আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন রাহাত, একটি ক্যাম্পাসে!!!

“এই শোন !!” “আমাকে??.........”আঙ্গুল দিয়ে নিজেকে দেখিয়ে বলল রাহাত......। “স্লামালেকুম ভাইয়া......” “এই ছেলে এই আমাকে চিনিস , জানিস আমাকে ???? জানিস আমি হিন্দু না মুসলমান?...আমাকে সালাম দিলি যে ... ” “সরি ভাইয়া...আসলে আমি ভাবছিলাম যে...” “ওকে... এরপর থেকে একটু জেনে শুনে সালাম দিবি...” “তো তুই এরকম কেন?? আচ্ছা বেয়াদব দেখি তুই???” “কোথা থেকে আসছিস তুই???” “একদম অজপাঁড়া থেকে এসেছিস মনে হয়?” “ভাইয়া...”অবাক রাহাত। “ধুর থাম!! তোকে এই বেয়াদুবির শাস্তিতো পেতেই হবে...” “আচ্ছা শোন গান গাইতে পারিস?!...” “গা গান গা ...ঐ যে ঐ গানটা ...” আগে এমন করে কোনো দিন গান গায় নি রাহাত। অনেক লজ্জা হচ্ছে তার। “সরি ভাইয়া গান গাইতে পারি না...” “আরে বলে কি?? গান গাইতে পারেনা??... ন্যাকামি বাদ দিয়ে শুরু কর তারাতারি...” শেষে বাধ্য হয়ে গাইতে শুরু করল রাহাত।

“চুমকি চলেছে একা পথে...সরি ভাইয়া আর পারি না...” “কি গা গা। ভাল হচ্ছে গা”। “সরি ভাইয়া”,আবার বলল রাহাত। “হুম আচ্ছা গান তো পারলি না !! এবারে একটা ড্যান্স দিবি তো? নাকি? ... দোস্ত গানটা প্লে করতো ...” আর একটা বড় ভাইয়াকে বললেন তিনি। বেঁজে উঠল গ্যাংনাম স্টাইল গানটা... “দাও ড্যান্স দাও... রেডি ওয়ান...টু...থ্রী...” ।

ভুলেও কোন দিন ড্যান্স দেয়নি রাহাত। থতমত হয়ে কোন রকমে ড্যান্স শুরু করল সে । ড্যান্স এর ধরণ পছন্দ হয় নি ভাইয়াদের। “ঐ ভাল করে দে। হাতটা এরকম কর? আবার শুরু কর...” বাধ্য হয়ে আবার শুরু করতে হল রাহাতকে।

এ যাত্রায় বেঁচে গেল সে। কিন্তু শেষ কই? আবার শুরু নতুন আর এক পর্ব। “প্রেম করেছিস?” “সরি ভাইয়া...”,বলে উঠল রাহাত। “প্রেম!প্রেম!করিস নি?” “তো জীবনে কি করেছিস!!?” “ আচ্ছা শোন তাহলে এক কাজ কর , আজ থেকে প্রেম স্টার্ট কর। ঐ যে ঐ আপুটা কে দেখতে পারতেছিস? ঐ যে নীল রঙের ড্রেস পড়েছে...দেখেছিস??” “জী ভাইয়া”,কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল রাহাত।

কাঁদো কাঁদো হলে কি হবে কিন্তু তার মাফ তো নাই। “যা ঐ আপুকে গিয়ে বল যে তুই ওনাকে ভালবাসিস। ” “যেমন করে হোক রাজি করাতেই হবে। না হলে তোর শাস্তি আর বেশি হবে বুঝলি...”। এবার হাল্কা মাথাটা গরম হল রাহাতের।

এটা কোন ধরণের কথা? কিছু বুঝে উঠার আগে আবার তাকে তাড়া করে বসল বড় ভাইয়াটা। “কিরে যাচ্ছিস না কেন?” পরে অবশ্য লজ্জার মাথা খেয়ে হাতা শুরু করল রাহাত। এরপর আর কি হল আজও কিছু মনে পরে না রাহাতের। কিন্তু শেষের দিকের কিছু কথা খেয়াল আছে তার। “এটা মজা করলাম মাত্র।

রাগ করেছ ভাইয়া? আরে পাগল ! এইখানে তো তোমাকে বড় ভাইয়ারা ছাড়া আর কে হেল্প করবে? তোমার সাথে পরিচিত হলাম আমরা। যে কোনো প্রব্লেম হলে আমাদেরকে বলিও। আমরা তোমাকে সবসময় হেল্প করব। তুমি তো ক্যাম্পাসে নতুন আসছ তাই না। একটু ভাল ভাবে চলিও।

আর কিছু মনে নিও না ভাইয়া”। ছলছলে চোঁখে ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়ার জানালা দিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আসে রাহাত। কি যেন ভেবে হঠাৎ করে বলল রাহাত। “না ভাইয়া মনে কিছু নেইনি। মনে কিছু নেয়ার কি আছে? তাহলে আজকের মত আসি ভাইয়া?” “ওকে আস কিন্তু মনে কিছু কইরো না পাগল...বুঝলা।

” “ক্যাফেটেরিয়া থেকে বের হয়ে তেঁতুলতলার নিচের রাস্তাটা দিয়ে চোঁখ মুছতে মুছতে আনমনে হেঁটে চলছে রাহাত। মনে একটাই ভাবনা তার “কোথায় ছিল তার ভুলটা? কেন এমন হল?” নিজেকে সামলাতে পারছে না সে। কিন্তু কি আর করার সামলাতে যে হবেই। তাই মনে ভেবে নিল সে এটা তার একটা স্বপ্ন ছিল। “কিন্তু এই স্বপ্নের শেষ কবে? এবং কোথায়??” এই চিন্তাটা আজও করে রাহাত।

লেখনীতে- হাবিবুর রহমান হাবিব, CSE-12, রুয়েট। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.