আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবি হেলাল হাফিজের “অচল প্রেমের পদ্য”

আমি বিধাতার রঙ্গে আঁকা এক অস্পষ্ট ছবি।

অচল প্রেমের পদ্য - ০১ আছি। বড্ড জানান দিতে ইচ্ছে করে, - আছি, মনে ও মগজে গুন্‌ গুন্‌ করে প্রণয়ের মৌমাছি। অচল প্রেমের পদ্য – ০২ যুক্তি যখন আবেগের কাছে অকাতরে পর্যুদস্ত হতে থাকে কবি কিংবা যে কোনো আধুনিক মানুষের কাছে সেইটা বোধ করি সবচেয়ে বেশি সংকোচ আর সঙ্কটের সময়। হয়তো এখন আমি তেমনি এক নিয়ন্ত্রণহীন নাজুক পরিস্থিতির মুখোমুখি, নইলে এতদিন তোমাকে একটি চিঠিও লিখতে না পারার কষ্ট কি আমারই কম।

মনে হয়, মরণের পাখা গজিয়েছে। অচল প্রেমের পদ্য - ০৩ কোনদিন, আচমকা একদিন ভালোবাসা এসে যদি হুট করে বলে বসে,- ‘চলো যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাই’, যাবে? অচল প্রেমের পদ্য - ০৪ তোমার জন্য সকাল, দুপুর তোমার জন্য সন্ধ্যা তোমার জন্য সকল গোলাপ এবং রজনীগন্ধা। অচল প্রেমের পদ্য - ০৫ যদি যেতে চাও, যাও আমি পথ হবো চরণের তলে না ছুঁয়ে তোমাকে ছোঁব ফেরাবো না, পোড়াবোই হিমেল অনলে। অচল প্রেমের পদ্য - ০৬ আমাকে উস্টা মেরে দিব্যি যাচ্ছো চলে, দেখি দেখি বাঁ পায়ের চারু নখে চোট লাগেনি তো; ইস্‌! করছো কি? বসো না লক্ষ্মীটি, ক্ষমার রুমালে মুছে সজীব ক্ষতেই এন্টিসেপটিক দুটো চুমু দিয়ে দেই। অচল প্রেমের পদ্য - ০৭ তোমার হাতে দিয়েছিলাম অথৈ সম্ভাবনা তুমি কি আর অসাধারণ? তোমার যে যন্ত্রনা খুব মামুলী, বেশ করেছো চতুর সুদর্শনা আমার সাথে চুকিয়ে ফেলে চিকন বিড়ম্বনা অচল প্রেমের পদ্য – ০৮ এক জীবনের সব হাহাকার বুকে নিয়ে অভিশাপ তোমাকে দিলাম, তুমি সুখী হবে, খুব সুখী হবে।

বেদনা আমাকে নিয়ে আশৈশব খেলেছে তুমুল আর তিলে তিলে শিখিয়েছে সহনশীলতা, নিলাজ নখের মত দুঃখ কেটে কেটে আমি আজকাল অর্জন করেছি ঠিক উদ্ভিদের অদ্ভুত মৌনতা, ওলো উল্লাসিনী না জেনে শুনে কেনো দিতে গেলে টোকা? তুমি আর কী বেদনা দেবে, কতোটা নাড়াবে? বালখিল্য এই খেলায় আমার চেয়েও বেশী তুমিই হারাবে। এক জীবনের সব হাহাকার বুকে নিয়ে অভিশাপ তোমাকে দিলাম, তুমি সুখী হবে, ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে, দেখে নিও, খুব সুখী হবে। অচল প্রেমের পদ্য - ০৯ আজন্ম মানুষ আমাকে পোড়াতে পোড়াতে কবি করে তুলেছে মানুষের কাছে এওতো আমার এক ধরনের ঝণ। এমনই কপাল আমার অপরিশোধ্য এই ঝণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। অচল প্রেমের পদ্য – ১০ কে আছেন? দয়া করে আকাশকে একটু বলেন, সে সামান্য উপরে উঠুক, আমি দাড়াঁতে পারছি না।

অচল প্রেমের পদ্য – ১১ তুমি কি জুলেখা, শিরী, সাবিত্রী, নাকি রজকিনী? চিনি, খুব জানি তুমি যার তার, যে কেউ তোমার, তোমাকে দিলাম না - ভালোবাসার অপূর্ব অধিকার। অচল প্রেমের পদ্য - ১২ ভালোবেসেই নাম দিয়েছি ‘তনা’ মন না দিলে ছোবল দিও তুলে বিষের ফনা। অচল প্রেমের পদ্য – ১৩ হয়তো তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি নয় তো গিয়েছি হেরে থাক না ধ্রুপদী অস্পষ্টতা কে কাকে গেলাম ছেড়ে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।