আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাই ভগবান এরা কি সুবিচার করবে। ঠাকুর,ঠাকুর,তওবা, আস্থাগফেরুল্লা,নাউজুবিল্লাহ।



অনৈতিক কাজ, তরুণ সহকারি জজের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত অনৈতিক কাজ করার অভিযোগে এক তরুণ সহকারি জজের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর এক সহকর্মীর বাসা লক্ষ্য করে গোপন ভিডিও ক্যামেরা বসিয়েছেন। তিনি এবং তাঁর সহকর্মী পাশাপাশি বাসায় থাকতেন। অভিযুক্ত সহকারি জজ জ্যেষ্ঠ বিচারকদের কাছে স্বীকার করে বলেছিলেন, সিনেমা দেখে উৎসাহিত হয়ে তিনি এ কাজ করেছেন। কিন্তু পরে তিনি সুর পাল্টিয়ে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি ও রটনার আশ্রয় নেন।

প্রাথমিক তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় তাঁকে বদলির প্রস্তাব করে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে দক্ষিণাঞ্চলের এক জেলায় বদলি করেন। ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি উপকূলবর্তী জেলায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিলম্বে হলেও সুপ্রিম কোর্ট অভিযোগটি আমলে নিয়েছেন। এই প্রতিবেদক গত অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছিলেন।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের তিনজন জ্যেষ্ঠ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত জিএ (জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) কমিটি অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা দেখে থাকেন। গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির বাসভবনে জিএ কমিটি বৈঠকে বসে। সেখানেই ওই হাকিমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। তবে তদন্ত চলাকালে বরখাস্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন ফুল কোর্ট। মন্তব্য চাওয়া হলে অভিযুক্ত হাকিম ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ, ষড়যন্ত্রের শিকার।

কোনো অসৎ উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। ওই ভিডিও ক্যামেরাটি তাঁর আয়ারল্যান্ড-প্রবাসী ভাই উপহার দিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, অভিযোগকারী দম্পতির গোপনীয় কোনো মুহূর্ত তিনি ক্যামেরায় ধারণ করেননি। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট বিষয়টি প্রকাশ পায়। সংশ্লিষ্ট জেলা আদালত প্রশাসন এক মাস পর এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টকে চিঠি লেখার পরও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তেমন দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম অবশ্য গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ওই অভিযুক্ত হাকিমের আমলি ক্ষমতা তদন্ত সাপেক্ষে খর্ব করেন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বলা হয়, তিনি ‘নীতিবিবর্জিত ও বিকৃত রুচির’ পরিচয় দিয়েছেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি লঙ্ঘনসহ ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনের দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। জানা যায়, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী দুজনই তরুণ হাকিম। অভিযুক্ত হাকিম অভিযোগকারীর চেয়ে তিন বছরের জ্যেষ্ঠ।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উভয়ের মধ্যে জানাশোনা ছিল। তাঁরা দুজনই সহকারী জজ। একপর্যায়ে একই জায়গায় নিয়োগ পান। এরপর একটি সরকারি টিনশেড বাড়িতে দুই বন্ধুর সংসার শুরু হয়। বাড়িটিতে চারটি কক্ষ।

দুটি কক্ষ নিয়ে একটি পরিবারের বসবাস, মাঝে একটি দরজা ছিল। অভিযোগে বলা হয়, ২০১০ সালের ১৬ আগস্টের ঘটনা। অভিযোগকারী হাকিমের স্ত্রী ঘর ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখেন, মৃদু আলো জ্বলছে আর নিভছে। তিনি কিছুটা ভয় পান।

পরে উৎসুক হয়ে দরজার কাছে যান। আলোর উৎস খোঁজেন। একপর্যায়ে একটি ভিডিও ক্যামেরা তাঁর ঘরের দিকে তাক করা দেখতে পান। ভদ্রমহিলা কলেজছাত্রী। অভিযুক্ত হাকিমের বাসাটি খালি ছিল।

কারণ তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী বোনের বাসায় ছিলেন। অভিযোগকারী হাকিম তাঁর অভিযোগে বলেন, তাঁর স্ত্রী বাসায় একা থাকেন। কোনো গৃহপরিচারিকা নেই। একা থাকার কারণে তিনি সংগত কারণেই স্বাধীনভাবে ঘরের মধ্যে চলাফেরা করেন। এই সুযোগে তাঁর সহকর্মী হাকিম অসৎ ও অনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁর বাথরুম-সংলগ্ন ড্রেসিং রুমের দিকে তাক করে ক্যামেরাটি বসান এবং সারা দিন ধরে ছবি ধারণ করা হয়।

তাঁর স্ত্রী ভিডিও রেকর্ডিংয়ের কথা শুনে আতঙ্কগ্রস্ত হন এবং তাৎক্ষণিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগ পেয়ে গত বছরের ১৮ আগস্ট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের একজন জ্যেষ্ঠ নারী জজের নেতৃত্বে আট বিচারকের একটি দল অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে তাঁরা জেলা জজের খাসকামরায় বৈঠকে বসেন। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অভিযুক্ত উল্লেখ করেন, ‘অ্যাডভেঞ্চার মুভি দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে এরূপ হীন ও নীতিবহির্ভূত অপরাধ করেছেন। ’ মুখ্য বিচারিক হাকিম ২২ আগস্ট, ২০১০ অভিযুক্ত হাকিমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনেন।

দুই পৃষ্ঠার আদেশে তিনি উল্লেখ করেন, গোপন তথ্য রেকর্ড করার জন্য ক্যামেরাটি পেতে রাখা হয় এবং সেটি পরীক্ষা করে ১৬ আগস্ট সকাল আটটা ২৪ মিনিট থেকে বিচারিক হাকিমের স্ত্রীর শয়নরত অবস্থায় কিছু দৃশ্য রেকর্ডকৃত দেখা যায়। অভিযুক্তের এ কাজ নীতিবিবর্জিত, বিকৃত রুচির ও হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থমূলক। তিনি চাকরিবিধি লঙ্ঘন ও ফৌজদারি অপরাধ করেছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।