আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোপালগঞ্জে গির্জায় বোমা হামলা চালিয়ে ১০ জন হত্যা ১০ বছর ধরে তদন্ত চলছে



গোপালগঞ্জের গির্জায় প্রার্থনারত অবস্থায় বোমা হামলা চালিয়ে ১০ জনকে হত্যা ও ৬০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় গত ১০ বছর ধরে শুধু তদন্তই চলছে। এ পর্যন্ত ১৩ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা রদবদল হয়েছে। এখন সিআইডির ১৪তম তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করছে। কবে এ মামলার তদন্ত শেষ হবে এবং আসামিরা সাজা পাবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এ মামলায় বহুল আলোচিত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি হরকাতুল জেহাদের (হুজি) নেতা মুফতি হান্নানকে রিমান্ডে নিয়ে সিআইডি দপ্তরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ 'সংবাদ'কে বলেন, চাঞ্চল্যকর এই মামলার রহস্য উদঘাটনে গ্রেফতারকৃত জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানকে রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হরকাতুল জেহাদের জঙ্গি নেতা রউফসহ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় জঙ্গির নাম সিআইডির কাছে প্রকাশ করেছে। সিআইডি মুফতি হান্নানের দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করে দেখছে। এছাড়াও পলাতক অন্য জঙ্গিদের ধরার চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য, ২০০১ সালে ৩ জুন গোপালগঞ্জের মকসুদপুরের বানিয়রচর ক্যাথলিক গির্জায় যখন ৫০০ থেকে ৭০০ লোক প্রার্থনা করছিল তখন বিকট শব্দে গির্জায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে গির্জার ভবনের ছাদ উড়ে যায়। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গির্জার লোকজন ভয়-আতঙ্কে চারদিকে দেঁৗড়ে পালানো ও ছোটাছুটি করতে থাকে। আর আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেলা ও স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে ১০ জন মারা যায়। ৬০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অন্যদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়। আহতদের মধ্যে অনেকেই এখনো পঙ্গু জীবন কাটাচ্ছে। এ ঘটনার পর পুরো গোপালগঞ্জ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। পরবর্তী সময়ে গির্জায় বোমা হামলার ঘটনায় মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। প্রথমে স্থানীয় পুলিশ পরবর্তী সময়ে অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বোমা হামলার ঘটনা উদঘাটনে নানাভাবে তদন্ত করে।

এক পর্যায়ে গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি রহস্যজনক কারণে ধামাচাপা পড়ে যায়। সূত্র জানায়, জোট আমলে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডির একজন এসপিকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি ঢাকা থেকে কয়েকবার গোপালগঞ্জ গিয়ে মামলাটির খোঁজখবর নেয়ার কিছুদিন পর মামলাটি ধামাচাপা পড়ে যায়। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত নানা জটিলতায় জোড়াতালি দিয়ে মামলাটির তদন্ত চলছে। আজ পর্যন্ত এভাবে শুধু তদন্তই চলছে।

বোমা হামলার পরিকল্পনাকারীকে, কোথা থেকে ব্জঙ্গিরা বিস্ফোরক পেয়েছে, কারা অর্থযোগান দিয়েছে গির্জায় বোমা হামলার পরিকল্পনায় কতজন ছিল। গির্জায় প্রার্থনাকারীরা তাদের টার্গেট ছিল না অন্যকিছু এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সূত্র জানায়, গির্জায় বোমা হামলায় আহতদের মধ্যে অনেকেই এখন চরম দুঃখে দিন কাটাচ্ছে। বোমার স্পিস্নন্টারসহ অনেক আলামত তারা শরীরে বহন করছে। অনেকেরই এখনো পঙ্গুত্ব জীবন কাটছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির ইন্সপেক্টর 'সংবাদ'কে ফোনে জানান, সিআইডি মোটামুটি নিশ্চিত মুফতি হান্নান ও মাওলানা রউফ এ বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত। সম্প্রতি মুফতি হান্নানকে টানা ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ মামলায় এখন মুফতি হান্নানসহ ১৪ জন আটক আছে। ঘটনার সময় স্পটে ৯ জন মারা গেছে। আর হাসপাতালে ১ জন মারা গেছে।

১১ জন গুরুতর আহত হয়েছে। মামলাটি এখনো তদন্ত চলছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মো. আখতারুজ্জামান 'সংবাদ'কে ফোনে আরও জানান, গত ২৮/১/২০০৯ সাল থেকে তিনি তদন্ত শুরু করেন। যত দ্রুত সম্ভব তিনি মামলাটি তদন্ত করে চার্জশিট দিবেন। গির্জার ভেতরে যে বোমাটি বিস্ফোরণ ঘটেছে তা সম্পূর্ণ দেশে তৈরি।

মুফতি হান্নান ও মাওলানা রউফসহ তাদের সহযোগীরা জড়িত। এমন তথ্য এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.