আমার ব্যক্তিগত ব্লগ
একুশে বাসে গুলশান ১ থেকে উঠলাম। যথারীতি বাসে পা দেয়া মাত্র বাস ছেড়ে দিল। কোন মতে রেলিং ধরলাম। আসতে আসতে হেটে মহিলা সিটের কাছে গেলাম যায়গা ছিল না। ৩ সারি মহিলা সিটের মাঝেরটার সামনে দাড়িয়ে ছিলাম।
যে মেয়েটা বাইরের দিকে বসেছে, সে বলল, আপনি বসবেন? সে ওঠে দাড়ানোর প্রস্তুতি নিল। আমি বললাম, আপনি কি এখন নামবেন? ও বলল, না। আমি হেসে উত্তর দিলাম, নাহ, বসব না। পরে সিট খালি হয়ে যাওয়ায় মেয়েটার পাশে বসলাম। বেশ সুন্দর দেখতে, চশমা পড়ে।
মনে হলো কলেজে পড়ে। শাফিনও (আমার ২ বছরের ছেলে) মনে হয় খুব পছন্দ করেছে। পাশে একটু দুরত্ব রেখে বসেছিল আর একদৃষ্টিতে আড় চোখে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ছিল।
এক সময় মেয়েটি পানির বোতল বের করে শাফিনকে উদ্দেশ্য করে বলল, পানি খাবে? আমি আবারও হাসলাম, বললাম, নাহ পানি আছে। পথে শাফিনের সাথে নানা গল্প করতে লাগল।
আমি নিশ্চিত, সে শাফিনের কথা খুব একটা বোঝেনি। না বুঝে হা হা করে তাল মিলিয়েছে।
বাসটা যখন গুলশান থেকে বের হয়ে মধ্যবাড্ডায় মোড় ঘুরছিল। তখন পিছনের সারির কয়েকটা মেয়ে চিৎকার করা শুরু করলো। আরে ড্রাইভার, বাস ঘুরান ক্যান।
সেই মেয়েটি ওদের জিগ্যেস করলো, আপনারা কোথায় নামবেন। ওরা বলল, রামপুরা। মেয়েটি জানালো বাস রামপুরার দিকেই যাচ্ছে। ওরা বেশ লজ্জিত হলো। এদিকে বলে রাখি, বাসের ড্রাইভার বা হেলপার এদের দিকে খুব একটা গা করেনি।
বাস রামপুরা ব্রিজের কাছে আসার পর মেয়েটি আবারও জানালো যে রামপুরা এসে গেছে আপনারা নামবেন বলেছিলেন? ওরা দেখলাম চুপচাপ বসে রইলো। তবে পরের স্টপেজে ওরা নেমে গেল।
আর মালিবাগ রেলগেটের কাছে মেয়েটি নেমে গেল।
আমার মনে হলো, বেশ সরল মনের পরোপকারী মনোভাবাপন্ন মেয়েটি। এখনও দুনিয়ার ঢাক্কা খায় নি, শ্বশুর বাড়ির কটু কথা, সামাজিক নানা বাধা, সমস্যা ওর মনকে শক্ত করে দেয়নি।
তাই সরল সজীব আছে। মনে মনে মেয়েটির জন্য দোয়া করলাম, যেন সব সময় ও এরকমই থাকতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।