আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'বাধ' লইয়া একখান খেলার খবর


সংবাদটা হল গিয়ে- সুনামগঞ্জ বাধ এর কাজ যা করছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড সংক্ষেপে পাউবো। এ বছরও বন্যার পানি ঠেকানোর বাধ, ফসলি জমি রক্ষার্থে। সে বাধের কাজ এখনও শেষ হয় নাই। সংবাদখানি এতটুকুই। কিন্তু এর পেছনে অনেক অনেক কৃষকের কষ্ট আর আনন্দ জড়িয়ে আছে।

তাই তো ভাববার বিষয়। গুরুত্বপূর্ণও কম না হাওর অঞ্চলের জন্য এই বাধ। তবে শেষ হবে কবে? তা পাউবো না স্বীকার করলেও অথবা কথা না দিলেও( যদিও উনারা দেন নাই কথা, কবে শেষ হবে) আমি দিলাম। এই সহজ কথা দেওয়া তো আপনিও পারবেন। পানির ঢল নামলে তো বাধ এর অসমাপ্ত কাজ ভেসেই যাবে, নাকি? আমাদের গাও-গেরামের ভাষা সহই বলবার থাকি।

আর শুদ্ধ বলতে ভালো লাগছে না। ভালোভাবে কাজ না হইলে তো, বাঁকাভাবে কওনই লাগে। যদিও আমরা আমজনতা। আমরা কমুই আমাগো ভাষায়ই। এই ঘটনার একটু মোজেজা বাইর করার চেষ্টা করলাম আর কি।

এতে যে কৃষকের স্বার্থই জড়িত। আর আমরা হইলাম গিয়া আমজনতা। এই মৌসুমের পর। হেরপর তো আবার নয়া বৎসর আইয়া পরবো। কি মজা কি মজা কইরা তহন লাফাইবো পাউবো ভাইঙ্গা বলবার গেলে- বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।

তহন হেরা বিল আর বাধ বানানোর ট্যাহার লাইগা সরকাররে চাপ দিবো। সরকারও সুড়সুড় করিয়া ট্যাহাগুনা বাইর করিয়া দিবো। এই রহমই তো চলতেয়াছে। হাজার হইলেও কৃষক গো স্বার্থ বলিয়া কথা। এইডারে বেচিয়াই তো অনেকে ধনবান হইয়াছে বলিয়া পরমান আছে।

আসলে তো এই স্বার্থ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর অধীন। তার মানে কামডা না হইলে, দোষডা তো পাউবো এরই। আমি বা আমরা কি ভুল কইলাম? যদি দোষ দেই পাউবো রে। তারপরও দেহেন কি আজিব কাণ্ড! বাধ এর কাম অর্ধেকও হয় নাই। মৌসুম মানে ধান কাটার মৌসুম এবং সাথে সাথে বন্যার ঝুঁকি আইলো বইলা! তবুও কারও মনে অয় বিকার নাই।

খবরটা পত্রিকা মারফত জানছি দেইখা বলতে পারতাছি। আজব লাগছে আমার কাছে। এই খবর পত্রিকা ( ১০-০৩-১১ ইং)- ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় (০৯-০৩-১১) ফলাও কইরা প্রচার হইবার পরও টনক নড়ে না কারোই!!! কি আজব কারবার দেখছুইন নি ভাই! একটু বিবৃতিও নাই সংশ্লিষ্ট উপরের মহলের লোকজনে গো! সরকার চাইলো এইডা করবার লাগি। আর সরকারের কামলাগো লাইগা এই কামডাই পুরা জ্বলে যাইবার পারে! তাও তো ভাববার বিষয়। সরকারেরও দেহি বিকার নাই! নাকি বাজেটের ক্ষুদ্র অংশ দেইখা গায়ে লাগে না।

কত ট্যাহা তা একটু পরেই জানাইতেছি আমনেগোরে। আমরা মাঝে মাঝে আক্ষেপ কইরা কই সাধারণত কেউ ঠইকা গেলে অথবা কিছু আর্থিক বিনিময়ে কেনা সম্পদ ধংস হইয়া গেলে- আহা! টাকাটা জলে গেলো। হেই রহমই আসলে অইতেয়াছে। নাইলে কি আর এই অবস্থা দেখবার অয় আমাগো! বেশি না মাত্র বিশ কোটি পঞ্চাশ লক্ষ ট্যাহার প্রকল্প। বি_শ কো_টি প_ঞ্চা_শ ল_ক্ষ টাকা মাত্র! আফসোস পুরা ট্যাহাডাই জলে গেলো মানে পানিতে ফেলানো হইলো মনে হয়।

কতজন যে বড়লোক হইলো! সিরিয়াল কইবার গেলে তো বড় ফ্যামিলির একখান বাজারের ফর্দ হইয়া যাইবো! পানি উন্নয়ন বোর্ড, চেয়ারম্যান, মেম্বার, আর বেশি উপরেও গেলাম না। নিচেও নামলাম না। তয় টপ টু বোটম যে পুরোটাই দোষী। তা কি আর না বুঝা যায়? আহা! আরেকজন বড়লোক হইবো হেই চিন্তায় আমার ঘুম অয় না। গরীবের স্বপ্ন আর কি! শুধু দেহা ছাড়া আর নিজে নিজে বলবার ছাড়া, কোণই কাম নাই! তবু বলিয়া যাই।

খুব বেশি কি কষ্ট হইতো এইহানে কামডা একটু ভালা ভাবে করলে? নিশ্চয়ই এই ব্যাপারে পুরাপুরি পর্যবেক্ষণ, পরিসংখ্যান, পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিচার। সবকিছু করেই তো একটি বাজেট দাড় করছিলেন পাউবো এর একেকজন প্রকৌশলী। কারে কাজটা দিলে কি হইবার পারে, তাও তো দেহার লোক আছিল। সময়ে সময়ে কামডা হইতেয়াছিল কি না, ঠিকমতো তা দেহারও তো লোক আছিল। সবই যদি ঠিক থাহে তয় সমস্যা-ডা কোণ জায়গায়? হাওরের সেই মায়াময় কৃষক রাই সমস্যা পাউবোর চক্ষে তাইলে! ক্ষেতের লোকে গো লাইগা টাহা বরাদ্দ হইছে।

এই তো বেশি মনে অয় হেগো কাছে! তয় কি আর কিছু বলবার আছে পাউবো রে? আফসোস! পাউবো এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনামগঞ্জ এর কথামালা শুনিয়া এবং ভাব দেখিয়া টিভির পর্দায়। তাই মনে হইলো। যেন ইহা কোণ সমস্যাই না! আরে ভাই আমনের কি সমস্যা আসলেই তো। বানের জলে ভাইসা গেলে গরীব কৃষক গো পুরো ফসলও। আমনের কি আসে যায়।

কানলে তো কানবো কৃষক গনই। আমনে তো ঘুমাইবেন এসি ঘরে। আর বিদেশি বাসমতী চাউল দিয়া পোলাও খাইবেন। তয় সমস্যা যে আমাগো মতো সাধারণ ভোক্তা গো অইবো। হেইয়া তো কপালের ফেরই ধইরা রইলাম।

আহারে! কৃষকের কপাল। এর লাইগা এই রহম জালিয়াতি করবো আমাগো লগে হেরা? -এই প্রশ্ন খান করতেয়াছে সে অঞ্চলের লোকজন। খোজ নিয়া দেখবার পারেন। সহজের উত্তর পাইবেনই পাইবেন। বেশি না আর মাস দুয়েক হয়ত।

প্রকৃতির খেয়ালের কারণে এরপর যহন বৃষ্টি আর দূর দেশ থাইকা আসা পানির ঢল নামবো সুনামগঞ্জে। সেই পানি গটগট করিয়া যখন কিশোরগঞ্জ এর হাওরেও আইবো। তহন তো যে কি হইবার পারে। তা তহনই কমু। এহন আর কমু না।

কারণ তা ভাষাহীন হইবো। একজন কৃষক কিভাবে আহাজারি করে আর কিভাবে পানির নিচ থাইকা তার ডুইবা যাওয়া ফসল রে রক্ষা করতে অবর্ণনীয় পরিশ্রম করে। তা যে দেখবো। আমি নিশ্চিত কোণ বিবেকবান, হৃদয়বান, মানবিক সম্পন্ন লোক মাত্রই মন খারাপ না কইরা থাকতে পারবেন না। কিভাবে পারবেন আসলে? একজন কৃষক সারাদিন ডুইবা ডুইবা অসময়ের পানিতে তলিয়ে যাওয়া তার ফসল রক্ষা করতেয়াছে, তা দেখবার পরও।

যা তাকে সারাবছর তার নিজের খাওয়াও জোটাইবো সাথে মুক্ত করবো ঋণের বোঝা থাইকা। তা বাঁচানোর লাইগ্যা তো জীবন-প্রাণ দিয়াই খাটবো। তাগো জীবন বাঁচানোর জন্যই তো তারা আমাগো লাইগ্যা ফসল করে। আর তা দিয়া আমরা বাঁচি! কৃষক গো স্বার্থের লাইগা বাধ হইবো সর্বোপরি দেশের খাদ্যশস্য উৎপাদনের একটি বিশাল অঞ্চল এই হাওড় লইয়া পাউবো এর এই ধরনের বছরের পর বছর স্বেচ্ছাচারিতা। আসলে মানা যায় না।

প্রতিবছরই এই ধরনের বাজেট এর টাকা লইয়া হরিলুট এর মতনই হয়। আফসোস তারপরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না। এই ট্যাহা মারা তো সহজ। কারণ কোণ পরমান থাকে না কাজের। পরের বছর একখান রিপোর্ট হয়ত যাইবো উপরমহলে- পানিতে ভাইসা গেছে বাধ! এরপর কি আরও কওন লাগবো আমনেগোরে।

কিভাবে চাইলেই পাউবো এর এই প্রকল্পের ট্যাহা জ্বলে যায়। আমনে বিচার দিবেন, কিন্তু পরমান কই? পরমানও বলে পানির নিচে। কই যাই? কিরহম ডাকাতি খান হয় আমার মনে অয় হেই খানে। আহারে কৃষক তোমগো লাইগ্যা সরকার দেয় ঠিকই। কিন্তু ভোগ করবার পারো না বেশিরভাগ সময়! এহনও একটুসখানি সময় আছে।

এর সমাধানও আছে। বাজেটও আছে নিশ্চয়ই। এই মুহূর্ত থেকেই যেন বাধ এর কাজগুলো যত-সম্ভব দ্রুত করা হয়। সাথে সাথে এই ধরনের গাফিলতির জন্য যেন পাউবোর সংশ্লিষ্ট এবং সাথে সাথে এই কাজ সংশ্লিষ্ট লোকজনের ব্যাপারে প্রত্যক্ষ মনিটরিং নিশ্চিত করা হয় উচ্চ জায়গায় থাকা মানুষগুলো থেকে। যদি এই বাধ ঠিকমতো হয় এই বিশাল হাওর অঞ্চলের কৃষকদের জন্য সবসময়।

আমরা সাধারণরা পাবো কম মূল্যে খাদ্যশস্য। কারণ অতি বন্যায় তাদের সময়ের আগেই ফসল তলিয়ে যাবে না। দেশেরও খাদ্যদ্রব্যে অবদান রাখবে অপরিসীম এবং তা রেখেও যাচ্ছে প্রতিবছর এই এলাকার কৃষক। এই সবকিছুই একটু পর্যবেক্ষণেই সম্ভব। বেশি না একটু সঠিক এবং গ্রহণযোগ্য নিয়মেই তা সম্ভব বৈ কষ্ট না।

তা করতেও যদি গাফিলতি থাকে। দোষ তো তাইলে সরকাররেই দিমু। সবাই মিলাই দেই আসেন এই দোষ, তাইলেই যদি টনক নড়ে উপরমহলের।
 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।