আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনে পড়ে একদিন আষাঢ়ের

পার হয়ে যাই তালুকদারের বাড়ি

মনে পড়ে একদিন আষাঢ়ের বনভোজন । একটা উঁচু টিলার ওপরে বসে আমরা কজন একে অন্যের চোখে ভাসছিলাম, কথা বলছিলাম । রহস্যময় অন্ধকারের ওপার থেকেও নতুন করে আরেকবার খুবই পরিচিত মনে হচ্ছিল আমাদের স্বপ্ন । ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে থাকা পোড়োবাড়িটার সঙ্গেও কোথাও যেন আমাদের সম্পর্কের কথা বুঝতে পারছিলাম আমরা । মনে পড়ে, সেবার বনভোজনে এসে কী যেন হারিয়ে ফেলেছিল অপর্ণা ।

আমরা কজন হৈহৈ বেরিয়ে পড়েছিলাম ওপারের কুয়াশায় । হিমঋতুর ওপার থেকে যখন ফিরলাম তখন আমাদের সঙ্গে শুধু সূর্যাস্তের গল্প । দুঃখ করে নি অপর্ণা । আমরা যে খুঁজতে বেরিয়েছি, এই আনন্দেই ও তখন ভোরের পাতার মতো কাঁপছে । মনে পড়ে, সে-ই তার প্রথম শিথিল আনন্দে ভাসা ।

এতদিনে হয়ত এসব গল্প ভুলে গেছে জলসিঁড়ি ফরেস্ট । এতদিন পর এখানে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না কোনো অস্ফুট বৃষ্টির সংলাপ । আমাদের পায়ের পাতা ছুঁয়ে বয়ে যাবে অনেক অবসাদের জল—সুদীর্ঘ ছুটির মতো । আমরাও কি ভুলে যাবো ভাসতে? অন্ধের পাশে অন্ধকে বসিয়ে রেখে, তারপর রাস্তার কল থেকে কয়েক ঢোক জল গিলে গান গাইতে গাইতে চলে যায় ধুলো খাওয়া দিনগুলো । এই তবে ভাসা আর এই কি গান? পিচরাস্তার ধারে আগুনের গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে রেইনট্রি, গুঁড়িতে হেলান দিয়ে পা ছড়িয়ে ঝিমায় সময় ।

আজ এইসব ভেবে ভেবে যদি তার মনে হয়, যদি সে বলে ওঠে: বছর বছর কেক কাটতে ছাই ভাল্লাগে না । শুধু শুধু বুড়িয়ে যাচ্ছি মনে করানোর কী দরকার । চোখে ঠুলি এঁটে অনেক হয়েছে ধুলো খাওয়া... তখন সে খুব রুগ্‌ণ থাকবে বোঝা যায় । আবার আষাঢ় এলে পড়ে থাকে বন্ধ হোস্টেল । জন্মশাসনের কথা আর ভুলতে পারবে না এ-জীবন ।

পারলেও, এতদিন পর সেই অস্ফুট বৃষ্টির সংলাপ এখানে খুঁজে পাবে না আর । অনেক কাল হলো, জাফলঙগামী এক্সপ্রেস বাস শুকনো পাতা ঝরিয়ে চলে গেছে । পথে পড়ে আছে ভিজে ঘাস । আজ আবার সাতই আষাঢ় । আজ লিখে রাখি পুণ্যাশ্রমের বন্ধুরা, লিখি, অপর্ণার চোখের পাতায় নেমে আসুক শীতকাল, জলসিঁড়ির সূর্যাস্ত...


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।