মহাজাগতিক সংস্কৃতির পথে .. ..
একুশের প্রথম কবিতা ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি” রিখেছেন মাহবুব আলম চৌধুরী। তিনি তখন চট্টগ্রাম সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক। ২১ ফেব্রুয়ারি’র বিকেলে ঢাকায় ছাত্রদের মিছিলে গুলিবর্ষণের খবরে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে সেই রাতেই এই কবিতাটি লিখে তার ক্রোধ প্রকাশ করলেন। কিন্তু পরদিনই কবিতাটি মুসলিম লীগ সরকার বাজেয়াপ্ত করে। তারপর দীর্ঘদিন এই কবিতার কোন কপি পাওয়া যায় নি। প্রথমে কবির স্মৃতি থেকে উদ্ধার করে যে কয়টি পঙতি পাঠ করা হতো সেটুকুই উল্লেখ করা হলো।
কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি
এখানে যারা প্রাণ দিয়েছে
রমনার ঊর্দ্ধমূখী কৃষ্ণচূড়ার তলায়
যেখানে আগুনের ফুলকির মতো
এখানে ওখানে জ্বলছে অসংখ্য রক্তের ছাপ
সেখানে আমি কাঁদতে আসিনি।
আজ আমি শোকে বিহ্বল নই
আজ আমি ক্রোধে উন্মত্ত নই
আজ আমি প্রতিজ্ঞায় অবিচল।
যে শিশু আর কোনদিন তার
পিতার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ার
সুযোগ পাবে না
যে গৃহবধু আর কোনদিন তার
স্বামীর প্রতীক্ষায় আঁচলে প্রদীপ
ঢেকে দুয়ারে আর দাঁড়িয়ে থাকবে না
যে জননী খোকা এসেছে বলে
উদ্দাম আনন্দে সন্তানকে আর
বুকে জড়িয়ে ধরতে পারবে না
যে তরুণ মাটির কোলে লুটিয়ে
পড়ার আগে বার বার একটি
প্রিয়তমার ছবি চোখে আনতে
চেষ্টা করেছিল
সে অসংখ্য ভাইবোনদের নামে
আমার হাজার বছরের ঐতিহ্য লালিত
যে ভাষায় আমি মাকে সম্বোধনে অভ্যস্ত
সেই ভাষা ও স্বদেশের নামে
এখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে
আমি তাদের ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি
যারা আমার অসংখ্য ভাইবোনকে
নির্বিচারে হত্যা করেছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।