আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামে স্কুলছাত্র হত্যা ডালে বিষ মেশান সৎমা, খাওয়ান চাচি



চট্টগ্রামে স্কুলছাত্র হত্যা ডালে বিষ মেশান সৎমা, খাওয়ান চাচি তরল খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে স্কুলছাত্র আবদুল্লাহ আল মাসফিকে হত্যা করা হয়েছে। সৎমা তাসলিমা ডালে বিষ মেশান। মাসফির চাচি মমতাজ বেগম তাঁকে বিষ এনে দেন, বিষ খাওয়ানও তিনি। গতকাল সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে তাসলিমা এসব কথা বলেন। তাসলিমা চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

গত মঙ্গলবার নগরের হালিশহরের বাসা থেকে রাঙামাটি সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুনের সন্তান ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মাসফির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় বাসায় কেউ ছিল না। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে শুরু থেকেই পুলিশ সন্দেহ করছিল। বিষ প্রয়োগে মাসফিকে হত্যায় সহায়তা করার অভিযোগে মমতাজকে পুলিশ গত রোববার রাতে হালিশহর এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মমতাজ স্কুলছাত্র মাসফির সৎমাকে নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। ২০০৭ সালে মাসফির দাদিকেও নৃশংসভাবে খুন করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় মমতাজের এক ছেলে জড়িত ছিলেন। ডবলমুরিং অঞ্চলের সহকারী কমিশনার তানভীর আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, বাইরে থেকে পুঁটলিতে করে বিষ জোগাড় করে দেন মমতাজ। আর গত মঙ্গলবার রান্না করা ডালের সঙ্গে ওই বিষ মিশিয়ে দেন মাসফির সৎমা তাসলিমা।

বিষ মিশিয়ে ওই দিন সকালেই তিনি বহদ্দারহাটে বাবার বাসায় চলে যান। এরপর মমতাজ বাসায় গিয়ে বিষ মেশানো ডাল মাসফিকে জোর করে খাওয়ান। উৎকট গন্ধের কারণে মাসফি ডাল খেতে চাচ্ছিল না। একপর্যায়ে মাসফির মুখের চোয়াল খুলে জোর করে মুখে ডাল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় সে মমতাজের হাতে কামড় দেয়।

ওই কামড় পুলিশ শনাক্ত করেছে। গতকাল আদালত ভবনে মমতাজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাসফি হত্যার সঙ্গে আমি জড়িত নই। তার প্রথম মা আমার আত্মীয়। আমি তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলাম। ’ তবে মাসফির দাদির হত্যার সঙ্গে তাঁর এক ছেলে জড়িত থাকার বিষয়টি মমতাজ স্বীকার করেন।

আদালত সূত্র জানায়, তাসলিমা জবানবন্দিতে মাসফিকে হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য মমতাজকে দায়ী করেন। গতকাল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। এ সময় তিনি বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। জবানবন্দিতে তাসলিমা বলেন, ‘আমার স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রায় দিনই দুপুরে মমতাজ বাসায় আসতেন। সাত-আট মাস ধরে আমাদের বাসায় তাঁর যাতায়াত ছিল।

বাসায় এসেই তিনি মাসফির বিরুদ্ধে আমাকে খেপিয়ে তুলতেন। বলতেন, মাসফি বড় হলে তোমার মেয়েকে বের করে দেবে। তাকে শেষ করে দাও। তোমার বয়স কম। বয়স্ক স্বামীর বাসা ছেড়ে চলে যাও।

’ তাসলিমা বলেন, ‘ঘটনার দিন মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে মমতাজ এক পুঁটলি বিষ বাসায় এসে দিয়ে চলে যান। এরপর পরোটা আনতে মাসফিকে আমি পাশের হোটেলে পাঠাই। এ সুযোগে রান্না করা ডালের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিই। সকাল নয়টার দিকে মাসফির হাতে তালাচাবি দিয়ে আমি শিশুকন্যাকে নিয়ে বহদ্দারহাটে বাবার বাসায় যাই। এরপর আবার ওই বাসায় আসেন মমতাজ।

’ বনিবনা না হওয়ায় ২০০৬ সালে মাসফির মায়ের সঙ্গে তার বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর মাসফি বাবার সঙ্গেই থাকত। ২০০৮ সালে পটিয়ার মেয়ে তাসলিমাকে বিয়ে করেন তার বাবা মামুন। মামুনের নতুন সংসারে একটি সন্তানের জন্ম হয়, যার বয়স এক বছর। dear pls comment.


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।