শুরু করেছেন। ২০০৪-৫ সালের উক্ত কমিটি শুধুমাত্র স্কুলের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে ক্ষান্ত হয়নি, সাথে সাথে শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষকের মান উন্নয়ন, ক্রমান্বয়ে ন্যাশনাল কারিকুলামের আওতায় সম্পূর্ণ ইংলিশ মিডিয়মে রূপান্তরের প্রচেষ্টা, স্কুলের এনালগ হিসাব পদ্ধতির পরিবর্তন করে উন্নত প্রোগ্রমিং এর মাধ্যমে ডিজিটেল আওতায় নিয়ে আসা, ট্রন্সপোর্ট ব্যবহারকারী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মেয়াদ সহ পরিচয় পত্র চালুকরা, সুসজ্জিত অভ্যর্থনা কক্ষ তৈরী, প্রশাসনকে অনুরোধ করে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য স্কুলের সামনের প্রধান সড়কে স্পিড ব্রেকার তৈরী এবং পার্কিং এরিয়া সম্প্রসারণ জন্য যথাযত ব্যবস্থা নেয়া হয়। ২০০৪-৫ পরবর্তী কমিটিগুলো নিজেদের মধ্যে কোন্দল, হানা-হানী ইত্যাদির রেশ ধরে বর্তমানে অ্যাম্বাসী কতৃক নিয়োগকৃত একটি কমিটি স্কুল পরিচালনা করছেন। নিয়োগকৃত কমিটিমেম্বারদের স্কুল পরিচালনার যোগ্যতার চেয়ে দলীয় রাজনৈতিক পরিচয় বড় হওয়ার কারণে স্কুলের শিক্ষার মান দিন দিন খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ইতোপূর্বে যেখানে মাধ্যমিক ও উচ্ছ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করার কোন নজির ছিলনা বর্তমানে সে নজির স্থাপিত হয়েছে।

কমিটি মেম্বারগণ স্কুলের সরাসরি অভিভাবক না হওয়ার ফলে সুষ্ট তদারকির অভাবেই এমনটি হচ্ছে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল। আমরা আশা করছি মরুর বুকে এই বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানটি নোংরা রাজনীতি মুক্ত হয়ে মাথা উঁচু করে টিকে থাক আজীবন। লাল সবুজের জাতীয় পতাকা ফত্ ফত্ করে উড়তে থাকুক মরুর বাতাসে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।