আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুভ জন্মদিন সামহয়ারইনব্লগ! যে বৃত্তের অন্ত নেই: বৃত্তান্ত লিখার চেষ্টা তাই বেপথু!

''সংবাদপত্র যা ছাপে তার একটা বড় অংশই হলো 'লর্ড জোনস মারা গেছেন' ধরণের তথ্য। অথচ সেটি যাদের জানানো হয় সেই জনগণ খবরই রাখে না যে লর্ড জোনস বেঁচে ছিলেন''

হে ভার্চুয়াল আত্মা, প্রিয় সামহয়ারইন ব্লগ, তোমাকে ষষ্টাঙ্গে প্রণাম! প্রভাতে মোর অর্থ চিন্তা, মধ্যাহ্নে জটর চিন্তা, সায়াহ্নে মোর অলস চিন্তা.. না পারিলাম তোমায় চিনতে, তাই আজ আমি তোমার চিন্তুকূপে মগ্ন। চিন্তাময়ী ব্লগ তুমি- আমার চিন্তা কখনো করেছো কি? সহজ উত্তর 'না'। আমরা সবাই সামু ব্লগের চিন্তায় মোডেমে টাকা খরচ করি, অফিসে বসের ঝাড়ি খাই, ল্যাপটপের টাচপ্যাড নষ্ট করি, ভার্চুয়াল ঝগড়ায় মাঠ গরম করি সামু থাকে অনলাইনের আঙ্গিনাজুড়ে। অনিয়মিত হলেও কিন্তু সময়ে অসময়ে তোমার পাদপদ্মে অক্ষরাঞ্জলি নিবেদনে এই দাসানুদাস ব্যস্ত থাকে।

আজও তেমনি। আজ থেকে ঠিক পাঁচ বছর আগে। সেই ১৫ই ডিসেম্বর ২০০৫ সাল। মাতৃভাষার মনের ইচ্ছা, কামনা, বাসনা, অনুভূতি বাংলায় লেখার আর শেয়ার করার জন্য কমিয়্যুনিটি ব্লগিং এর সূচনা। আমাদের প্রিয় সামহোয়্যার ইন ব্লগের জন্ম।

আগামীকাল সব ঠিক থাকলে যদি সূর্য উঠে; তবে নিশ্চয় ১৯শে ডিসেম্বর। এবং রোববারও। মধ্য শীতের পড়ন্ত সূর্য যখন যাই যাই করবে তখন আনুমানিক বিকেল ৫টায়। ঠিক সেই সময়ে সামহোয়্যার ইন ব্লগের উদ্যোগে বসবে এক আনন্দ মেলা। জরুরি প্রেসনোট: আজকাল প্রেসনোট ছাড়া কোন কিছু জমে না।

নোটিশ ছাড়া কাজ হয় না। সেই প্রেসনোটের মতো করে যদি বলি তবে বলতে হয়, সমস্ত দায়িত্বশীল অ্যাডমিন ও ব্লগারের সম্মিলনে বাংলা ব্লগ দিবস উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। আপনার যারা আসবেন প্রত্যেকেই নিজ দায়িত্বে জ্যাম পেরিয়ে, অফিস ছুটির কিছুটা আগে চোরাগোপ্তা পলায়ন করে, নিজ খরচে রিক্সা-সিএনজি অটোরিকসায় চড়ে বা পদব্রজে চলে আসুন। আমরা সবাই আছি। জানা, ফিফা, কৌশিক, জীবনানন্দদাশের ছায়া থেকে শুরু করে গতসপ্তাহের মডারেশন প্যানেল থেকে ছাড় পাওয়া সদ্যজাত ব্লগারদের সম্মিলিত কোরাসে আসুন গাই ব্লগের প্রশস্তিগীতি।

ফেসবুকজীবীদের ঈর্ষাকাতরতা কেউ কেউ প্রলাপ বকলেও থেমে থাকবে না সামুর দৌঁড়। যেখানে তাদের দৌঁড় মসজিদতো নয়-ই, মসজিদের সিঁড়ি পর্যন্ত! স্ট্যাটাসটা দেখুন। তিনি মানসিকতায় গরীব, তাতে কী গরিবের কি কোন স্ট্যাটাস থাকতে নেই? কিন্তু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই দাদারা মত প্রকাশ করতে পারেন। আজ এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে সামু তার জন্মদিন পালন করতে গেলে, সারা বিশ্ব যখন জুলিয়ানের উইককাণ্ডে কাঁপছে। সেলিম রেজা নিউটন যাকে বলছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ কি খ্যাপা বিজ্ঞানী, বিন লাদেন, নাকি ভিনগ্রহের প্রাণী ? সাংবাদিকের কলামে তিনি এমন 'উত্তেজনা ও গোলমাল এই যুগের আবহ।

সেই আবহে উইকি একসঙ্গে চমক ও চিন্তা দুটোই জোগাল। মঞ্চের আলোর মাঝখানে হঠাৎ মুখোশ খসে গেলে দেখা গেল, সিংহাসনে বসা লোকটি আসলে খলনায়ক। সাধু হয়ে গেল চোর আর চোর হলো সাধু। ' আবার বির্তকের চোরাসুরে কেউবা আবার গাইছে জুলিয়ানের অমর কীর্তির ব্যাতিক্রমী ব্যাখা- 'আমি মনে করি, জুলিয়ান আঘাত করেছেন মার্কিন হেজিমনিতে। হেজিমনি গড়ে ওঠে সম্মতির মধ্যে, যার বিস্তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সম্মতিদানগোষ্ঠীর মধ্যে গড়ে উঠতে দেখেছে গত অর্ধশতক ধরে, যারা তার স্পাইডার ওয়েবে নিরুপায় মাছির মত আটকা পড়ে আছে বুকভরা কামনা, চামচভরা প্রাপ্তি আর চোখভরা সন্দেহ নিয়ে।

' কোথায় কবিতা- সবই তো দেখি ববিতা! বাংলা ভাষায় লেখা সকল পদ্যই কবিতা নয়- ববিতাও বটে। তেমনি জাতকূল ব্রাহ্মনরাও আছেন ব্লগের নামাবলী পিঠে চেপে। আছে একই ভাবধারার নির্দিষ্ট কিছু লেখকের পরষ্পর পিঠ চুলকাচুলকির চেয়ার। এইটা কি? তা নিশ্চিত নয় যেনেও আমি জানি এটা কখনো ব্লগ নয়। যেমনি নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে যেতে হলে আপনাকে পেরুতে হবে এই পথ আর বাংলা ব্লগের ঘিনঘিনে গ্রাম্যতায় ভরপুর কামার ভ্লগ তো আছেই।

ভিংচি কেটে কেউ রাম সাজতে চায়, আবার কেউ বা হনুমান। কিন্তু http://www.choturmatrik.com/' target='_blank' >তারা কিন্তু না হয় বাদড়, না হয় http://sonarbanglablog.com/' target='_blank' >শকুন ! তবুও বোনাস আছে আলস্যে ভরপুর চনাচুরের তাজা স্বাদ দিতে আছে ২টাকার ম্যাগাজিনও । যেকারণে ব্লগের ক্ষমতা অপার- চলতি সপ্তাহের ২টি সেরা পোস্ট! বকা বকি বাদ। সে সব আজ নয়। আজ বাদে কাল জন্মদিন তারে নিয়েই কিছু বলি।

আচ্ছা ব্লগার ভাইরা, খেয়াল করেছেন সেই পোস্টটি? হা-মীমের পোশাক কারখানায় আগুন লাগার পর প্রথম পোস্ট টি? ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৪২ এ যখন পোস্টটি প্রথম পাতায় এলো তখনও হা-মীমের অগ্নিতে বস্ত্রবালক-বালিকারা আত্মাহুতির সূচনায়। প্রথাগত অনলাইন মিডিয়া আমাদের খবরটি দিয়েছে আরো একঘন্টা পর! এখানেই ব্লগ জার্নালিজমের জয়জয়কার। ছোট্ট সেই পোস্ট ''এফ বি সি সি আই এর প্রেসিডেন্ট এ. কে. আজাদ এর গার্মেন্টস আশুলিয়া (দ্যাটস ইট) এ ভয়াবহ আগুন লেগেছে (৯ম, ১০ তলায়) কেউ কি কোনো আপডেট জানেন?? প্লিজ জানান...........'' এর মাঝে লুকিয়ে আছে আতংক, ভয়, প্রতিবেশী জনতাকে সতর্ক করার আহ্বান। কিংবা তার ঠিক একদিন আগের আরেকটি পোস্ট! শাহবাগ পাড়ার বুদ্ধিজীবীর লেখা চট্টগ্রামের শ্রমিক বিক্ষোভ নিয়ে পোস্টটি দেখেছেন? সত্যিই অসাধারণ ছিল। দিনভর টিভি চ্যানেলের সংবাদ আর অনলাইন নিউজ এজেন্সির বদান্যতায় সংবাদ নামক যা গেলানো হলো- তার বিপরীত মেরু থেকে পরিবেশিত হয়েছে এই পোস্টটি।

ব্লগ জার্নালিজমের ঐতিহাসিক ভূমিকায় এখন তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে ঘটনার সেই সব অনালোকিত দিক যা মিডিয়া নামক বাত্তির তলায় আন্ধার থাকে সবসময়! প্রথাগত গণমাধ্যমের বাইরে ব্লগ প্রতিনিধির পাঠানো এই সংবাদের বাইরে সেই এই পোস্টটি রচিত। দিনমজুর নিকের ২জন সহ-ব্লগার প্রতিনিধি সর্বশেষ আপডেট দেয়ার জন্য সেই মুহুর্তে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছেন। রাতে দাড়িয়ে ছিলেন ঘটনাস্থলের পাশেই। শখের বসে নয় নিশ্চয়! তাদের পাঠানো তথ্যে সেদিন আপডেট হয়ে উঠে সেদিনের সেই পোস্টটি। এই ব্যতিক্রমী ব্লগ রোজনামচা পেশ করা হয় কেবল সামহয়ারইন ব্লগারদের দরবারে! সেদিন আর বেশি দূরে নয়, আমাদের সামহয়ার হয়ে উঠবে এক একটি ভার্চুয়াল রবিনহুড, ক্ষ্যাপা মাউসের মালিক, আন্তর্জালিক চেগুয়েভারা কিংবা সময়ের সাহসী তরুণ উইকিকাণ্ডের রচয়িতা অনলাইন পণ্ডিত জুলিয়ান।

ব্লগ কি প্রথাগত গণমাধ্যমের প্রতিপক্ষ? আচ্ছা, ব্লগ কি প্রথাগত গণমাধ্যমের প্রতিপক্ষ? এই প্রশ্নের উত্তরে কত না আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক! কিন্তু আমরা তো জানি, বাংলাদেশ এখন এমন এক অস্থিরতা, যেখানে শাসক যেমন চটকদার, আমজনতা তেমনিই মলিন। অর্থনীতি, রাজনীতি এবং প্রশাসনিক দুনিয়ায় চলছে মাঠকাঁপানো ধান্দাবাজি। শরীরের ধমনির ভেতর রক্ত চলাচলের মতো করে প্রবাসের শ্রমিকের টাকায় গড়ে উঠা দেশের অর্থনীতিতে চলছে একমুখী শোষণ। ক্ষমতার কেন্দ্রীভবনকে আলোচনায় আনলে বলা যায়, এ জনপদ শোষকের রাষ্ট্র। এই জনপদে আমার আপনার গরিবী জানগুলো রক্তের উচ্চচাপে ভুগছে।

ক্ষমতার চূড়ায় এখানো ইংরেজ আমলের ঔপনিবেশিক গড়নের মুকুট। মেট্রোপলিটন ফেসবুক কখনোবা উচ্চস্বর হয় ঠিকই কিন্তু ঠিকই প্রতিধ্বিনির মতো হারিয়ে যায়। প্রথাগত সাংবাদিকতার বিদায় ঘন্টা: দেশের মোট জনগণের দশ ভাগের এক ভাগের বাস এ শহরে যারা প্রায় দেড় কোটি। দেশের মোট বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস ও নাগরিক সুবিধার যত অংশ ঢাকা শহর ভোগ করে, তা অনুপাতে ওই দশ ভাগের এক ভাগের থেকে অনেক বেশি। তাই ঢাকা শহরের খবরই হচ্ছে সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধান খোরাক।

টেলিভিশনে প্রচারিত যাবতীয় অনুষ্ঠানেও তাদেরই প্রাধান্য। আছেন ভদ্দরনোকদের নিয়ে সিভিল সোসাইটির সমিতি। এই দেশ-এই রাজধানী এখন দেশি-বিদেশি বিত্তের মিলনকেন্দ্র। সারাদেশের বিত্তবান আর কর্তৃত্বপরায়নদের ঘাঁটিও এ মহানগরেই। ঠিক যেমন ছিল ব্রিটিশ ভূমির জমিদাররা কলকাতা জুড়ে।

চাই একজন ভার্চুয়াল রবিনহুড বাংলার ভয়াবহ ১১৭৬ সনের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ব্যাখ্যায় কার্ল মার্কস বলেছিলেন, তাঁতীদের হাড়গোড়ে বাংলার শ্যামল জমিন সাদা হয়ে গিয়েছিল। সেই শোষণ তো আজও চলছে। এখন দরকার নতুন উইকিকাণ্ড। একজন যোগ্য জুলিয়ান। একজন ভার্চুয়াল রবিনহুড।

দরকার একটি বিকল্প মিডিয়া। সামু সে পথের পথিক থাকলে তার সাথে পা বাড়াতে রাজি তো আপনারা?? একটি বিশেষভাবে জ্ঞাপন বার্তা! সংবাদ, সত্য, নিখাদ বিনোদন, তুমুল আড্ডা, ভার্চুয়াল ঝগড়ার অঙ্গীকার নিয়ে আমাদের সামহয়্যারইন! কেউ কি আপনাকে সত্য খবরটি জানায়? কেউ কি আছেন এমন যে আপনাকে দেয় নিখাদ বিনোদন? কিভাবে বুঝলেন অনর্থক সাংবাদিকতার নামে পত্রিকা/টিভিতে সত্যি হিসেবে যা পরিবেশিত হলো তা-ই বাস্তব? সকল টিভি চ্যনেলই/পত্রিকাই কি আপনার রুচির সাথে মাননসই? 'না'! এতসব 'না' এর বিপরীতে কেবল একটি হ্যাঁ- 'সামহয়ারইনব্লগ'। যে সব ঘটনা বিশ্বকাঁপানো, যে সব খবর আড়ালে লুকানো, আমাদের কাজ সব জানানো। আমরাই আপনাকে দিবো বিনোদন দুনিয়ার সকল আনন্দ। জানাবো ঘটনা আর ঘটনার পেছনের খবর।

আমাদের ব্লগার/কর্মীরা আপনার তথ্যক্ষুধা মেটাতে ছুটে চলছে গ্রাম-নগরে, প্রবাসের মাটিতেও। সংবাদ আর বিনোদন দুনিয়ার সবটুকু নিয়ে আমরা পাড়ি দিচ্ছি ২৪ ঘন্টার সাথে সাত দিন! আমরা-ই কেবল আপনাকে দিবো ব্যাতিক্রমের চেয়েও ভিন্ন কিছু' ! চোখ রাখুন আপনার কম্পিউটারের মনিটরে। শিঘ্রই আরো নতুন রূপে আসছে আমার আপনার প্রিয় ব্লগ সামহয়ারইনব্লগ! আমাদের আঙ্গুল ছুটে চলে ব্লগ পোস্টের সন্ধানে/ আমাদের মন খুঁতখুঁতে/ আমাদের চোখের আলো অবারিত/আমাদের অভিধানে নেই একটি শব্দ-বিশ্রাম' সামহয়ারইনব্লগ! বি. দ্র. পোস্টটি উৎসর্গ করা হলো বিকল্পধারার মিডিয়া গড়ার সৈনিক জুলিয়ান এসেঞ্জ আর পৃথিবীর তাবৎ ব্লগারদের!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।