(১)
-এই যে মিস্টার ! ! কেমন আছেন ?
এই নিন , আপনার জন্য তাজা লাল গোলাপ ।
-- প্লিজ তুমি এখন যাও ।
মা ডাক্তারের সাথে দেখা করতে গেছেন । তোমাকে দেখলেঅনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেন ।
- দেখুক না !
তাতে কি ? তোমার বউ হয়ে গেলে দেখবে না বুঝি ! !
-- আরে এটা তো অনেক পরের কথা ।
আমি এখনও তোমার কথা মাকে বলিনি । প্লিজ আমাকে আর বিপদে ফেলো না ।
- আমি তোমার জন্য এত সুন্দর ফুল আনলাম আর তুমি কিনা আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছ !
ok . . . আর কোন দিন আমার সাথে ফুচকা খাওয়ার কথা বলেদেইখো । শিক্ষা দিয়ে দিব ।
-- তুমি শুধু শুধুই রাগ করছো ।
- কেনো করবো না বলো ?
কত বার করে বললাম আর মোটরসাইকেল চালিয়ো না । শুনলে না তো !
যদি শুনতে , তাহলে কি আর আজকে এই হাসপাতালের বেডে পরে থাকতে হত ?
প্রিয়জনের কথা না শুনলে এমনই হবে ।
-- বাদ দাও তো এসব কথা । কালই আমার রিলিজ হয়ে যাবে । অপেক্ষা করো ।
তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে ।
(২)
. . . . . কিছুদিন পর , . . . .
কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়াজকে দেখে আদ্রিতা বলল ।
--এই নিয়াজ , তুমি না বলেছিলে আমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে ? আজ কিন্তুআমার বার্থডে । আজকে সেটা দিতেই হবে ।
নিয়াজ বলতে লাগলো"সারপ্রাইজটা হলো. . . . ..থাক আর বলবো না ।
দেখি তুমিকতদিন সহ্য করতে পারো । "
-আমি আর পারছি না । প্লিজ বলো না . .
--ঠিক আছে । প্রথম বলে নিই । মাকে আমি তোমার কথা বলেছিলাম ।
মা , তোমার ছবি দেখে তোমার একটা উপাধিও দিয়ে দিয়েছেন ।
- আমি জানি তোমার মা কি বলেছে । তিনি বলেছেন "২ নম্বর ছাগলের ৩ নম্বর ছাঁও" । আমার যা চেহারা !
একেবারে কালো পেত্নি !
--কি যে বলো না তুমি !
শাড়িতে কিন্তু তোমাকে ভারী সুন্দর লাগে ।
যাই হোক আমি একটা স্কলারশিপ পেয়েছি ।
আগামি মাসেই M.B.Aকরতে আমেরিকা যাচ্ছি ।
- ভালো । খুব ভালো ।
সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে । বাবা তো চিরদিনেরজন্যই চলে গেলেন ।
আপুটারওবিয়ে হয়ে গেলো । তুমিই বা থাকবা কেনো ? চলে যাও ।
-- এই যে তুমি আবার রাগ করছো । দেখো , আমি যা করছি সবই তো তোমার আর আমার future এর জন্যই করছি ।
- আমি তো "ছেড়া পাতা" ।
আমাকে কেউ রাখতে চায় না । আচ্ছা ? ঐ দেশে গিয়ে আমার কথা মনে রাখবা তো ? ওখানের মেয়েগুলো কিন্তু ভারী সুন্দরী !
--এখন ঈর্ষা হচ্ছে ! তাই না? আমি প্রতিদিন তোমাকে ফোনকরবো ।
- promise করো ।
-- এই যে । তোমার হাতের এই"তিল" টা ছুঁয়ে promise করলাম ।
মাত্রই তো কটা বছর । দেখতে দেখতে কেটে যাবে ।
. . . . . . নিয়াজ আমেরিকা চলে যাওয়ার পর ৩ বছর কেটে গেলো । একদিন নিয়াজের বন্ধু আকাশের সাথে আদ্রিতার দেখা হলো ।
আকাশ বলল " এ কি ! আদ্রিতা যে ! কেমন আছো ?"
-জ্বি ভাইয়া ভালো ।
--তা ঐ নিয়াজটার কি খবর ? ওতো আজকাল ফোনও করে না । মাঝে মাঝে ফেসবুকে চ্যাট হতো । এখন তাকে তো অনলাইনেই পাওয়া যায় না !
- আমাকে তো গত ৬ মাস কোন ফোন করে নি !
(৩)
. . . . . .সেদিন রাতেই নিয়াজ আকাশকে ফোন করলো ।
নিয়াজ আকাশকে একটা প্ল্যান এর কথা জানালো ।
আকাশ বলল "দেখ দোস্ত ।
তুই যে প্ল্যান করছিস । তাতে মেয়েটা মানসিকভাবে অনেক ভেঙ্গে পরবে । "
নিয়াজ বলল "আহা ! দেখ । আমি পরশু দেশে আসছি । এসেই ওকে ফোন করবো ।
তারপর সোজা গিয়ে উঠবো ওর বাসায় । আদ্রিতাকে একটা speical surprise দেব । তুই শুধু আমাকে একটু support দিবি । "
(৪)
নিয়াজ দেশে ফিরেছে । ফিরেইআদ্রিতাকে ফোন করলো ।
আদ্রিতা ফোন রিসিভ করেই বললো "হ্যালো নিয়াজ । আগে বলো তুমি কেমন আছো ? কতদিন তোমাকে দেখি না ! তুমি কবে আসবে ?"
নিয়াজ বলল "আশা করি আমাকে আর তোমার দেখতে হবে না । আচ্ছা তুমি কি ভাবো নিজেকে? তোমার মতো দুশ্চরিত্র মেয়ে আমি কখনো দেখিনি !"
-আমি কিছুই বুঝতেছিনা ! প্লিজ তুমি আমাকে ভুল বুঝোনা ।
-- আমি তোমার প্রতি খুব দুর্বল হয়ে পরেছিলাম । তারসুযোগটাই তুমি নিয়েছো ।
ছিঃ ছিঃ । তোমার মতো মেয়ের সাথে আমি সর্ম্পক রাখবো না।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো নিয়াজ ।
পাশে দাড়ানো আকাশ বললো"দোস্ত । আমার মনে হয় তুই একটু বেশিই বলে ফেলছিস ।
"
"আরে ধুর ! শোন আকাশ । ও অনেক শক্ত মনের মেয়ে । justএকটু মজা করলাম । এখন দেরি না করে চল তারাতারি । " বলল নিয়াজ ।
(৫)
আদ্রিতাদের বাসায় পৌছে নিয়াজ হতভম্ব হয়ে গেলো । কি এক কারনে আদ্রিতাকে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে । ও সেখানে ছুটে গেলো । কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে ।
আদ্রিতার ভা কান্নাভরা চোখে ওর হাতে একটা চিঠি দিলো ।
তাতে আদ্রিতার হাতের শেষ লেখা
. . .
"আমি তো কোন দোষ করিনি ! তাহলে কেনো আমায় এতো বড় শাস্তি দিলে ?
সবার মতো তুমিও এই "ছেঁড়া পাতাকে" ছুঁড়ে ফেলে দিলে ! কেনো ?"
আদ্রিতার নিথর দেহটা তখন হাসপাতালের বেডে পরে আছে । চারপাশে স্বজনদের আহাজারি।
বিষক্রিয়ায় আদ্রিতার সুন্দর মুখটা নীল হয়ে খেছে। মুখের এককোনে একটু যেনো অস্পষ্ট হাসি ।
নিয়াজ মনে মনে বলল "এই কি সেই মেয়ে ? যার জন্য আমি সারাটা জীবন অপেক্ষা করেছি ?"
আকাশের দিকে ফিরে বলল"জানিস আকাশ ।
ও ওই দিন কি বলেছিলো ? আমাদের সন্তান ছাড়া আর কারও জন্য ও এই বেডে শোবে না । কিন্তু ও তোকথা রাখলো না । আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলো । "
আকাশ বলল "ও তো নিজে থেকে যায়নি নিয়াজ ! তুই । হ্যা তুই ওকে খুন করেছিস ।
তুই ওকে কি surprise দিবি ? ওই তোকে সবচেয়ে বড় surpriseদিয়ে চলে গেলো । এই মজাটা না করলে কি চলতো না ? ?"
নিয়াজ আদ্রিতার নিষ্পান মুখটার দিকে চেয়ে রইলো । হটাত্ তার মনে হলো আদ্রিতা যেনো বলে উঠলো "এইযে মিস্টার ! !
এই নিন , আপনার জন্য তাজা লাল গোলাপ । " ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।