আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দিনের শেষে-১৮



“তোমাদেরকেও এর দায় ও জবাবাদিহীতা দিতে হবে। সেই কথন থেকে অপেক্ষা করছি জুমার নামায পড়তে যাবো। কিন্তু ডাইনিংয়ে শিক্ষার্থীদের খাবারের চাপ বেড়ে যাওয়ায় যেতে পারছি না” খুব আক্ষেপ ও অনেকটা রাগ্বত স্বরে কথাগুলো বলে গেলেন ডাইনিং কর্মচারী স্বপন। বয়স তার ষাট হবে। চুল দারি পেকে একাকার।

কপালের চামরায় কুজ ধরেছে। আমরা ডাইনিংয়ে বসে দুপুরের খাবার খাচিছলাম। ডাইনিংয়ে দুপুর ১২ টা থেকে খাবার দেয়া শুরু করে। স্বপন ভাই টেবিল পরিস্কার করছেন আর সেই সাথে ভাত ও ডালের গামলা এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে দিচ্ছেন। আজকে দেখি সে খুব পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে ভাল কাপর পরিধান করেছে জুমার নামাজ পড়বে বলে।

কিন্তু প্রধান বার্বুচিতাকে ছুটি দিচেছ না। যেহেতু হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা এখনও খেতে আসছে। শুক্রবার জুমার নামাযের সময়ও কেন শিক্ষার্থীরা খেতে আসাছে এনিয়ে স্বপন ভাই মনে মনে খুব ক্ষেপে যাচেছন । কারণ সে জুমার নামাজ পড়তে যেতে পারাছে না। আর এই ক্ষোভ থেকেই তিনি বলে উঠলেন তোমাদেরকেও এর দায় ও জবাবাদিহিতা দিতে হবে।

ডাইনিং কর্মচারী শুধু স্বপন ভাই নয় তার মতো দেশের প্রতিটি মানুষই শুক্রবারের জুমার নামায পড়ার জন্য ব্যকুল হয়ে যায়। সপ্তাহে একটি দিন। তাও আবার জুমার নামায। আমাদের দেশে জুমার দিন জুমার নামাজ পড়া হয় অনেকটা উৎসবের সাথে। ঘরের সবাই- বৃদধ থেকে শুরু করে ছোট ছেলেরা পর্যন্ত মসজিদে যায় জুমার নামাজ আাদায় করতে ।

আমি যতদূর জানি মুসলিমদেরকে দিনে পাঁচওয়াক্ত নামায পড়তে হয়। এটি আল্পাহর পক্ষথেকে একটি আদেশ। নামাযের অনেক উপকারীতা রয়েছে। ব্যক্তিগঠন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনায় নামাযের ভূমিকার রয়েছে অত্যধিক। শুক্রবারের জুমার নামায একটি অবশ্য কর্তব্য কাজ (ফরজ) ঠিক তেমনি দিনের অন্যান্য নামায যেমন ফজর, যোহর, আছর, মাগরিব ও এশার নামায ততটুকু পালন কর্তব্য অর্থাৎ ফরজ।

যা পালন করতেই হবে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষেরা কেন জানি জুমার নামায পড়েই ক্ষ্যান্ত থাকেন। খুব্ই আশ্চর্যের বিষয় হল- জুমার নামাযের দিন সকালের ফজর নামাযটি পর্যন্ত আমাদের বাঙালিরা পড়েন না। সকালের ফরজ নামাযের সময় মসজিদে তিন থেকে শুরু করে ২০ জনের মত মুসল্লি হয়। আর সেখানে ঐদিই দুপুরে জুমার নামাযে মসজিদে দাড়াবার জায়গা পর্যন্ত পাওয়া যায় না।

জুমার নামাযে যে লোকগুলি আসেন সেই লোকগুলি সকালে ফজরের নামাযের সময় কোথায় থাকেন। তাদের জন্য ফজরের নামায কি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু কি জুমার নামাযই ফরজ, দিনের অন্যান্য নামাজ কি ফরজ নয়? তারা কি আল্লাহর কাছ থেকে শুধু জুমার নামায পড়ার অনুমতি নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে? আশ্চর্য এখানেই শেষ নয় যারা জুমার নামায পড়তে আসে তারা ক্নিতু ঐদিনের আছর নামাযই পড়েন না। তারা কি শুধু জুমার নামাজ পড়ে আল্লাহর সাথে ঠাট্ট্রা করে? নাকি মসজিদে গিয়ে উপস্থিতির খাতায় হাজিরা দিয়ে আসে। নামায ফরজ করা হয়েছে দিনে পাঁচবার।

অথচ শুধু সপ্তাহে একটি জুমার নামায পড়েই দায়দায়িত্ব শেষ!!!!!!!! তারাই তো ভালো যারা কখনো কোন নামাযই পড়েন না । পড়লে সব নামাযই পড়া উচিত। আর না পড়লে একেবারে না পড়াই উচিত। সপ্তাহে ৩৫ ওয়াক্তে নামাযের মধ্যে শুধু একটি জুমার নামায পড়ে আল্লাহর সাথে ফাইযলামি বা ঠাট্টামি করা উচিত নয়। মুসলিমদের জীবননির্দেশিকা গ্রন্থের কোথাও উ্ল্লেখ নেই যে শুধু মাত্র জুমার নামায পড়লে বাকি ৩৪ ওয়াক্ত নামায পড়তে হবে না।

শাকির ইকরাম ২২ এপ্রিল ২০১১ সময়: দুপুর ৩:২৫ শের-ই-বাংলা হল

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।