আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মরন ছোবল-১ ভায়াগ্রা-ইয়াবা’র চাহিদা তুঙ্গে একটি ভায়াগ্রা ৭০০০ টাকা

জীবনটা কয়দিনের। জানলে খুব ভাল হত তাহলে রক্ত নয়ন মন আর এই বে হায়া যৌবনকে বিশেষ শান্তনা দিতাম

বিশেষ প্রতিনিধি: যৌন উত্তেজক নিষিদ্ধ ওষুধ ভায়াগ্রার চাহিদা তুঙ্গে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ভায়াগ্রার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সুযোগ বুঝে দোকানিরাও এর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন একেকটি ভায়াগ্রা বিক্রি হচ্ছে ৭০০০ টাকায়।

কোন কোন দোকানি বিক্রি করছেন ৮০০০-৯০০০ টাকায়। চোরাইপথে আসা অবৈধ ভায়াগ্রা এখন পুরুষদের কাছে একটি জনপ্রিয় ওষুধ। এক সময়ে কেবল ধনাঢ্য দুর্বল পুরুষরা ভায়গ্রা সেবন করলেও এখন তা মধ্যবিত্তের অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে। এছাড়াও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক ছাত্র ভায়াগ্রা সেবন করছেন। তারা নানাভাবে টাকা যোগাড় করে ভায়াগ্রা কিনছে।

ভায়াগ্রা খাওয়ার পর তারা চার ঘণ্টার জন্য উত্তেজিত থাকছেন। যৌন বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ক্রমশ ভায়াগ্রা ও ইয়াবা সেবনকারীর সংখ্যা বাড়ছে। টাকা আছে এমন ব্যক্তিরা ভায়াগ্রা সেবন করছেন। মাসে মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করছেন। ভায়াগ্রা-ইয়াবা নিষিদ্ধ ওষুধ এ কারণে চিকিৎসকরা কারও জন্যই ভায়াগ্রা বা ইয়াবা কোনটাই প্রেসক্রাইব করেন না।

যারা খান তারা নিজ দায়িত্বেই খান। অনুসন্ধানে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি থেকে শুরু করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অভিজাত ফার্মেসিতে ভায়াগ্রা বিক্রি হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে। একজন ক্রেতার কাছে বিক্রেতারা একসঙ্গে পাঁচ-দশটির বেশি বিক্রি করেন না। আর দামের ওপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।

মাঝে মাঝে বিক্রেতারা বাজারে ওষুধ নেই বলে দাম বাড়িয়ে দেয়। সূত্র জানায়, অনেক সময় নকল ভায়াগ্রাও আসে। সেগুলো অর্ধেক দামে বিক্রি হয়। ক্রেতা চিনতে পারেন না কোনটি আসল আর কোনটি নকল। এগুলোর সাঙ্কেতিক নাম রয়েছে।

ভায়াগ্রার সাংকেতিক নাম প্লাস্টিক। একজন ওষুধ ব্যবসায়ী জানান, এগুলো নিষিদ্ধ ওষুধ। বিক্রি করা আইনত অপরাধ। ইয়াবা বিক্রি করা ও ইয়াবা বহনকারীকে জামিন দেয়া হয় না। যার কাছে ইয়াবা পাওয়া যাবে তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আটকে রাখতে পারে এবং এ জন্য তাকে কমপেক্ষ ১০ থেকে ১২ দিন কিংবা তারও বেশি কারাভোগ করতে হতে পারে।

এর পরও শাস্তি তো আছেই। যে কারণে এটা খুব গোপনে ও সাঙ্কেতিক নামে বিক্রি হয়। এছাড়া যে কেউ ওই সাঙ্কেতিক নাম বললেও তার কাছে বিক্রি করা হয় না। তার চালচলন ও অবস্থা বুঝে বিক্রি করা হয়। আর বিশ্বাস না হলে বলা হয়- নেই অথবা বিক্রি করা হয় না।

সূত্র জানায়, ভায়াগ্রা ও ইয়াবা কেনার জন্য ক্রেতাকে আগে টাকা দিতে হয়। বর্তমানে বাজারে সঙ্কট থাকায় ভায়াগ্রার দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। গত বছরও এক একটি ভায়াগ্রা বিক্রি হতো দুই থেকে তিন হাজার টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে সাত থেকে নয় হাজার টাকায়। আগে ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি হতো ১০০-২০০ টাকায়।

এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা। ভায়াগ্রার বিকল্প হিসেবে অনেকেই ইয়াবা সেবন করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভায়াগ্রা খাওয়ার বৈধতা থাকলেও বাংলাদেশে তা নিষিদ্ধ ওষুধ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মোক্তাদির বলেন, ইয়াবা নেশাজাতীয় দ্রব্য। ভায়াগ্রা একটি বিশেষ ওষুধ।

এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈধ। এমনকি সৌদি আরব রক্ষণশীল দেশ হলেও সেখানেও এটা খাওয়ার বৈধতা আছে। আমাদের দেশে এটা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। ফলে বৈধভাবে দেশে ভায়াগ্রা আসে না। চোরাচালানের মাধ্যমে ভায়াগ্রাসহ অন্যান্য যৌন উত্তেজক ওষুধ আসে।

বাজারে এসব ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদাও রয়েছে। আমাদের এখানে সরকার ভায়াগ্রার রেজিস্ট্রেশন না দেয়ার কারণে তা বাজারজাত করা আইনত অবৈধ। আমরা জানি অবৈধ হলেও বিভিন্নভাবে এ ধরনের ওষুধ বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যৌন উত্তেজক ওষুধ বাজারজাত হচ্ছে।

আমাদের দেশেও বেশ কয়েকটি কোম্পানি এ ধরনের ওষুধ তৈরি করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু সরকার এখনও কোন কোম্পানিকে ওই ধরনের ওষুধ তৈরি করার লাইসেন্স বা অনুমতি দেয়নি। তিনি বলেন, আমি মনে করি যে সব কোম্পানি তা তৈরি ও বাজারজাত করার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেখা দরকার বাজারে ওই ধরনের ওষুধের চাহিদা কেমন। চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনের অনুমতি দেয়া যেতে পারে। যদি সরকার অনুমতি দেয় তাহলে এখন চোরাই পথে ভায়াগ্রা ও ইয়াবাসহ অন্যান্য যৌন উত্তেজক ওষধু আনার জন্য যে বিপুল পরিমাণ মুদ্রা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে তখন তা হবে না।

এছাড়াও নিয়ম করে দিতে হবে কেবল চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াও ওই জাতীয় ওষুধ বিক্রি করা নিষিদ্ধ। কেউ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। যৌন বিশেষজ্ঞদের মতে, ভায়াগ্রা ও ইয়াবা ওষুধই আমাদের দেশে নিষিদ্ধ। ইয়াবা একটি নেশাজাতীয় ড্রাগ। এটা কোনভাবেই কারও খাওয়া উচিত নয়।

এটা খেলে এক সময়ে সে নেশাগ্রস্ত হয়ে যাবে। আসক্ত হয়ে পড়বে। প্রথম প্রথম খাওয়ার পর যে ধরনের উত্তেজনা অনুভব করবে, একটা সময়ে তা আর হবে না। তখন ইয়াবাতে সমস্যার সমাধান হবে না। তাকে নতুন কোন নেশাজাতীয় ওষুধের আশ্রয় নিতে হবে।

তাদের মতে, ভায়াগ্রা নেশাজাতীয় ওষুধ নয়। তবে এটি খেতে খেতে যৌন মিলনের আকাঙ্ক্ষা তৈরিতে এক ধরনের নেশা তৈরি হয়। যারা ভায়াগ্রা সেবন করে যৌন মিলন করে তারা ভায়াগ্রা না খেলে স্বাভাবিকভাবে যৌন মিলনে আগ্রহী হবে না। তাদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হবে না। কারও কারও আবার ভায়াগ্রা খেতে খেতে যৌন দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়।

তাদের মতে, ৬০ বছরের পর কেউ চাইলে সপ্তাহে একটি বা মাসে দু’টি ভায়াগ্রা খেতে পারেন। কিন্তু এটা তার নিজ দায়িত্বে খাবেন। চিকিৎসকরা তাকে সাজেশন দেবেন না। ৫০ বছরের আগে কোনভাবেই কারও ভায়াগ্রা খাওয়া উচিত নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, আমাদের কাছে যেসব রোগী আসছেন তাদের অনেকেই বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য নিজেরাই ভায়াগ্রা কিনে খেয়েছেন।

যখন খেয়েছেন তখন ভাল লেগেছে। কিন্তু দাম বেশি হওয়াতে এখন আর কুলাতে পারছেন না। ভায়াগ্রা খাওয়ার পর তাদের নানা সমস্যাও হয়েছে। সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন পেশার পুরুষ ভায়াগ্রা খাচ্ছে। স্বনামধন্য এক ব্যবসায়ী ভায়াগ্রা সেবন করেন।

তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তার বয়স ৫৬। স্ত্রীর বয়স ২৫-২৬। ওই স্ত্রীকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য বছরে ভায়াগ্রা খেয়ে প্রায় চার লাখ টাকা খরচ করেন। তাকে ভায়াগ্রা কিনে দেয়ার জন্য কাজ করেন তারই ব্যক্তিগত সহকারী।

তিনি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগী। ভায়াগ্রা খাওয়ার পর তার শরীরে আরও নানা রকম সমস্যা হয়েছে। সমপ্রতি তার শরীর বেশি খারাপ হওয়ায় চিকিৎসককে এসব তথ্য জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্বক, যৌন, সেক্স ও এলার্জি বিশেষজ্ঞ এবং কসমেটিক সার্জন সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এ কে এম মাহমুদুল হক খায়ের বলেন, যাদের হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রয়েছে- যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়- তাদের ভায়াগ্রা সেবন করা উচিত নয়। ভায়াগ্রা সেবনে শরীরে বেশি উত্তেজনা তৈরি হলে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। সত্র মানব জমিন রবিবার, ২০ মার্চ ২০১১ এই সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত দিন আপনার নাম (অবশ্যই দিবেন )

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৭৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।