আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আ্যরেন্জড বিয়ে, উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে , চাকুরীজীবী মেয়ে এবং মধ্যবিত্তের সীমাহীন দূর্ভোগ!!!



ইদানীং আমার এক দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই যে কিনা পেশায় একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার তার একটা কথা প্রায়ই মনে পড়ে। কোন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে সাধারন আলাপ চারিতার এক পর্যায়ে সে বলেছিলো....... যখন একটা মেয়ে এস,এস,সি পাশ করে তখন সে স্বপ্ন দেখে এক রাজপুত্তুরের সংগে তার বিয়ে হবে, এইচ,এস,সি পাশ করার পর সে স্বামী হিসেবে স্বপ্ন দেখে নামকরা ডাক্তার/ইন্জিনিয়ার/বিসিএস ক্যাডার ; অনার্স শেষ করার পর সে ভাবে মোটামুটি চলনসই একজন চাকুরীজীবী/ব্যবসায়ী; মাস্টার্স শেষ করার পর মনে করে দুটো খেয়ে পড়ে চলতে পারবো এমন একটা বর পেলেই হয়; তারও পর মানে মাস্টার্স পাশের ২/৩ বছর পর তার কেবলি মনে হয় কোন একটা জায়গায় বিয়েটা হলেই হয়................. সেদিন আমার খুব রাগ হয়েছিলো তার উপর, বয়সে আমার চেয়ে ৫/৬ বছরের বড় বলে তেমন কিছু বলতে পারিনি, কিন্তু মনে মনে তাকে একটা নীচু ইতর শ্রেণীর মানুষ ভেবেছিলাম । কিন্তু আসলে বাস্তবতা কি? আমি যদি আমার সমসাময়িক বয়সের বন্ধুদের দিকে তাকাই তাহলে কি দেখি? ভার্সিটি লাইফ শেষ করে আমার প্রায় সব বন্ধুই চাকুরী জুটিয়ে নিয়েছে সরকারী/বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, কেউ কেউ পি,এইচ,ডি করছে বাইরের বিভিন্ন দেশে , অনেকে দেশে ব্যবসা প্রতিস্ঠান ও খুলেছে , অধিকাংশই বিয়ে করেছে, কিন্তু কেমন বয়সের মেয়েকে বিয়ে করেছে???? বেশীরভাগ বন্ধুই এভারেজ হিসেবে ২০-২২ বছরের বয়সী মেয়েকে বিয়ে করেছে অর্থাৎ মেয়েদের এভারেজ শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ,এস,সি পাশ করে অনার্স ফার্স্ট /সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে এমন। দু /এক জন ব্যতিক্রম নেই তেমন নয়, যেমন দুজন ক্লাসমেট কে প্রেমের পরিনতি হিসেবে বিয়ে করেছে। তারা কিন্তু কেউ মাস্টার্স কমপ্লিট বা তার চেয়েও বেশী বয়সী মেয়ে বিয়ে করেনি, কিন্ত কেন? তাদের যুক্তি হলো যেহেতু তারা স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে প্রতিস্ঠিত , অতএব তারা কেন ভাল মেয়ে রেখে বেশী বয়সী মেয়ে বিয়ে করবে ভূক্তভোগী মাত্রই জানেন ফ্যামিলিতে উচ্চ শিক্ষিত একটা মেয়ে থাকলে তার বিয়ে নিয়ে কেমন ঝামেলা পোহাতে হয়। দেখা যায় আমার/আপনার যে বোনটা এইচ/এস/সি বা অনার্সে পড়া অবস্থায় যে সব পাত্রের অফার আসতো এবং আমরা সেগুলো ফিরিয়ে দিয়েছি বোনটার বয়েস কম বলে এবং পড়াশোনাটা শেষ করবে বলে অ্থচ পড়াশোনা ভালোভাবে শেষ করার পর তখনকার চেয়ে কয়েকধাপ নীচের পাত্রের মা-বাবা বা আত্মীয় স্বজনরা সব কিছু পছন্দ করার পরও শুধুমাত্র মেয়ের বয়স বেশী বলে অপছন্দ করছে এক অদ্ভুত গোলক ধাঁধা, মেয়েটার যোগ্যতাটাই কিভাবে যেন অযোগ্যতায় পরিনত হয়ে যাচ্ছে, মা-বাবা-পরিবার পরিজন সবাই সাপোর্ট দিয়ে যে মেয়েটাকে উচ্ছশিক্ষিত করে তুললাম, সময়ের ব্যবধানে তার স্বপ্ন গুলো মলিন হয়ে যাচ্ছে, তার চেয়ে ইন্টারমিডিয়েট পাশের যোগ্যতা নিয়েইতো সে ভাল বর পেতো , অথচ............. অনেকে বলবেন চাকুরী নিলেই পারে, অবশ্যই পারে কিন্তু নিজের চারপাশ দেখে এটা বুঝে গেছি, সেটাও তাকে আরেক ধাপ নিচেই নামিয়ে দিবে, আমরা সবাই মেয়েদেরকে শিক্ষিত, যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চাই কিন্তু যে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অন্ধকার , সেখানে অলো ছড়ানোটাই যেনো জন্ম জন্মান্তরের পাপ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।