আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভ্র“ণ হত্যা সভ্যতার বিপরীতে একটি জঘণ্য অপরাধ

মানবতার গান গেঁয়ে যায়-তারুণ্যের প্রেরণায়

অবাধ যৌনতার এ যুগে অবাধ যৌনাচার যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। যৌন উত্তেজক উপকরণ (নীল সিডি,ভিসিডি,বই,ম্যাগাজিন) গুলোর ব্যা পক বিস্তার,ক্যাবল টিভি নেটওয়াক ও ইন্টারনেটের পর্নো সাইট গুলোর প্রভাবে মারাত্মক যৌন ুধায় আক্রান্ত নারী পুরুষ। যৌন ক্ষুধা মেটানোর জন্য অবাধ যৌনাচারে লিপ্ত হচ্ছেন। ফলে শহর থেকে গ্রামাঞ্চল,দেশ থেকে বিদেশ সবত্র অবাধ যৌনাচার যেন বেড়েই চলছে। বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকায় অবাধ যৌনাচার একটি আইনগত বৈধ বিষয়।

কিন্তু মুসলিম বিশ্বসহ অসংখ্য দেশে তা অবৈধ একটি বিষয়। তারপরেও থেমে নেই অবাধ যৌনাচারের এ ক্রিয়া। বরং আইন যত কঠোর হচ্ছে অবাধ যৌনাচার যেন ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবাধ যৌনাচারের ফসল জারজ সন্তানকে ইউরোপ আমেরিকায় স্বীকৃতি দেয়া হলেও মুসলিম বিশ্ব সহ অসংখ্য দেশে জারজ সন্তানকে স্বীকৃতি দেয়া হয় নাই। ফলে সামাজিকতা তথা লোক লজ্জার ভয়ে ভ্র“ন হত্যা করতে হচ্ছে অবাধ যৌনাচারের ফসলকে।

বর্তমানে সারা বিশ্বে মাতৃগর্ভে ভ্র“ণ হত্যা তথা শিশুহত্যার উৎসব চলছে। এই নিষ্ঠুর অমানবিক কর্মকার্ন্ডটি দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর কারন হচ্ছে নারী পুরুষের অনিয়ন্ত্রিত যৌন জীবন যাপন। প্রথমত-অবিবাহিত অবস্থায় যৌন উদ্দীপনার চঞ্চলতায় নারী পুরুষের অবাধ যৌনসঙ্গ। বতমানে বাংলাদেশে শতকরা ৬০-৭০ ভাগই যুবক বিবাহ পূব যৌনতায় অভ্যস্ত ।

দেশের বিখ্যাত লেখক ডাঃ লূৎফর রহমান তার লিখিত যুবক জীবন বইতে লিখেছেন,আমদের দেশে শতের মধ্যে ৯৯ জনই অবৈধ নারী সংশ্রবে একবার না একবার জীবনকে ধাবিত করে। বাঙ্গালার হাজার হাজার নারীকে রাজ কন্যার হালে যারা রাখে তারাই আমাদের যুব সমাজ। বিশেষ করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে তিন চার বছর মেয়াদী অঘোষিত বিয়ে প্রথা বিরাজমান। যা অবাধ যৌনাচারকে আরো চর্তুগুন বৃদ্ধি করছে। দ্বিতীয়ত-বিবাহিত অবস্থায় স্বামী বা স্ত্রীর অবর্তমানে পরকীয়া সর্ম্পক।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রবাসগামী পরিবারগুলোতে পরকীয়া সম্পর্ক মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়ছে। তৃতীয়ত-স্বামী -স্ত্রী বা উভয়ের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত যৌন সঙ্গ,যা আমাদের দেশে বর্তমানে বিস্তার লাভ করছে। এই সকল যৌন সঙ্গের ফলে মাতৃগভে ভ্র“ণের আবিভাব ঘটে। যৌন মিলনের মাধ্যমে পুরুষের শুক্রানু নারীর ডিম্বানুতে মিলিত হয়ে ডাইগোট সৃষ্টি করে। যাকে ভ্র“ণ বা ফিটাস বলা হয়।

এই হচ্ছে পিতার সন্তান যা তখনো পূর্নাঙ্গরুপ প্রাপ্ত হয়নি। এই ভ্র“ণ মাতৃগভের জরায়ুতে ধিরে ধিরে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হতে থাকে। যৌবনের উন্মদনায় যুবক-যুবতীরা মিলনগ্রস্ত হয়ে পড়ে,কিস্তু তার মাধ্যমে উৎপন্ন হওয়া তাদের গর্ভস্ত সন্তানের কথা তাদের মনে থাকে না। পরবর্তীতে যখন তারা বুঝতে পারে তখন অবিবাহিতরা সাধারণত লোক লজ্জার ভয়ে গোপনে গর্ভপাত ঘটায়। কারণ তাদের গর্ভস্ত নিষ্পাপ শিশুটি সমাজে অবৈধ শিশুরুপে পরিগনিত হয়।

এছাড়া বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীরাও সেচ্ছায় গর্ভপাতের মাধ্যমে আত্মবলি দিচ্ছেন। বতমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের চরম উন্নতির (!) সাধনের ফলে তারা পূর্বেই অবগত হতে পারছেন যে,তাদের সন্তান ছেলে কিংবা মেয়ে কিনা। অধিকাংশ সময় গর্ভে মেয়ে সন্তান নজরে এলেই এভোরেশনের আশ্রয় নিচ্ছেন। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষের মানসিকতা হচ্ছে, নিজের ইদ্রিয় তৃপ্তির জন্য যতো ইচ্ছা তত সেক্র জীবন যাপন করে যাও এবং তার ফলাফল স্বরুপ সৃষ্ট নিষ্পাপ এ ভ্র“ণ সন্তানকে হত্যা কর। আশ্চযের বিষয় এই যে,এই ধরনের কমকান্ডকে আইসঙ্গত ভাবেও স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে।

গর্ভস্ত ভ্র“ণ হত্যা একটি অত্যন্ত যন্ত্রনাদায়ক পদ্ধতি। নিুে তা দেয়া হল-১ আলট্রাসাউট এর মাধ্যমে প্রথমে বাচ্চাটির পা গুলি সজোরে চেপে ধরা হয়। ২ তারপর শিশুটিকে গর্ভতলী থেকে বের করা হয়। ৩ শিশুটির মাথা ছাড়া সমস্ত শরীরকে বের করে নেয়া হয়। ৪ অতপর ধারালো কাচির সাহায্যে শিশুটির ঘাড়ের শিরা কেটে দেয়া হয়।

৫ এরপর ব্রেনে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাচ্চাটিকে মেরে ফেলা হয়। ৬ এরপর কেটে টুকরা টুকরা করে মায়ের পেঠ থেকে বের করা হয়। এইভাবে বাচ্চাটিকে নির্মমভাবে মেরে ফেলা হয়। আধুনিকতার ছলে কিছু অথলোভী কসাইরুপ ডাক্তারদের দিয়ে নরপিশাচরুপ পিতা মাতারা ভিবিন্ন যন্ত্রনাদায়ক পন্থা অথবা বিভিন্ন পত্রাদি প্রয়োগের মাধ্যমে নিবিঘেœই এই পাশবিক কাজ করে চলেছে। পূর্নাঙ্গ ভ্র“ণকে আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রচন্ড চাপ,অসহ্য তাপ-যন্ত্রনা প্রয়োগ ছাড়াও বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টির মাধ্যমে এমনভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয় যা বর্ণনার ভাষা আমার নেই।

অনেক সময় পূর্ণরুপ প্রাপ্ত ভ্র“ণ শিশুটিকে গর্ভে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে টুকরো টুকরো করে বের করে আনা হয়। এমনকি এও দেখা যায় যে,তথাকথিত পিতা-মাতারা øেহের বহিঃপ্রকাশস্বরুপ তাদের প্রিয় সন্তানদের খন্ড বিখন্ড দেহের অংশগুলো রাতের অন্ধকারে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে কুকুর শিয়ালদের খাওয়ান। এটা ঠিক একজন খুনির কাউকে হত্যা করে লাশ গায়েব করার মতো। এভাবেই পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট,বর্বর পিতা-মাতারা প্রতিনিয়তই তাদের আবেগ অনুভুতিতে পূর্ণ তথাকথিত মাতৃত্ববোধকে যৌন উদ্বেগের কাছে বলি দিয়ে তাদের গর্ভজাতক কোমল,নিষ্পাপ শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে যাচ্ছে। এটি যদি একজন মায়ের মাতৃত্ববোধ হয়ে থাকে তবে সেই মাতৃত্ববোধকে গলা টিপে হত্যা করা উচিত।

আর এটি যদি বাবার ন্সেহবোধ বা বাবাত্ববোধ হয়ে থাকে তবে সেই বাবাত্ববোধকে ক্রসফায়ার দেওয়া উচিত। এটি পিতামাতার ঠিক কসাই ভাড়া করে (ডাক্তার) কসাইখানা (হাসপাতাল,কিনিক) একটি পশুকে হত্যা করার মতো। একটি পশুকে যবেহ করার সময়ও সেই নির্মম পন্থাগুলো মাধ্যমে করা হয় না। যা ভ্র“ণ হত্যা করার সময় করা হয়। একজন খুনিকে হত্যার অভিযোগে ফাসি দেওয়া হয়।

তাহলে দিনের পর দিন কৃত্রিম ভাবে অত্যন্ত যন্ত্রনা দিয়ে নিজের সন্তানকে হত্যাকারী এইসব অতি ন্সেহে আবিষ্ট মাতা-পিতাদের বিজ্ঞ পাঠকগন কি শাস্তি দেবেন এই প্রশ্ন রইল সচেতন সমাজের প্রতি? মাতা পিতারা সাধারনত তাদের ভূমিষ্ট হওয়া শিশুটিকে তাদের আদরের প্রানের ধন বলে দাবী করেন। কিন্তু যেসব সন্তানকে তারা গর্ভে হত্যা করেছেন তারা কি তাদের আদরের সন্তান ছিল না? প্রশ্ন রইল সে সব পিতা-মাতারা প্রতি? আপনাদের হিংস্র থাবায় পৃথিবীর আলো দেখার পূর্বেই ঝরে যাওয়া সেই সন্তানদের কি দোষ ছিল?তাদের তো কোন দোষ ছিল না,বরং তারা আপনাদেরই অনিয়ন্ত্রিত যৌন জীবনের ফসল। এ অবাধ যৌনাচার ও অনিয়ন্ত্রিত যৌন জীবনের ফলে বতমান বিশ্বে এইড্স নামক ভয়ংকর পৃথিবী বিধ্বংসী রোগ দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বময়। এর পাশাপাশি ভ্র“ণ হত্যা মানব সভ্যতাকে পশুত্বের নিুস্তরে নিয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে এইড্স আর ভ্র“ণ হত্যার কারনে একদিন এ পৃথিবীটাই কবরস্থানে পরিনত হবে।

তাই এখনই রুখতে হবে অবাধ যৌনাচারকে। আইনের শিকল পরাতে হবে অবৈধ যৌন সম্ভোগকে। নিষিদ্ধ করতে হবে ্ভ্র“ন হত্যা নামক মানব সভ্যতার জঘন্য অপরাধকে। বন্ধ করতে হবে যৌন উত্তেজক সকল উপকরনকে। এবং ১. শিা দীার মাধ্যমে মানুষের মানসিকতার এতখানি সংস্কার করতে হবে যেন উক্ত কাজ গুলোকে লোকেরা ঘৃনার চোখে দেখে।

এগুলোকে পাপ কাজ মনে করে। তাদের নৈতিক চেতনা যেন তাদেরকে উক্ত পাপ কার্য থেকে বিরত থাকে। ২. এই পাপ কার্যগুলোর বিরুদ্ধে সামাজিক চরিত্র ও জনমত এমনভাবে গঠন করতে হবে যেন জনসাধারণ সেগুলোকে অপরাধ ও লজ্জাজনক কাজ মনে করে এবং এগুলোকে এমন ঘৃনার চোখে দেখে যেন জনমত ্ঐ সকল লোকদেরকে উক্ত পাপ কাজ হতে বিরত রাখতে পাওে তারা যাদেও শিক্ষা অসম্পূর্ন রয়েছে অথবা যাদেও নৈতিক চেতনা দূর্বল রয়েছে। ৩. যে সকল উপায় উপাদান মানুষকে এই পাপ কার্যগুলোতে প্ররোচিত ও প্রলুব্ধ করে ,সামাজিক ব্যবস্থার সেগুলোর পথ বন্ধ করে দিতে হবে। এগুলোসহ যে সকল উপায় উপাদান মানুষকে পাপা কার্য করতে বাধ্য করে যথা সম্ভব তার মুলোৎপাটন করতে হবে।

৪. সামাজিক জীবনে এই পাপ কার্যের বিরুদ্ধে এমন কতগুলি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে হবে যেন কোন ব্যক্তি উক্ত পাপ কার্য করতে ইচ্ছা করলেও যেন সহজে করতে না পারে। সর্বোপরি বেকার যুবকদের যথাযথ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা,এবং সরকার ও এনজিওগুলোকে এ ক্ষেেত্র সংশোধন ও গঠনমূলক কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। তৃতীয় বিশ্বে ক্ষুধা ও দ্রারিদ্রতার পাশে অবাধ যৌনাচারের ফল স্বরুপ ভ্র“ণ হত্যা ও এইডস একটি বিরাট আঘাত । বাংলাদেশে অবাধ যৌনাচার মহামারীর আকার না নিলেও ভবিষ্যতে পাশ্ববর্তী দেশ,এনজিওদের বিতর্কিত ভূমিকা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কারণে দেশে মারাত্মক অবস্থা সৃষ্ট করতে পারে। উন্নয়নশীল বিশ্বের জনগনের নিজেদের সহজ সরল জীবন ,সুস্থ মন ও উন্নত নৈতিক চরিত্রের আলোক শিখা দিয়ে অবাধ যৌনাচারকে ধ্বংস সাধন করে যুব সমাজের নেতৃত্বে এক সুস্থ সুন্দর ও স্বনির্ভর সমাজ গড়তে এগিয়ে আসাই হবে এখন উন্নয়নশীল বিশ্ব কর্তৃক উন্নত বিশ্বকে চপেটাঘাত করার মতো বিরাট সফলতম কাজ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.