আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাগলি ,,

হৃদয়ের দু'পাট ঠেলে স্মৃতিরা ঝড় তোলে দুঃখক্রোধে।

ঘুম জাগানিয়া পাখি রোজ ডেকে যায়,, আমি রোজ সেই পাখির ডাক শুনি,, ডাক শুনে আমার ঘুম ভাঙ্গে; সেই সকাল থেকে প্রতিদিনকার একই রুটিন থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে আমি দেয়ালে বসি হয়ে যাই বুনো এক পাখি; আমি উড়ে বেড়াই সারা শহরময়; আনন্দ দেখি; কষ্ট দেখি; নিজেও খানিকটা কুড়াই। আমি বসে আছি একাকী এমন সময় পাগলি এলো। আমি চোখ মেলে এক পলক ওকে দেখলাম কি এক মনখারাপের ছায়া যেন লেগে আছে ওর মুখে কি হয়েছে ওর ?অত শত চিন্তা ছুড়ে ফেলে দিয়ে বললাম; কিরে পাগলি হাই , শোশি ,আনমনা হয়ে কি ভাবছিস ,,তুই বুঝতে পারিস নি আমি যে এসেছি ? ‘হমম...’ “হমম কি রে? আচ্ছা শোশি মজার একটা কৌতুক শোন্। ” ‘হ্যাঁ বল্...’ রিয়াজ ও তার বন্ধু সাইফ।

ঘুম থেকে উঠে রিয়াজ বলল- সাইফ, এই জানালাটা খুলে দেখতো সূর্য উঠল কি না। সাইফ: খুলে দেখলাম তো, অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। রিয়াজ: বোকা নাকি তুই? টর্চটা জ্বালিয়ে দেখতে পারছিস্ না...... হা হা হা! ‘হুম শুনলাম ভাল লাগলো। ’ “শুনলাম মানে? মজার না?” ‘হ্যাঁ মজার। ’ “তো হাসলি না যে?” ‘আরে হাসলাম তো।

’ “আচ্ছা আরেকটা শুন্। ” ‘হ্যাঁ বল্...’ দুই বন্ধু বসে গল্প করছে- ১ম বন্ধু: জানিস্, আমার এক আত্মীয় পাঁচতলা থেকে নিচে পড়েও আহত হয় নি। ২য় বন্ধু: বলিস্ কি! পাঁচতলা থেকে পড়েও আহত হয়নি? ১ম বন্ধু: আরে! সে তো, নিহত হয়েছে! “ইস্ কাজ হলো না। ” ‘কাজ হলোনা মানে কি রে পাগলি?’ “আচ্ছা বাদদে আমার একটা কাজ করে দে। ” ‘কি বল্।

’ “তোর জানা মতো এমন কোন সেন্টার আছে কি যেখানে ভালো কৌতুক বলা শিখানো হয়?” ‘মানে?’ “মানে এই যে আমি ২টা কৌতুক বললাম কিন্তু তোর একটুও হাসি আসলো না, এতে মনে হচ্ছে, আমি পারি নি ঠিক মতো গুছিয়ে বলতে বা বুঝিয়ে বলতে। সব কিছু বলার মধ্যে একটা আর্ট থাকতে হয়, তাইলে সেটা জনপ্রিয়তা পায়। তাই আমি এই রকম একটা সেন্টার খুঁজছি যেখানে আমি কৌতুক বলার আর্ট রপ্ত করতে পারবো, আর তখন আমার কৌতুক শুনে তুই না হেসে পারবি না......!” ‘হা হা হা! হায়রে পাগলি তুই পারিস্ও...!’ “যাক এবার মনে হয় কাজ হয়েছে। এইভাবে আর মন খারাপ করে বসে থাকিস না শোশি। মন খারাপ আমার ভালো লাগে না।

ওকে! আমার কাজ আছে আমি যাই। ” ‘আরে! এই, এসেছিলে কেনো?’ “যাই যাই আমার কাজ আছে” বলেই চলে গেলো পাগলি। পাগলিটা সারাক্ষণ হৈ-হুল্লোড় করে বেড়ায়। আর ওর চারপাশের কেউ মন খারাপ করে থাকতে পারে না ওর কারণে। ছোটবেলা থেকেই এমন এক ভাব ওর মাঝে, দেখলে মনে হয় দুঃখ, কষ্ট ওর জগতে বসবাস করে না।

সবার কাছে অনেক প্রিয় এই পাগলিটা। কেউ কোনদিন রাগ করতে পারে না ওর সাথে। অনেক বড় পরিবারে ওর জন্ম। পরিবারের সবার মন জয় করে নিয়ে সবার অনেক প্রিয় এই পাগলি। বিয়ের পর নতুন একটা পরিবারে গিয়ে ও সবাই কে অনেক আপন করে, সবার মন জয় করে নেয়।

এখন সে ঐ পরিবারের লক্ষ্মী পাগলি বউ। অনেক সময় অনেকে কত রাগারাগি করে, উল্টা-পাল্টা বলে, সে কি সুন্দর ম্যানেজ করে নেয়! আমি বলি- ‘কি রে তোর খারাপ লাগেনা? কোন কিছুতেই তোর কষ্ট হয়না?’ “হয় না বলেছি নাকি তোকে? কিন্তু কষ্ট হয় বলে কি কান্না করবো নাকি? ইস্ সখ কতো! আমি কান্না করি আর তুই আমায় সান্ত্বনার বানী শুনাবি!” ‘কিন্তু কি করে পারিস্ তুই?’ “হুমম সেই-খানেই তো আমার জয়। সেই সাধ্য সবার থাকে না। তবে শোশি একটা ব্যপারে খুব খারাপ লাগে যে আমি যাদের এত পাশাপাশি থাকি ওরা একটুও বুঝে না আমাকে। তবে তুই আবার ভেবে বসিস না আমার খুব কষ্ট হয়।

একদম নাহ...পাগলি কষ্ট বুঝে না, তাইতো কাউকে কষ্ট দিতে পারে না। ” আজ পাগলিটার কথা এত ভাবছি কেন? আচ্ছা ও আজ হুট করে কেন এসেছিলো? আবার হুট করে চলেও গেল। ওর কি মন খারাপ? ওর পাগলামির জন্য ওকে বোঝা মুশকিল, কখন ওর মন খারাপ হয় আর কখন মন ভালো। ফোন দিব? নাহ দিব না, দিয়ে লাভ কি? ওতো কিছু বলবেই না, উল্টা শুধু শুধু রাগ দেখাবে আর ভাব নিয়ে বলবে, “পাগলির মন খারাপ হয় না, হতেই পারে না। ” সবার কষ্ট নিয়ে এত ভাবে সে।

কিন্তু ওর কষ্ট কাউকে বলে না। পাগলামিতে ঢেকে রাখে। হঠাৎ ফোন বেজে উঠতেই চমকে উঠি, ফোন ধরে হ্যালো বলতেই শুনি ওপাস থেকে কান্নার শব্দ। ‘হ্যালো হ্যালো! পাগলি কি হয়েছে? বল না কি হয়েছে? আচ্ছা আগে বল তুই কোথায়?’ “শোশি আমি বাসায় চলে এসেছি। ” ‘কি হয়েছে তোর? এমন করছিস্ কেনো? আচ্ছা ফোন রাখ আমি আসছি।

’ “নাহ্ শোশি, তুই আসিস না, আমি ভালো আছি। ” ‘তো কাঁদছিস কেনো??’ “আরে আজ একটু অন্যভাবে পাগলামি করলাম। হা হা হা! দেখ আমি কত ভালো আছি। আমার কোন কষ্ট নাই, দুঃখ নাই। পাগলিরা কত ভালো থাকে! রাখি পরে কথা হবে।

” ‘আরে শুন হ্যালো হ্যলো! ফোন রেখে দিলো। হায়রে পাগলি কি সুন্দর সুখের অভিনয় করে যায় প্রতিদিন। আসলে কি তুই সুখে আছিস? সত্যি তোকে বুঝি নারে!’...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।