আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুই নারী অতএব.....নারী দিবস দিয়া নারীর হয়টা কি?

নি:সঙ্গ নাবিক যেসমাজে নারী উন্নয়নের মানে হল নারী উন্নয়ন বলতে পুরুষ সমাজের শক্তিশালী গলাবাজ অংশটা ঠিক কি বুঝল তা,সেদেশে নারী উন্নয়ন কতটুকু আশা করা যায়?এসমাজে এখনও কোননারীর সাথে পুরুষ অন্যায় করলেই তার জন্য নারীর খূত খুজতেই সবাই ব্যস্ত হয়ে যায়। একাজে অন্য নারীরাও এগিয়ে আসে। ফলে নীরবে নিভৃতে কাঁদে সেই অসহায় নির্যাতিতা। আমাদের দেশে এমনিতেই যুক্তিবুদ্ধির মু্ক্তচর্চার ব্যাপ্তি ঘটেনি সামগ্রিকভাবে। একটা কথা প্রচলিত আছে এদেশে কোন ঘটনা না ঘটলে মানুষ শেখে না,যারা জাগার তারা জাগেনা।

বিবেক কমবেশী সবারই আছে কিন্তু তা পরাজিত হয় প্রতিক্রিয়াশীলতার উন্মাদনার কাছে। বাংলার নারীর মুক্তির জন্য কেন আমাদের আরও অনেক বছর অপেক্ষা করতে হবে?কেন আরও কিছু মূল্যবান জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে?ব্যাক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্হ না হলে নারীর প্রতি অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদে এগিয়ে আসেনা কেউই। এমন পরিস্হিতি হলে নারীর উন্নয়ন হবে কি করে? কোননারীকে যৌননির্যাতন করা হলে যখন জানাজানি হয় ঘটনা তখন অধিকাংশই সেই নারীর চরিত্র নিয়ে কথা তোলে। সমাজে ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে যে এধরণের নির্যাতিতা নারীর বিয়েসহ অন্যন্য ব্যাপারে বাঁকাচোখে দেখা প্রয়োজন এখন থেকে। এখানে আপত্তি অবশ্যই আছে।

নির্যাতিত হল একজন নারী তাহলে তার জন্য তাকে কেন দোষারোপ করা হবে?কিন্তু যখন মানুষ জানেই ব্যাপারটা উচিৎ নয় তখন কেন এধরণের অসুস্হততাকে সমাজে বাঁচিয়ে রাখা হয়?কেন এযুগে এসেও একটা নারীকে পড়ালেখা শেখানো হয় বিয়ের বাজারে উপযুক্ত পাত্রী বানানোর জন্য? কেন নারীবিষয়ক সবধরণের সিদ্ধান্তের ব্যাপারসেপারে পুরুষকে নাক গলাতে দিতে হবে?নারী কি নিজের সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম না?কেন এধরণের অসুস্হতা যুগের পর যুগ সমাজে বাঁচিয়ে রাখতে হবে যে নারী নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারবেনা?কেন পুরুষদের এমন মনোভাব লালন করতেই হবে যে নারী তার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে মুখ খুলতে পারবেনা?অথবা একটু শিক্ষিতা হলে তার নিজের সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়ার ফরমালিটি দেখানো যাবে কিন্তু চাবী পুরুষের পকেটেই থাকবে?এমনিতেই পারিবারিকভাবে একজন নারীকে শৈশবে শিক্ষা দেওয়া হয় যে তুমি একজন নারী অতএব তোমাকে যা করতে হবে তা হল......নাহলে চুলির মুঠি ধরে থাবড়াইয়া গালের ৩২ টা দাঁত ফালাইয়া দেওয়া হবে!আশ্চর্য!!একজন মানুষের কি জন্ম নেওয়ার ব্যাপারে তার নিজের কি কোন হাত আছে?এটা অবশ্যই অন্যায়। প্রকৃতঅর্থে এর মাধ্যমে একজন মানুষকে হত্যা করা হয় অথবা অন্যভাবে বলতে গেলে জিন্দালাশে পরিণত করা হয়। মনে রাখতে হবে একাত্তরে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে বাংলার প্রতিটি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কিন্তু কোন অকারণ-অন্যায়ভাবে সামাজিকভাবে নির্যাতিত হতে নয়। প্রকৃতঅর্থে নারীকে তার শিক্ষার মূল্য দিতে হবে। আমাদের সমাজে নারীর প্রতি ভূলধারণাসমূহকে ভেঙ্গে দিতে হবে।

আপনার আশেপাশে আপনার অনেক আপনজনই আছেন যারা রাস্তাঘাটে নারী দেখলেই নারীর পোশাক-আশাক নিয়ে সমালোচনা করেন এবং এমনসব যুক্তিদেন যা কুরূচিপূর্ণ। এদের মানুষ করুন। এরা আপনার উত্তরের জন্যই বসে থাকে। এদের ধারণা আপনিও তার মতই তাই এরা নিজেকে পরিবর্তন করতে উৎসাহী হয়না কিন্তু অযথা নারীর উপর মানসিক নির্যাতনে সিদ্ধহস্ত হয়। নারীরা আমাদের শত্রু কিছু নয়।

এরা সমাজে ছিনতাই,দূর্নীতি,রাহাজানির সাথে জড়িত নয় তাহলে তাদেরপ্রতি কেন আমরা অগ্নিচক্ষু বর্ষণ করে যাব প্রতিনিয়ত?শারিরীকভাবে আমাদের চেয়ে দূর্বল বলে যদি এমনটা করে থাকি তবে তা আমাদেরই দূর্বলতার বহি:প্রকাশ। ৮ই মার্চ নারীদিবস। নারীদিবসে সাধারণত আমাদের কোনকাজ থাকেনা। এদিবসে নারীরা কিছু সভা-সমাবেশ করবেন তাদের অধিকার আদায়ের জন্য। কিন্তু এথেকে আমরা কি কোন শিক্ষা নিতে পারছি? মূলকথা হল শারিরীকভাবে অপেক্ষাকৃত সামর্থ্যবান হওয়ার কারণে এবং সৌভাগ্যক্রমে পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়ে ঐতিহ্যগতভাবে ক্ষমতার চাবীটা হাতে থাকায় আমাদের পুরুষদেরই নারীরপ্রতি উন্নতমানসিকতা প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নিতে হবে।

একথাগুলো আমাদের পুরুষের মধ্য থেকেই আসতে হবে। তবেই নারীউন্নয়ন সম্ভব। সবচেয়ে বড়কথা নারীকে মানসিকধর্ষণ বন্ধ করতে হবে। সে নারী হিসেবে জন্ম নিল এটা কোনভাবেই অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না। নারীকে মানুষ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।