আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটা ছবি-ই বদলে দিতে পারে জীবন! (স্বপ্ন নয় সত্যি!)

বলে যায় কত কথা,আমার নীরবতা । ।

আরব্য রজনীর এক হাজার এক রাত্রির গল্পগুলো কম বেশি সবার ছোটবেলার সাথেই জড়িত। আর আলাদীনের জাদুর প্রদীপের কথা শোনে নাই এমন মানুষও খুঁজে পাওয়া কঠিন। ছোটবেলার রূপকথাগুলো এমনভাবে মনে গেঁথে যায় যে প্রায়ই মনে হয়, “ইশ! আমার একটা জাদুর প্রদীপ থাকতো! আর সেই জাদুর প্রদীপের জ্বীনটাকে হুকুম করা মাত্র ইচ্ছেগুলো নিমিষেই পূরণ হয়ে যেতো!” আমার একটা প্রদীপ থাকলে আমি হয়তো জ্বীনের কাছে চাইতাম- হোয়াইট হাউসে গিয়ে বারাক ওবামার সাথে লাঞ্চ করতে, অথবা, বাকিংহাম প্যালেসে রাণী এলিজাবেথের সাথে ডিনার করতে, কিংবা, মূসা ইব্রাহীমের মতো এভারেস্টচূড়ায় আরোহণ করতে।

ইচ্ছেগুলো একটু অদ্ভুত শোনাতেই পারে কিন্তু আমার কাছে এগুলোই স্বাভাবিক কারণ আমাকে তো কখনো ভাবতে হয়নি পড়ালেখা করার কথা(বরং জোড় করেই পড়ায় বাবা-মা )। একবেলা ঠিকমতো না খেতেই পরবেলার খাবারের যোগান কি করে হবে তা নিয়েও মাথা ঘামাতে হয়নি কখনো(এমনকি, না খাওয়ার জন্যই বকা খেতে হয় বেশিরভাগ সময় )। মাথার উপরে ঢালাই করা ছাদ! তাই ঝড় বৃষ্টির সময় মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতেও হয়নি(তবে, বিলাস করে বৃষ্টিতে ভিজতে চাওয়ার জন্য ঝারি হজম করতে হয়েছে অনেক )। রাস্তার শত শত পথশিশুর মধ্যে একজন- আয়শা। বুয়েট ক্যাম্পাসে বেশ ফেমাস।

কারণ ওখানেই তাকে দেখা যায় বেশির ভাগ সময়। এতো মেধাবীদের মধ্যে থেকেই হয়তো পড়ালেখা করার ভীষণ ইচ্ছেটা জেগেছে ওর মনে। মাঝে মাঝে ভাবি, আয়শার জায়গায় দাঁড়িয়ে জাদুর প্রদীপের জ্বীনের কাছে কি চাইতাম আমি? – তথাকথিত সুশীল সমাজের ভদ্র ঘরের ছেলেমেয়েদের সাথে পড়ালেখা করার একটা সুযোগ, তাদের মতোই স্বাভাবিক একটা নিশ্চিন্ত জীবন। কিন্তু এ সুযোগ দেবে কে? কে আছে যে ওকে নিয়ে ভাববে? এ প্রশ্নের উত্তরটাও একটা প্রশ্ন- If not we, then who? একটা অনন্য সুযোগ দিচ্ছে- কমিউনিটি অ্যাকশন - একটা ভিন্নমাত্রার ফটো কনটেস্ট ও এক্সিবিশন আয়োজনের মাধ্যমে সমাজের আনাচে কানাচে লুকিয়ে থাকা এমন আয়শাদের কথা তুলে নিয়ে আসার, সে ছবিগুলোর মাধ্যমে আয়শাদের দুঃখগাঁথা তুলে ধরার। আর কমিউনিটি অ্যাকশন- ১।

সামর্থ্যানুযায়ী সেই ছবির মানুষদের দুঃখ লাঘবের সংকল্পে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে, ২। যতোগুলো সম্ভব ততোগুলো সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে সমস্যাগুলো এলাকাভিত্তিক ওয়ার্ড কমিশনার এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকগুলোর কাছে হস্তান্তর করবে, ৩। সাহিত্য বিশারদ প্রফেসর আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, সাংস্ৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা মনোয়ার,ফিল্ম মেকার আবু সায়ীদ, আন্তর্জাতিক ফটো সাংবাদিক পের লিলজাস এবং কল্প-এর ফাউন্ডার রশীদ জামান কর্তৃক বাছাইকৃত কিছু ছবি দৃক গ্যালারিতে প্রদর্শনীর মাধ্যমে কর্পোরেট জগতের সামনে তুলে ধরা হবে যেন তারা তাদের ইচ্ছেমতো ছবি সিলেক্ট করে সে সমস্যা দূর করতে সচেষ্ট হোন। ছবি তুলে না এমন মানুষ পাওয়া দুর্লভ। এটা কারও কাছে পেশা আর কারও নেশা।

পথ চলতে চলতে কতো ছবিই না তুলি আমরা! কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি একটা ছবি বদলে দিতে পারে একটা জীবন! আর শখ করে তোলা সেই ছবিটা প্রদর্শিতও হবে কখনো? সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের স্বপ্ন বিকিয়ে জীবন কেনার গল্প ছবির ভাষায় প্রকাশ করে তাদের জীবনের অপূরণকৃত ইচ্ছেগুলো পূরণে এগিয়ে এসে আমরাও বাস্তবে হতে পারি কল্পকথার আলাদীনের জাদুর প্রদীপের সেই জাদুকর জ্বীনটা! কী? পারি না?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।