আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জন রাইটের শেষ তরঙ্গ

চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি।

০০ প্রাঞ্জল সেলিম ০০ আজকের ইত্ত্ফোকের লিংক: Click This Link জন তার এ আলোকচিত্রের কাজ শুরু করে বেশিদিন হয়নি। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৪ বছর, আলোকচিত্রের প্রতি তার ভালোবাসা জাগে। সেসময় তার কাছে ছিল ক্যানন ইওএসডি ৮০ ক্যামেরা, সেটি দিয়ে তিনি নিজের মাত্র ৩টা ছবি তুলেছিলেন। 'আমার ছবিগুলো নেওয়া হয় প্রকৃতি এবং সাগর থেকে।

বলা চলে, এগুলোই আমার ছবির অনুপ্রেরণার মূল উৎস'_এভাবেই তিনি ব্যাখ্যা করেছেন তার কাজের ধরনের। তিনি আরো বলেন, 'আমার পিঠের তিন জায়গার হাড় ভাঙা। সার্ফিং করতে গিয়ে একটা মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমার এমন অবস্থা হয়। কিন্তু এর পরও আমি আমার ভালোবাসা, আমার প্যাশনকে দূরে সরিয়ে দিইনি। আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি পানির প্রতি আমার আকর্ষণ, ফটোগ্রাফিতে কাজে লাগাতে।

আমি অনেক ধৈর্য নিয়ে ছুটেছি পারফেক্ট ছবি তোলার জন্য। এবং আমার সৌভাগ্য বলব যে, আমি তা পেরেছিও। সেই সাথে আমি আশা রাখি যে, আমার কাজ সবাইকে অনুপ্রেরণা জোগাবে সৃজনশীল কিছু করে দেখানোর জন্য। এবং জীবনকে আমরা যেভাবে দেখি সেটাকে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করতে পারবে। ' গত বছর এই প্রতিযোগিতার বিচারকের দায়িত্বে যারা ছিলেন, 'ল্যান্ডস্কেপ ফটোগ্রাফার কলিন প্রিওর, ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার স্টিভ বস্ন-ম, ফক্স টালবট মিউজিয়ামের জাদুকর রজার সি ওয়াটসন, গ্রুপ পিকচার এডিটর মার্টিন কেনি, প্রেসিডেন্ট অব রয়েল ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, রোজমেরি উইলিয়াম এবং ডিজিটাল ক্যামেরা ও ফটোরেডারের স্টাফরা।

' ছবি নিয়ে অনেক গবেষণার পর অবশেষে নির্বাচন করা হলো সেরা ছবিটি। এই ছবি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে গ্রুপ পিকচার এডিটর মার্টিন কেনি বলেন, 'ছবিটা আমি যতবারই দেখেছি, আমার কাছে ততবারই এক্সাইটিং মনে হয়েছে। ভালো ফটোগ্রাফি মানেই মানুষের কাছে বাস্তব জিনিসের সেই রসটি ফুটিয়ে তোলা, যা সাধারণ চোখ দেখতে অক্ষম, অর্থাৎ, আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায় এমন। আর এর জন্য প্রয়োজন অ্যাকশন, এনার্জি, সুন্দর কম্পোজিশন এবং সব থেকে বেশি যা প্রয়োজন তা হলো, বৈশিষ্ট্যমূলক ধর্ম। ' বিচারকার্যে নির্বাচন করা হয়েছে জন রাইটের আলোকচিত্র।

তার জেতা ছবিটি তাকে বিজয়মাল্যের সাথে এনে দিয়েছে ১০ হাজার ইউরো। সেই সাথে এক বছরের বিনামূল্য মেম্বারশিপ কার্ড, আরপিএস-এর এবং একটি ডিজিটাল ক্যামেরা ম্যাগাজিনের সাথে চুক্তি। নিঃসন্দেহে পুরস্কারগুলো টাকার মূল্য দিয়ে তুলনা করা সম্ভব নয়। তার উপর প্রথম হওয়ার স্বীকৃতি তো আছেই। জনের ছবি নিয়ে কিছু তথ্য জন রাইটের এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়া ব্যাপক সাড়া জাগায় চারিদিকে।

বেশ কয়েকবার তার সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়। ইন্টারনেটে এ সম্পর্কিত ওয়েবসাইটও রয়েছে। যেমন_কিছু জায়গায় তার কাজ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি খুব দক্ষতার সাথে সেগুলোর উত্তর দেন। তার ছবি তোলা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি মজা করে বলেছেন, 'পানির তলের ছবি তুলতে গিয়ে আমি প্রথমে সেখানে একটা ঘর বানিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর আমার ক্যামেরাতে 'আমি যা চাই, সেটাই তুলব' মুড সিলেক্ট করে নিয়েছিলাম।

ব্যস ছবি হয়ে গেল। ' তার বিজয়মাল্য পাওয়া ছবিটি নিয়ে তিনি বলেন, 'এমন ছবি তোলার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত আলো এবং পরিষ্কার পানি, সূর্যের অবস্থান হতে হবে পেছনে, আকাশ হতে হবে নির্মেঘ আকাশি নীল। আমি আমার ক্যামেরা ম্যানুয়াল মুডে রেখে ছবি তুলি সবসময়। সব থেকে কঠিন ছিল, সবকিছু সামলে ফোকাসটা ঠিক রাখা। এ ক্ষেত্রে অবশ্য আমি অটোফোকাস ব্যবহার করেছিলাম।

তবে, অন্যসব সার্ফ ফটোগ্রাফারেরা ম্যানুয়াল ফোকাস ব্যবহার করে থাকে। আর আমি ম্যানুয়াল ফোকাস বাদ দিয়ে অটোফোকাসে কাজটা করেছিলাম, কারণ, ব্যাপারটা পয়েন্ট অ্যান্ড শুট ছিল না, আমাকে সঠিক শট পাওয়ার জন্য প্রকৃতি যথেষ্ট সময় দিত না। ' এডিটিং এডিটিংয়ের জন্য তিনি ব্যবহার করেন অ্যাডব লাইটরুম সফটওয়্যারটি। সেই সাথে কিছু বেসিক ধারণা। আর তাতেই ছবিতে ফুটিয়ে তোলা যায় বিস্ময়কর রঙের খেলা।

ছবি তোলার আগে আমার সংগ্রহে আমার নিজের তোলা এমন অসংখ্য ছবি আছে, যেগুলো আমার নিজের কাছেই ভালো লাগে না। কিন্তু তার পরও আমি হতাশ হইনি। প্রত্যেকবার ছবি তোলার আগে আমি অনেক ধৈর্য নিয়ে কাজ করি। প্রতিটা ছবির পেছনে অন্তত ২০ সেকেন্ডের মতো সময় দিই। পছন্দের বিষয় ছবি তোলার ক্ষেত্রে তিনি প্রাধান্য দেন পানির তলের জগত।

এবং প্রধানত পানিকে ফোকাস করেন। কিন্তু তিনি মুড ও পোট্রর্েট নিয়েও কাজ করেছেন। তবে, তিনি মনে করেন যে, তিনি অন্যসব থেকে সার্ফ ফটোগ্রাফিতে ভালো। কারণ, এটা তিনি ভালোবাসেন। সেই সাথে পোট্রর্েট ফটোগ্রাফারদের জন্য টিপসও দিয়েছেন।

যত বেশি ছবি তোলা হবে, তত বেশি হাত খুলবে। তিনি যে পুরস্কৃত হবেন, এমনটা কখনই আশা করেননি। তিনি পরবর্তী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। আবারো তিনি অংশ নেবেন, নিজেকে আরো যোগ্য করে তুলতে চান। তবে, আরো একটু ভিন্ন ভঙ্গিতে।

তিনি তার পুরস্কারের টাকা নিয়ে কী করবেন, তা এখনও ভাবেননি। তবে, ফটোগ্রাফির বাইরে তিনি কিছু চিন্তা করতে পারেন না, তাই তিনি একটা নতুন ক্যামেরা কেনার কথা ভাবতে পারেন। আর সেটা অবশ্যই ক্যানন ৭ডি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।