আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলা-বিদ্বেষীদের সাম্প্রদায়িক প্রচারণা

১৯৫২ সালে বলা হয়েছিল, ভাষা-আন্দোলন করছে কমিউনিস্টরা, নাস্তিকেরা। একুশে ফেব্রুয়ারিতে কলকাতা থেকে দলে দলে হিন্দুরা এসেছে, তারা ধুতি বদলে পায়জামা পরে এই আন্দোলন করেছে। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে কিছুদিন পরে ঢাকায় এসে শেখ মুজিব বললেন, ভাষা আন্দোলন করেছে কলকাতা থেকে আসা হিন্দুরা? রফিক, শফি, বরকত, সালাম-- এরা হিন্দু? হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে, তাদের মধ্যে হিন্দু কয়জন? ইতিহাস সাক্ষী, বাংলা-বিদ্বেষী শাসকগোষ্ঠীর সেই সাম্প্রদায়িক প্রচারণায় কাজ হয়নি। সারা বাংলায় রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ল। উপ্ত হলো স্বাধিকার আন্দোলনের বীজ, বাঙালি গর্জে উঠল: তুমি কে, আমি কে বাঙালি বাঙালি, তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বলা হলো, কোনো মুসলমান যদি যুক্তফ্রন্টকে ভোট দেয়, তাহলে তার বিবি তালাক হয়ে যাবে। বাংলার মানুষ দলে দলে ভাসানী-শেরে বাংলা- সোহরাওয়ার্দীর যুক্তফ্রন্টকে ভোট দিল আর ভাষা-আন্দোলনের বিরোধিতাকারী নুরুল আমিন সরকারের মুসলিম লীগকে চরমভাবে পরাজিত করল। আল্লাহর রহমতে কোনো মুসলমানের বিবি তাতে তালাক হয়ে যায়নি। ১৯৭১ সালে বলা হয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধারা কাফের। তারা ইন্ডিয়ার দালাল।

দুষ্কৃতকারী। কিন্তু রাজাকার-আলবদরদের এই অপপ্রচারে কাজ হয়নি। দেশের প্রায় সব মানুষ তখন হয়ে উঠেছিল মুক্তিযোদ্ধা। বাংলার সব মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। ওই রাজাকার-আলবদর আর তাদের রক্ষক পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী পরাজিত হয়েছিল।

হাদিস শরিফে আছে, ‘ কোনো ব্যক্তি তার ভাইকে (মুসলমানকে) কাফের বলবে না। কোনো না কোনো ব্যক্তি অবশ্যই কাফের, কিন্তু কাউকে কোনো ব্যক্তি কাফের বললে সে যদি কাফের না হয় তাহলে যে-ব্যক্তি তাকে কাফের বলেছে সেই নিজেই তৎক্ষণাৎ কাফের হয়ে যাবে। ’ ( বোখারী শরিফ ও মুসলিম শরিফ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।