আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক চিলতে আনন্দ, ঈদ এবং কিছু স্বপ্নবাজ যুবক

হাসান গুরু

মাঝ রাতে শুরু হওয়া একরোখা বৃষ্টি ভোর পেরিয়ে সকালেও চলছে একটানা। মধ্য শ্রাবনের অঝোর বরিসন ভিজিয়ে যাচ্ছে পুরো রাজধানি ঢাকাকে, বাদলা দিনের এমন বৃষ্টি থামার কোন লক্ষন মিলছেনা। কিন্তু সব ঠিকঠাক করা হয়ে গেছে, ঈদের নতুন জামা কেনাও শেষ। ভিষন ভীড় ঠেলে জ্যাম পেরিয়ে, রীতিমত নাকাল হয়ে পাপ্পু,সাহেদি,পলাশ আর বাতেনরা হতভাগ্য গরিব বাচ্চা গুলোর জন্য ঈদের পোষাক কিনেছে। তবে তাদের সে কেনাকাটায় ক্লান্তি ছিলনা, কারন সহায়-সম্বলহী্ন পথশিশুদের হাতে পোষাক যখন তুলে দেয়া হবে তখন শিশুদের আনন্দ, উচ্ছাস এসব ক্লান্তিকে ছাপিয়ে যায়।

২৭ এপ্রিল চন্দ্রিমা উদ্যানে পথশিশুদের হাতে এসব নতুন ঈদ পোষাক তুলে দেবে 'বন্ধুযোগ'। শিশুদেরকেও দুপুরের পর আসতে বলা হয়েছিল চন্দ্রিমা উদ্যানে। কিন্তু বৃষ্টি থামার লক্ষন নেই, বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়েই একে একে হাজির বন্ধুযোগ সদস্যরা। রিক্সা ভরতি করে নিয়ে আসা হল শিশুদের জন্য কেনা ঈদের নতুন জামা,বৃষ্টি কিছুতা কমে গেছে আর এরই মধ্যে আর দল বেধে মাঠ ভরে গেছে কচিকাচার মেলায়। মুখ ভরতি হাসি মাখা নিস্পাপ সেই সব মায়াবি শিশু মুখগুলো।

এই রাজধানির রাস্তায় রাস্তায় যারা দিন রাত ঘুরে বেড়ায় পেটের ক্ষুধা আর বঞ্ছনার যাতাকলে পিষ্ট হয়ে। মায়াভরা সেসব বঞ্ছিত শিশুদের ঈদ বলে কিছু নেই, নেই ঈদ-এর খুশিও। মাঠের মাঝখানে সেসব শিশুদের সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড় করিয়ে দেয়া হল। একে একে বন্ধুযোগ-এর সদস্যরা তাদের হাতে তুলে দিলো ঈদের নতুন জামা। নিস্পাপ সেসব শিশুদের চোখের তারায় তখন এক একটি ঈদে চাঁদ।

আনন্দ,উচ্ছাস আর নতুন ঈদ জামা পাবার পরম তৃপ্তি । কয়েকজন বন্ধু একত্রিত হয়ে পথশিশুদের জন্য এ পোষাক বিতরনে্র উদ্যোগ নিলো। ছোট্ট পরিসরে বন্ধুযোগ নামের একটি সৃজনশীল সমাজ বান্ধব উদ্যো্গ-এর সদস্যরা অন্তত কয়েকটি শিশুমুখে ফোটালো ঈদের হাসি, গত কয়েক বছর থেকেই এ কাজটি করে আসছে তারা। এছাড়াও পথশিশুদের পাঠ্য সামগ্রী ও শী্তবস্ত্র বিতরনসহ বেশকিছু কাজ করে বন্ধুযোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক দিয়ে পরিচয় হবার পরই গরীব পথশিশুদের জন্য কিছু করার উদ্যেশ্যে তাদের দলবদ্ধ হওয়া।

তাদের ছোট এই উদ্যোগ সবাইকে এমন আয়জনে কিছুটা হলেও প্রানিত করবে, সাহস যোগাবে নতুন সকালে নতুন পথ সন্ধানে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।