আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তখন তুমি নিশ্চুপ ছিলে, তাই এখন তুমি একা অসহায়

প্রথমে তারা পুলিশের উপর চড়াও হলো - অস্ত্র লুট করে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশদের পিটিয়ে মারলো, মৃত্যু নিশ্চিত করতে খুন্তি ঢুকিয়ে দিলো মাথায়। তুমি ভ্রুক্ষেপও করোনি কারণ তুমি তো আর পুলিশ নও- তোমার পরিবারে পুলিশও নেই। তারপর তারা কুপিয়ে হত্যা করলো একের পর এক রাজনৈতিক কর্মীকে। তুমি নিশ্চুপ ছিলে, কারণ তুমি রাজনীতিবিদ বা রাজনৈতিক সচেতন নও। এরপর তারা হিন্দুদের বাড়ীতে আগুন দিলো, সহস্রাধিক হিন্দু গৃহহারা হলো, মন্দির ধ্বংস হলো, মারা গেলো অনেকেই।

তুমি চুপ ছিলে, কারণ তুমি হিন্দু নও। এবার তারা ছিঁড়লো দেশের পতাকা, ভাঙলো শহিদ মিনার, গুঁড়িয়ে দিতে লাগলো মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে গড়া ভাস্কর্য আর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসংসদগুলো। 'মুক্তিযুদ্ধ? সেতো বহু পুরনো কথা', এই বলে এড়িয়ে গেলে তুমি। অতঃপর তারা এলো চাপাইনবাব গঞ্জের পল্লী বিদ্যুত কোয়ার্টারে। আটচল্লিশটি মুসলমান পরিবারকে ঘরের ভেতরে আটকে আগুন দিলো মারার জন্য।

সন্তানকে বাঁচাতে দুতলা ভবন থেকে ফেলে দিলো বাবা-মা। এক কাপড়ে বেরিয়ে এসে কোনো ভাবে জীবন বাঁচালো মানুষগুলো। তুমি এখনো উদ্বিগ্ন নও কারণ তুমি সেখানে ছিলেনা। এভাবে তারা একের পর আগুন দিতে থাকলো ট্রেন আর বাসে, ভেঙ্গে দিতে লাগলো, মারা যেতে লাগলো একের পর এক নিরীহ পথযাত্রী, তারাও মুসলিম। এবার তুমি খানিকটা বিরক্ত।

কারণ তুমি নিজের কর্মক্ষেত্রে যেতে পারছোনা, বান্ধবীকে নিয়ে বিকেলে ঘুরতে পারছো না। ধুত্তোর বলে আবার নির্বিকারে ফেসবুকে বসলে তুমি। সবশেষে? এরপর একদিন তারা এলো তোমার বাড়িতে। কারণ তুমি জামায়াত নও, তুমি শিবির নও। তুমি তাদের সাথে হত্যা যজ্ঞে যোগ দাওনি।

তোমারে চোখের সামনে সম্ভ্রমহানী করা হলো তোমার স্নেহের প্রিয় ছোট বোনকে, তোমার মমতাময়ী মাকে। প্রিয় পিতাকে করা হলো নির্মম অত্যাচার। পাগলের মত তুমি চীৎকার করে যেতে লাগলে সাহায্যের জন্য, তাদের একটু করুণার জন্য। কিন্তু হায়! নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! আজ তোমাকে সাহায্য করবার কেউ নেই, কারণ এতদিন তুমি জামায়াত-শিবিরের এই তান্ডবে নিশ্চুপ ছিলে, আর এই সুযোগে তারা হত্যা করেছে একে একে সকলকে। আজ তুমি অসহায়! বড় অসহায়!! ফেসবুক থেকে সংগৃহীত https://www.facebook.com/Muktijuddhergolpo ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।