আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডলার মার্কেট অস্থির



বাজারে ডলার সংকট চলছে। অস্থির হয়ে উঠছে ডলারের বাজার। হঠাৎ করেই খোলা বাজারে চড়ে গেছে ডলারের দাম। বাজারে ডলারের চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে ডলার সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্যাপ্ত সরবরাহ না করায় ডলার সংকট তীব্র হওয়ার পাশাপাশি দামও অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার আশংকা করেছেন সংশিস্নষ্টরা।

তবে বাজারে প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ করছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকিং সূত্র জানায়, রবিবার ব্যাংকগুলোতে সর্বোচ্চ ৭৩ টাকা ৮৬ পয়সা পর্যন্ত ডলারের দাম উঠে। আবার কিছু ব্যাংকে ৭৩ দশমিক ৫০ পয়সা করেও বিক্রি হয়। আগে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম ছিল কমবেশি ৭০ টাকা। ডলারের দাম বাড়তে থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টেলিফোনে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণ করতো।

কিন্তু গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোন ভূমিকাই ছিল না। ব্যাংকে ডলারের দাম বাড়ার ফলে কার্ব মার্কেটেও ডলারের দাম বেড়ে যায়। গতকাল কার্ব মার্কেটে ৭৪ টাকারও বেশি দামে ডলার কেনাবেচা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশিস্নষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থ বছরের (২০১০-১১) জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। একইসাথে এ পর্যন্ত ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মতো ওভার ড্রাফট (ওডি) হিসেবে সরবরাহ করা হয়েছে।

হঠাৎ করে ডলারের দাম বাড়া প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, আমদানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ব্যাংকগুলো চাহিদামত ডলার পাচ্ছে না। ফলে, ব্যাংকেই ডলারের দাম ঊধর্্বমুখী হয়। এছাড়া বাজারে সরবরাহের তুলনায় ডলারের চাহিদা বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে অনেক সময় থার্ড কারেন্সি (ডলারের পরিবর্তে ইউরো বা পাউন্ডকে থার্ড কারেন্সি বলে) কিনতে হয়। এ কারণে ডলারের দাম বেড়ে যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্লিপ্ততায় ব্যাংকিং খাতের সংশিস্নষ্টরা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, শুরুতে কলমানি বাজারের উলস্নম্ফন নিয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্লিপ্ত ছিল। যে কারণে কলমানি বাজারে সর্বোচ্চ রেকর্ড সুদে লেনদেনের উদাহরণ সৃষ্টি হয়। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আমদানি বিল ও বিভিন্ন এয়ারলাইন্স বিল পাঠানোর কারণে ডলার বাইরে চলে যাওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে মুদ্রার ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট বা ভাসমান বিনিময় হার বা বাজার ভিত্তিক বিনিময় হার চালু করা হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে এটি করা হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপ করতো।

প্রতিদিন টেলিফোন যোগাযোগের মাধ্যমে মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতো। গতকাল বাজারে ডলারের দাম বেড়ে গেলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। যদিও ভাসমান বিনিময় হারে বাজারে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক রফতানিকারক ও রেমিটেন্স গ্রাহকদের সুবিধার্থে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কার্যকর বিনিময় হারের তুলনায় বেশি রেখে আসছে। সূত্র জানায়, কার্যকর বিনিময় হার ধরলে ডলারের দাম ৪/৫ টাকা কমে আসবে।

কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্লিপ্ততার কারণে ডলারের বাড়তি দাম অব্যাহত থাকলে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়ে যাবে। তাতে দ্রব্যমূল্যের ঊধর্্বগতি রোধ করা যাবে না। মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। সূত্র মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাহিদামত ডলার বাজারে না ছাড়লে বাড়তি দামে ব্যাংকগুলো অপরাপর ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনবে। তাতে আমদানি ব্যয় বাড়বে।

আমদানিকৃত পণ্য দেশীয় বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। যা ভোক্তা পর্যায়েও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সে ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতিও কার্যকারিতা হারাবে উৎস: ইওেফাক

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.