আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবি রাজের কবিরাজি : একজন সচেতন মানুষ হিসেবে একজন গর্ভবতী মার স্বাস্থ্য সম্পর্কে আপনার যেটুকু না জানলেই নয়।


মাতৃত্ব একজন নারীর জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম অর্জন। পরিবারে একজন সুস্থ-সবল শিশুর আগমন যেমন পরিপূর্ণতা আনে,তেমনি পিতামাতার জীবনে এনে দেয় নতুন মাত্রা। এই পোষ্টটি তাদের জন্য যারা জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অর্জনে গর্বান্বিত হতে যাচ্ছেন। একজন সুস্থ মা-ই কেবল পারেন একটি সুস্থ ফুটফুটে নবজাতক উপহার দিতে। গর্ভাবস্থা একটি ফিজিওলজিক্যাল প্রক্রিয়া অর্থাৎ চিকিৎসাশাস্ত্রে এটিকে কোন রোগ বা বিমারী হিসেবে ধরা হয়নি।

বরং এটিকে স্বাভাবিক একটি দৈহিক প্রক্রিয়া হিসেবেই ধরা হয়েছে। যখন এর সাথে অন্যকোন প্যাথলজি যোগ হয়,তখন তা মা ও তার শিশুর জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মায়ের গর্ভাবস্থা স্বাভাবিকভাবে চলছে নাকি এটা বুঝার জন্য কয়েকটি বিপদজনক চিহ্নের কথা মনে রাখতে হবে। ১। প্রচন্ড মাথাব্যথা এবং চোখে ঝাপসা দেখা ২।

খিঁচুনি ৩। অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হওয়া ৪। তীব্র জ্বর ৫। বিলম্বিত প্রসব এই লক্ষণগুলোর যেকোন একটিও যদি দেখা দেয়,অবিলম্বে মাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। মাতৃমৃত্যু প্রতিরোধের লক্ষ্যে গর্ভকালীন সময়ে মাকে কমপক্ষে চারবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চেকআপে আসতে হবে।

প্রথম ভিজিট - ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ভিজিট - ২৪ সপ্তাহে তৃতীয় ভিজিট - ৩২ সপ্তাহে এবং চতুর্থ ভিজিট - ৩৬ সপ্তাহে। কয়েকটি ইনভেস্টিগেশন করিয়ে রাখা উচিত। ১। blood for hemoglobin percentage (Hb%) ২। blood sugar ৩।

blood grouping and Rh typing ৪। urine R/M/E মায়ের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপুর্ণ পরামর্শ- ১। মাকে প্রতিদিন নিয়মিত খাবারের পাশাপাশি অতিরিক্ত কিছু খাবার খেতে হবে। আগে যদি তিনবেলা খেয়ে থাকেন,এখন একবেলা বেশি খাবেন কিংবা প্রতিবেলায় দুইমুঠো খাবার বেশি করে খাবেন। ২।

প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণ বিশ্রামগ্রহণ করবেন। রাতে কমপক্ষে আট ঘন্টা ঘুমাবেন এবং দিনের বেলা দুই ঘন্টা বাম কাতে শুয়ে থাকবেন। কোন ধরণের ভারীকাজ করবেন না। ৩। পূর্বোল্লখিত বিপদজনক চিহ্ন সম্পর্কে সাবধান থাকবেন।

৪। বাচ্চা কোথায় ডেলিভারি করাবেন,সিদ্ধান্ত নিবেন। যদি সুযোগ থাকে তবে হাসপাতালে ডেলিভারি করানোই ভাল। ৫। বাড়িতে বাচ্চা ডেলিভারি করালে যদি কোন সমস্যা হয়,তাহলে আপনি নিকটবর্তী কোন হাসপাতালে যাবেন নির্ধারিত করে রাখবেন এবং যানবাহনের ব্যবস্থা করে রাখবেন যাতে বিপদের সময় সাহায্যে আসতে পারে।

৬। রক্তের গ্রুপ জেনে রাখবেন এবং বিপদের সময় রক্ত প্রদান করতে পারেন এমন দুজন রক্তদাতার ব্যবস্থা করে রাখবেন। ৭। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোন ঔষধ সেবন করবেন না। ৮।

ডাক্তারের সাথে পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ করবেন। মায়ের সুস্থতাই শিশুর সুস্থতা। মায়ের পুষ্টিতেই শিশুর পুষ্টি। আমাদের দেশের প্রতিটি গর্ভবতী নারী যেন এমন শিশুর জন্ম দেয় যারা ভবিষ্যতের জন্য একজন সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম নাগরিক তথা দেশের সেরা সম্পদরূপে গড়ে উঠতে পারবে। আর এটাই হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা ও প্রত্যয়।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।