আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টোনা-টুনিঃ ২০১১

আমি জানিনা কোন সুখের গল্প, কোন ভালোবাসার গল্প!

বাতাসে শীত-শীত ভাব। এমনই একদিনে টোনা বললো, “টুনি পিঠা কর!” টুনি তখন মাত্র দুপুরের রান্না বান্না, কাজ টাজ সেরে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে, একটু আয়েশ করে ভাতঘুম দেয়ার জন্য। টুনি বললো, “টোনা সোনা আমার, আজকে একটু কষ্ট করে পাড়ার দোকান থেকে পিঠা কিনে খেয়ে ফেলো, আমি কালকে পিঠা করে দিব!” পরদিন সকাল সকাল টোনা আবার বললো, “টুনি পিঠা কর!” টুনি আজ আর কোন বাহানা পায় না। সে পিঠা বানাতে গিয়ে দেখে সব কিছু আছে শুধু চালের গূঁড়া নাই। টোনাকে দুই কেজি চাল দিয়ে বাজারে পাঠায় গুঁড়া করে আনতে।

বাজারে যাওয়ার পথে টোনার সাথে দেখা হয় বান্দর সাহেবের। বান্দর সাহেব এই বছরই সরকারী চাকুরী থেকে রিটায়ার্ড করেছেন। তার এখন অবসরই অবসর! টোনাকে দেখেই সে খুশী হয়ে গেলো। “তা টোনা ভাই, বাজার তো আর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে না... এক কাপ চা খেয়ে যাও” টোনাও ভাবলো, আসলেই তো! এক কাপ চা খেতে আর কতোক্ষন? কিন্তু চা খেতে গিয়ে রাজনীতির আলাপ শুরু হয়ে যাওয়ায় সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে যায়, টোনার আর খেয়াল থাকে না... এরপর যে তাড়াহুড়া করে চাল গুঁড়া করতে যায়... কিন্তু হায়! জ্যামে আটকে বাসায় ফিরতে ফিরতে বিকাল! তবুও সে কিছুটা মিন মিন করে টুনিকে বলে, “টুনি পিঠা কর!” টুনি বলে, “টোনা সোনা, একটু পরেই যে জিটিভিতে আমার প্রিয় সিরিয়াল শুরু হয়ে যাবে!” টোনা আর কি বলবে? দ্বীর্ঘশাস ফেলে ল্যাপটপ খুলে বসে। ব্লগিং করতে।

টুনি যখন সিরিয়াল দেখতে ব্যস্ত, সেই ফাঁকে মুনিয়া পাখিকে অনলাইনে পেয়ে টোনা একটু হাল্কা টাংকিবাজীও করে... পরদিন সকালে আবার... “টুনি পিঠা কর!” টুনির নিজেরও পিঠা খেতে ইচ্ছা করছিলো, সে পিঠা বানাতে বসে। এরমধ্যে টোনা ফেইসবুকে মুনিয়া পাখির মেসেজ পায়। “Tona bhai, bashay pitha korechi. Eshe kheye jaan.” টোনা ভাবে, টুনির পিঠাতো আর পালিয়ে যাচ্ছে না, এক দৌড়ে মুনিয়া পাখির বাসা থেকে একটু ঘুরে আসা যায়... সে টুনিকে বলে, পিঠা বানিয়ে রাখতে, তার হঠাৎ একটা জরুরী কাজ পড়ে গেছে! মুনিয়া পাখির হাতের পিঠার টেস্টই অন্যরকম! তাছাড়া, মুনিয়া পাখির হাজবেন্ড হালুম সাহেবও বাসায় ছিলো না। সে নাকি কোন জরুরী কাজে হঠাৎ বাইরে গেছে... ভরপুর পেট আর মন নিয়ে টোনা বাসায় ফিরে। টুনি তখন সারাদিনের কাজ শেষ করে ক্লান্ত! টোনাকে বলে, “টোনা সোনা, একটু বডি ম্যাসাজ দিয়ে দাও না!” টোনা ফুরফুরে মেজাজে বডি ম্যাসাজ দিতে থাকে।

টুনিকে জিজ্ঞাসা করে, “টুনি, পিঠা করেছো?” ঘুম ঘুম গলায় টুনি জানায়, “হুম টোনা সোনা, টেবিলের উপর তোমার জন্য দুই পিস পিঠা ঢাকনা দিয়ে রেখেছি। খেয়ে নিও!” টোনা অবাক হয়ে জানতে চায়, “মাত্র দুই পিস পিঠা বানিয়েছো টুনিমনি?” ঘুমিয়ে পড়তে পড়তে টুনি জানায়, “নাআআআ, অনেকগুলো বানিয়েছিলাম, কিন্তু হালুম ভাই এসেছিলো, উনাকে খেতে দিয়েছিলাম...” হতভম্ব টোনা কিছু না বলে চুপচাপ উঠে চলে যায় টেবিলের কাছে। টুনির বানানো পিঠা খেতে খেতে ভাবে, “টুনির চেয়ে মজা করে এই পৃথিবীর কেও পিঠা বানাতে পারে না!!!”

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।