আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাদের অ্যান্ড সিমিন : অ্যা সেপারেশন ইরানি সমাজ ব্যবস্থায় কশাঘাত

বুকের ভেতর বহু দূরের পথ...
ঠিক যে সময়টাতে মনে হচ্ছিলো ইরানি চলচ্চিত্রকাররা সেন্সরশিপের ফাঁদে আটকা পড়ে নিজেদের স্বকীয়তা ভুলে যেতে বসেছে তখনই যেনো প্রতিবাদরূপে এলো ‘নাদের এন্ড সিমিন: অ্যা সেপারেশন’ । আরো একটি চলচ্চিত্র যা ইরানি সমাজের অভ্যন্তরীণ ভয়াবহ হাল তুলে ধরেছে। বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে ‘গোল্ডেন বিয়ার’ (স্বর্ণভল্লুক) পুরস্কারজয়ী ‘নাদের এন্ড সিমিন: অ্যা সেপারেশন’ ছবিটি সম্পর্কে এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন সমালোচকরা। ইরানি চলচ্চিত্র নির্মাতা আসগর ফরহাদি পরিচালিত এই ছবিটিই প্রথম কোন ইরানি ছবি যা জার্মান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরার স্বীকৃতি পেলো। শুধু তাই নয় ‘নাদের এন্ড সিমিন: অ্যা সেপারেশন’ চলচ্চিত্রের সব অভিনেতা-অভিনেত্রী সেরা অভিনয়ের পুরস্কার হিসেবে ‘সিলভার বিয়ার্স’ জয় করে নিয়েছেন।

চলচ্চিত্রটির বিষয়বস্তু ইরানের সমাজ ব্যবস্থায় পারিবারিব সংকট। ইরানের রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থায় বিবাহবিচ্ছেদকে ঘিরে দুটি পরিবারকে যে অবর্ণনীয় যন্ত্রণা পোহাতে হয় তা তুলে ধরা হয়েছে এ চলচ্চিত্রটিতে। নাদের আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত বাবাকে দেশে রেখে বিদেশে যেতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে স্ত্রী সিমিন তাকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তাদের একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে আদালত সিমিনের আবেদন নাকচ করে দেয়। চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে সমালোচকরা আরো বলেন, ফারহাদি প্রতিটি চরিত্রকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যাতে প্রত্যেককেই যার যার অবস্থান থেকে একইসঙ্গে ঠিক এবং ভুল বলে প্রতীয়মান হয়।

এক্ষেত্রে পরিচালক নির্দিষ্ট কোন চরিত্রের পক্ষ নেননি যা পরিচালকের সৃষ্টিশীলতা ও মুন্সিয়ানার পরিচয় বহন করে। এর আগে ২০০৯ সালের বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে ফারহাদি ‘অ্যাবাউট ইলি’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালকের ‘সিলভার বিয়ার’ অ্যাওয়ার্ড জেতেন। এবার মঞ্চে পুরস্কার নিতে উঠে ফারহাদি ইরানে কারাবন্দি চলচ্চিত্রকার জাফর পানাহির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। ১১ দিনের এ আসরে জাফর পানাহির প্রতি সংহতি প্রদর্শন করে তার বিচারকের আসনটি শূণ্য রাখা হয়। এবারের আসরে ইতালিয়ান- আমেরিকান অভিনেত্রী রসেলিনি ছিলেন বিচারকদের প্রধান।

চলচ্চিত্রটিতে পরিচালক আসগর ফারহাদির মেয়ে সারিনা ফারহাদি অভিনয় করেছেন। উৎসবে হাঙ্গেরীর খ্যাতনামা নির্মাতা বেলা টারের ছবি ‘দি টিউরিন হর্স’ দ্বিতীয় সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার সিলভার বিয়ার জিতে নিয়েছে। (দৈনিক সমকালে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে প্রকাশিত)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।