আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বড়দিনের শপিং কড়চা

*~*জীবনে যত কম প্রত্যাশা থাকবে ... .. . তত বেশী ভালো থাকা যাবে*~*

আগের অনেক প্রিয় কাজগুলো আজকাল অপ্রিয় লাগলে ও শুধুমাত্র শপিং করাটা আজো অনেক প্রিয় কাজ মনে হয়। ডিসেম্বর মাসটা এলেই ফুরফুরা মুডে শপিং করে বেড়াই...কখনো নিজের,তবের বেশীরভাগ সময়ই আত্মীয়স্বজনদের সাথে যাই। অনান্যবার নিজের ইনকাম থাকে বলে কেউ বড়দিনে আমারে তেমন একটা টাকা-পয়সা দিতো না কিন্তু এইবার গরিবী হালে আছি বলে ম্যালা টাকা পাইছি। এইবারে শপিং করতে গিয়ে কিছু মজার কাহিনী ঘটেছে যা শেয়ার করলাম... *** মা-মেয়ে মিলে মার্কেটে গেলাম । আমার মা মার্কেটে গেলে এমন ভাব করে যেন সে মেলায় ঘুরতে এসেছে।

সব দোকানের সামনে কয়েক মিনিট করে ব্যয় করবে আবার দোকানদারদের সাথে ও খোশ গল্প করবে। কিছুক্ষন পরে এত ভীড়ে মা একটু পিছিয়ে পড়েছে...আমি মা-কে খুঁজি আর মা আমাকে ...মা নাকি অন্য কোন মেয়েকে তার মেয়ে ভেবে সেই মেয়ের পিছু পিছু ঘুরছে। ভুল ভাংগার পর সে তো এক জায়গায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে,এরপর আমিই তাকে খুঁজে বের করলাম। মা-কে যা কিছুই কিনে দেই না কেন সে সব সবসময় আমারটাই পছন্দ করে স্পেশালি জামা আর ব্যাগ। এইজন্য নয়া ট্রিকস খাটাই,আলাদা করে মা-র জন্য কিছু কিনি না।

নতুন কিছু কিনে মা-কে দেখিয়ে বলি এটা আমার জন্য কিনলাম ,কেমন হয়েছে। যথারীতি মা ভালো বলে...অথচ এনে যদি বলতাম মা এই ব্যাগটা তোমার জন্য কিনলাম তখন একটুও পছন্দ করত না ** এইবার শপিং করেছি বেশী আমার বান্ধবী তুলির সাথে। ও এত মজার আর অদ্ভূত কান্ড করে যা দেখে হাসতে হাসতে শেষ হই। নির্ধারিত মার্কেটের সামনে তুলির জন্য অপেক্ষা করছি। দেখি সে খুব এক্সাইটেড হয়ে আসছে আর কাছে এসে বলে --জানো কি কাহিনী হইছে? -কি? --আমি (তুলি)আসছি আর দেখি রাস্তার অপজিট থেকে এক ব্যাটা আসতাছে।

তারপর কি হইছে জানো? -কি? ঐ ব্যাটা বাজে কথা বলছে নিশ্চয়? --আরে না -তো? পাশ দিয়ে যাবার সামনে গায়ে ধাক্কা দিছে --হ্যা...ধাক্কা তো দিছেই। তবে ঐ ব্যাটা আমারে না ...আমিই ঐ ব্যাটারে ধাক্কা দিছি। আর ধাক্কা খেয়ে ব্যাটা মাটিতে পরে গিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো আমরা দুইজনে যে এমনই হাতি সাইজের মানুষ রাস্তায় মানুষরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবার ক্ষমতা রাখি সেটা মনে করে আরেকচোট হাসলাম * মামতো ভাইয়ের জন্য জিন্সের প্যান্ট কিনতে গেলাম। প্রতিবারই তার প্যান্ট নিয়ে ঝামেলা হয়। এইবার ছোটমামী আর আমি ভাইরে দোকানে নিয়ে নতুন প্যান্ট পরিয়ে ভালো করে ট্রায়াল দিয়ে নিয়ে আসলাম।

প্যান্ট ট্রায়ালের সময় ছোট ভাইটা আমার খুব কাঁনতে ছিলো কারণ দোকানের এত প্যান্টের ভিতর থেকে সে তার সাধের পুরানো প্যান্ট টা খুজে পাচ্ছিল না। কান্না করে আর বলে আমার প্যান্ট কই গেছে। আবার মার্কেটে মেয়েদের এত সুন্দর সুন্দর জামা কাপড় কিন্তু ছেলেদের কাপড়ই নাই। সেই ছোট ভাইয়ের জন্য নরমাল কাপড়ের প্যান্ট কিনতে গিয়ে মেয়েদের কিছু প্যান্ট ভালো লাগলো। সাধারণত মেয়েদের প্যান্টের পা একটু চাপা হয় হয়।

যেগুলো একটু কম চাপা আর কম কাজ করা ছিলো তেমন কিনে দিছি। ছোটভাই এসব দেখে বলে কেন যে ছেলেটারে মেয়ে বানানোর পায়তারা করছো ** অরগান্ডি কাপড়ের জামা বানানোর জন্য যে কাপড় পছন্দ করলাম তুলি সেটা বাতিল করে দিলো। তুলির মতে এত পাতলা যে গায়ের চামড়া দেখা যাবে। দোকানদার কথার মাঝে ফুরকি কেটে বলে কি যে বলেন আপা .. কই আর পাতলা গায়ের চামড়া তো দূরের কথা কোন স্কীন-ই দেখা যাবে না। আমরা ঠিক করলাম দোকানে গিয়ে এখন থেকে স্কীন বলবো কারণ দোকানদাররা চামড়া বুঝেনা স্কীন ঠিকই বুঝে এরপর লিপলাইনার কিনতে গেলাম পরে সেখানে লিপলাইনার চয়েস করার সময় নতুন একটা কালারে নাম পাইলাম... নাম হলো সেক্সি মভ( sexy mauve).........নাম শুনেই কেনার চেয়ে দোকান থেকে বের হয়ে উল্টা হাটা শুরু করলাম *** ছোটমামী এক নেইলপালিশ কিনতে গিয়ে দোকান থেকে দশটা নামিয়ে আমার হাতের উপর দিয়ে ট্রায়াল দিতে লাগলো।

কয়েকটাদিন দুইহাতে নানারঙ্গের নেইলপালিশ লাগিয়ে বাইরে গেলে হাত লুকিয়ে রাখতাম ছোটমামী আড়ং থেকে মাথায় দেবার জন্য মেহেদী আনতে গিয়ে উপটান,স্ক্রাবস ,নিমের মোটকথা যা পারছে সেরকম কয়েকটা প্যাকেট নিয়ে আসলো। রাতের বেলায় মামাতো ভাই বলে তার মা নাকি ভূত হয়ে গেছে। গিয়ে দেখি সে মাথায় মেহেদী আর মুখে উপটান দিয়ে তো বসেই আছে সাথে এক্সট্রা রুপচর্চা হিসেবে ভ্রু-তেও মেহেদী দিছেকারণ তার মনে হয়েছে ভ্রু-তে মেহেদী দিলে নাকি তার ভ্রু চিকচিক করবে এইসব হাবিজাবি আরো কাহিনী করেই বড়দিনের শপিং শেষ করলাম। সবাইকে বড়দিনের (অগ্রিম) শুভেচ্ছা.... ... .. . ~*~*~ শুভ বড়দিন ~*~*~


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।