আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নামাজ

আল্লাহ ছাড়া মাবুদ নাই, মুহাম্মাদ(সঃ) আল্লাহর রসুল। মাখলুক কিছুই করতে পারে না আল্লাহ ছাড়া, আল্লাহ সব কিছু করতে পারেন মাখলুক ছাড়া। এই পৃথিবীতে যত নিয়ম বা তরিকা আছে, তার মদ্ধে একমাত্র হুজুর (সঃ) এর তরিকায় শান্তি ও সফলতা।

আল্লাহ্ তায়ালার গায়েবী খাজানা হতে লওয়ার মাধ্যম হলো আমল। আর আমলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ আমল হলো নামাজ।

আল্লাহ্ তায়ালার কুদরত হতে সরাসরি ফায়দা হাসিল করার উপায় হলো আল্লাহ্ পাকের সকল হুকুম রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরীকায় পুরা করা। এর মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এবং বুনিয়াদি আমল হলো নামাজ। নামাজের উদ্দেশ্যঃ নামাজের উদ্দেশ্য হলো। আল্লাহ্ তায়ালার গায়েবী খাজানা থেকে নেয়ার এক্বীন দিলে পয়দা করা। নামাজের লাভঃ ১) নিশ্চয়ই নামাজ যাবতীয় নির্লজ্জ ও অসোভনীয় কাজ হতে বিরত রাখে।

২) যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সহিত এহ্তেমামের সাথে আদায় করবে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে নিজ জিম্মায় জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। যে ব্যক্তি এই নামাজের এহ্তেমাম করলোনা না আল্লাহ্ তায়ালার তার জন্য কোন জিম্মাদারী নাই। ৩) যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে এহ্তেমামের সাথে আদায় করবে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে পাঁচটি পুরুস্কারে পুরস্কৃত করবেন। প্রথমত, আল্লাহ্ তায়ালা তার রিযিকের সংকীর্নতা দূর করবেন। দ্বিতীয়ত, কবরের আজাব দূর করবেন।

তৃতীয়ত, কিয়ামতের দিন তার আমলনামা ডান হাতে দিবেন। চতুর্থত, সে ব্যাক্তি পুলসিরাতের উপড় দিয়ে বিদ্যুতের ন্যায় পার হয়ে যাবে। পঞ্চমত, আল্লাহ্ তায়ালা তাকে বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তিন লাইনে মেহনত করে সাহাবীওয়ালা নামাজ হাসিল করতে হবেঃ দাওয়াত, মশ্ক, দোয়া। দাওয়াতঃ ওজু থেকে নামাজ শুরু এবং সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ।

খুসুখুজু ওয়ালা নামাজের উপর মজবুত হওয়ার জন্য বেশী বেশী দাওয়াত দিতে হবে। ওজুতে চারটি ফরজ ও আঠারটি সুন্নতের দাওয়াত দিতে হবে। নামাজ হল জান্নাতের চাবী আর ওজু হল নামাজের চাবী। ওজুতে পানি অপচয় না করা, অপচয় করা হারাম। অপচয়কারী শয়তানের ভাই।

যে ওজুতে পানির অপচয় হয়, সেই ওজু দ্বারা যে নামাজ পড়া হয় তা মুনকারাত (খারাপ কাজ) হতে বিরত রাখতে পারে না। নামাজের মধ্যে তেরটি ফরজ, চৌদ্দটি ওয়াজিব ও একান্নটি সুন্নতের দাওয়াত দিতে হবে। নামাজের দুইটি দিক রয়েছে জাহেরী বা বাহ্যিক দিক ও বাতেনী বা ভিতরগত দিক। জাহেরী দিক হচ্ছে তাকবিরে তাহরিমা থেকে শুরু এবং সালামের শেষ পর্যন্ত। বাতেনী দিক হল নামাজের মধ্যে তিনটি জিনিসকে হাজির রাখা।

এগুলো হল জিসম, দিল ও দেমাগ। নামাজে জিসম বা শরীরতো হাজির থাকেই। বলা হয় যে, দিল হলো দেমাগের দরজা। নামাজের মধ্যে দিলে যেটা আসে দেমাগ সেখানে যায় এবং চিন্তা করে। দিলকে নামাজের মধ্যে হাজির রাখার জন্য ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতের চিন্তা বা খেয়াল রাখতে হবে, ফলে দেমাগ নামাজের বাইরে যাবে না।

জিসম, দিল ও দেমাগ এই তিন জিনিস যখন নামাজে হাজির হবে তখন নামাজ শুদ্ধ হবে। নামাজের মধ্যে চারটি রোকন আছেঃ কওমা, রুকু, সেজদা ও জলসা। এই চার স্থানে কমপক্ষে তিনবার মনে করা যে, আমি আল্লাহ্কে দেখছি বা কমছেকম আল্লাহ্ আমাকে দেখছেন। কওমা হচ্ছে রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো। মাওলানা সাদ সাহেব (দাঃ বাঃ) বলেন, আল্লাহ্র ধ্যানযুক্ত, দুনিয়ার খেয়াল মুক্ত দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহ্র তায়ালার কাছে যাই চাওয়া হবে তাই পাবে।

একদিন রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীতে বসা ছিলেন, এমন সময় একজন সাহাবী নামাজ পড়ে এসে রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম করলেন, রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, তুমি নামাজ পড় নাই, নামাজ পড়। সেই সাহাবী আবার অনুরুপ নামাজ পড়ে এসে পুনরায় রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম করলেন। তিনি এরশাদ করলেন, যাও নামাজ পড়, কারণ তুমি নামাজ পড় নাই। এইভাবে তিনবার হলো। লোকটি আরজ করলো, সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে হক দিয়ে প্রেরণ করেছেন, আমি এর থেকে উত্তম নামাজ পড়তে পারি না, আপনি আমাকে নামায শিখিয়ে দিন।

তিনি এরশাদ করলেন, যখন তুমি নামাজের জন্য দাঁড়াবে তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর কুরআন মজীদ হতে যা তুমি পড়তে পার পড়বে। তারপর যখন রুকুতে যাবে তখন শান্তভাবে রুকু করবে, তারপর রুকু হতে উঠে শান্ত হয়ে দাঁড়াবে। তারপর সেজদায় যেয়ে শান্তভাবে সেজদা করবে। তারপর যখন সেজদা হতে উঠবে তখন শান্ত হয়ে বসবে।

তুমি সম্পূর্ণ নামাযে এরূপ করবে। হযরত হোযায়ফা (রাযিঃ) একদিন দামেস্কের মসজিদে বসা ছিলেন। এমন সময় একজন লোক নামাজ পড়ে যাওয়ার সময় হযরত হুযায়ফা (রাযিঃ) লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন ‘‘আপনি কতদিন যাবত এভাবে নামাজ পড়েন ? তিনি উত্তর দিলেন আমি চল্লিশ বছর যাবৎ এরকম নামায পড়ি। অতঃপর হযরত হোযায়ফা (রাযিঃ) বললেন আপনি কি জানেন না এরকম নামায পড়লে কিয়ামতের দিন রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দ্বীনের উপর উঠা যাবে না। একদিন রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাহাবীরা নামাজ পড়তেছিলেন।

রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু থেকে উঠার পর এক সাহাবী বললেন ‘‘রববানা লাকাল হাম্দ’’ এবং এর পর বলিলেন, ‘‘হামদান কাসিরন ত্যায়্যিবান মুবারাকান ফী’’। রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজ শেষে জিজ্ঞাসা করলেন, কে নামাযের মধ্যে উহা বলেছে? তখন এক সাহাবী বললেন, আমি বলেছি। রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি দেখলাম ৩০ জন ফেরেশতা তোমার নেকি লেখার জন্য দৌড়া দৌড়ী করছে। মশ্কঃ যেভাবে ওজুর দাওয়াত দিলাম, সেভাবে নিজে ওজু করি। যেভাবে নামাজের দাওয়াত দিলাম সেভাবে নিজে নামাজ পড়ে নামাজের মশ্ক করি।

কোন সমস্যার সম্মুখিন হলে সালাতুল হাজতের দুই রাকায়াত নামাজ পড়ি এবং যতক্ষণ পর্যন্ত সেই সমস্যার সমাধান না হয়, ততোক্ষণ পর্যন্ত দুই, চার, ছয়, এভাবে পাঁচশত, এক হাজার, দুই হাজার, তিন হাজার রাকায়াত নামাজ পড়তে থাকব। দোয়াঃ হে আল্লাহ্ আপনি আমাকে কামেল নামাজ দান করুন, সাহাবী ওয়ালা নামাজ দান করুন, নামাজের হাকীকত দান করুন, যে রকম নামাজ পড়লে আপনার খাজানা হইতে সমস্যার সমাধান করা যায় সেরকম নামাজ পড়ার তৌফিক দান করেন। নামাজের এখলাছঃ নামাজের এখলাছ হচ্ছে নামাজ সমস্ত খারাপ কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখে। যার নামাজ যত সুন্দর হবে তার দিল তত সুন্দর হবে এবং তার জিন্দেগী তত সুন্দর হবে। নামাজের হাকীকতঃ নামাজের হাকীকত হল, আমি কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে নামাজে দাড়িয়ে যাওয়া।

সাহাবারা কোন সমস্যার সম্মুখিন হলে নামাজে দাড়িয়ে যেতেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.