আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আই ভি ফ পদ্ধতি(দেহবহির্ভূত গর্ভাধান পদ্ধতি)

লিখলাম

এক হিসেবে দেখা যায়, বিশ্বের শতকরা দশ ভাগের বেশি মানুষ প্রজননে অক্ষম। এদের প্রজনন ক্ষমতা কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় , তা নিয়ে রবার্ট এডওয়ার্ড মৌলিক গবেষণা শুরু করেন। যার ফল দেহবহির্ভূত গর্ভাদান পদ্ধতি, যাকে ইংরেজি তে বলে ' Invitro fertilization therapy(IVF)'। আইভিএফ চিকিৎসার ফলে ১৯৭৮ সালের ২৫ জুলাই লেসলি ও জন ব্রাউন যে শিশুর জন্ম দেন তার নাম লুসি ব্রাউন। লুসি সম্প্রতি স্বাভাবিকভাবে একটি সন্তানের জন্ম দেন।

সুতরাং আইভিএফ পদ্ধতির কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তার উপর পড়েনি। আমরা এবার দেখি আইভিএফ পদ্ধতি কি। প্রাকৃতিক গর্ভাধানের সাথে পার্থক্য কোথায়? প্রাকৃতিক গর্ভাদান পদ্ধতি সম্পন্ন হয় ৫টি ধাপেঃ প্রথমতঃ ডিম্বানু পরিপক্ব হওয়া। এটি ডিম্বাশয়ে ঘটে। দ্বিতীয়তঃ ডিম্বস্ফোটন প্রক্রিয়া ।

এই পর্যায়ে ডিম্বানু জরায়ুর দিকে এগিয়ে যায়। তৃতীয়তঃ গর্ভাদান প্রক্রিয়া। এই পর্যায়ে ডিম্বানুর সাথে শুক্রাণুর মিলন ঘটে। চতুর্থতঃ কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া। এ পর্যায়ে নিষিক্ত ডিম্বানুর বিভাজন ঘটা শুরু হয় এবং তখন একে বলে ভ্রূণ ।

পঞ্চমতঃ সংস্থাপন প্রক্রিয়া। এই পর্যায়ে ভ্রূণ জরায়ুর ঝিল্লিতে সংযোজিত হয় ও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। অন্যদিকে এডওয়ার্ড 'র আইভিএফ পদ্ধতি সম্পন্ন হয় তিন ধাপেঃ প্রথমতঃ ডিম্বানু পৃথকীকরণ। ডিম্বাশয় থেকে আগে লেপরোস্কপির সাহায্যে ডিম্বানু পৃথক করা হতো। এখন এ পদ্ধতির উন্নতির ফলে সূক্ষ্ম নিডলের সাহায্যে তা করা হয়।

দ্বিতীয়তঃ গর্ভাদান প্রক্রিয়া। এই পর্যায়ে নিষিক্ত ডিম্বানুর সাথে শুক্রাণুর মিলন ঘটানো হয়। তৃতীয়তঃ সংস্থাপন প্রক্রিয়া। এই পর্যায়ে ডিম্বানুর কয়েকবার বিভাজন ঘটে, তখন তাকে জরায়ুতে স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে ডিম্বানু জরায়ুর ঝিল্লিতে সংযুক্ত হয় এবং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে । এডওয়ার্ড তার গবেষণায় দেখতে পান, নিষিক্ত ডিম্বানুর আট বার বিভাজনে ভ্রূণের জন্ম হয়।

তখন তা জরায়ুতে সংস্থাপিত করতে হয়। এডওয়ার্ড গাইনোকোলজিসট প্যাট্রিক স্টেপটোর (ল্যাপরোস্কপি যন্ত্রের একজন জনক)সাথে ল্যাপরোস্কপি যন্ত্র ব্যবহার করে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বানু পৃথক করেন এবং তার সঙ্গে শুক্রাণুর মিলন ঘটান। এভাবে শুরু হয় আইভিএফ পদ্ধতি। আইভিএফ পদ্ধতি তখনই ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় যখন সাধারন অবস্থায় ডিম্বানুর সাথে শুক্রাণুর মিলন ঘটে না। এই অবস্থার নানা কারন থাকতে পারে, যেমন ডিম্বানুর পরিমান কম অথবা শুক্রাণুর উৎপাদনে সমস্যা অথবা জরায়ুনালীতে কোনো ধরনের গঠনগত সমস্যা।

বর্তমানে আইভিএফ একটি প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি। ইতিমধ্যে সারাবিশ্বে চার মিলিয়ন দম্পতি এ পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে। চিত্রঃ রবার্ট এডওয়ার্ড তথ্য সূত্রঃ ১ The Nobel Assembly at Karolinaska Institute press release ২ Edwards, R.G and Steptoe P.C,(1980) A matter of Life, London : hutchinson. ৩ Edwards, R.G. (2001), The bumpy road tohuman in Vitro fertilization, Nature Medicine, 7 PP 1091-94. ৪ কানন পুরকায়স্থ


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।