আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

[ংন] ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র ‘মনের মানুষ’ চলচ্চিত্রের বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ [/ংন]

vagabond only

ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র ‘মনের মানুষ’ চলচ্চিত্রের বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ সম্প্রতি বাংলাদেশ এবং ভারতের অর্থলগ্নিকারকদের যৌথ অর্থায়নে গৌতম ঘোষের চলচ্চিত্র ‘মনের মানুষ’ নির্মিত হয়েছে। এই চলচ্চিত্রটিতে সমগ্র বাঙালি জাতির ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মরমী কবি এবং দার্শনিক লালনের জীবন ও তাঁর মানবধর্মের সাধনাকে বস্তুনিষ্টভাবে উপস্থাপন করা হয়নি বলে মনে করছি। বাউল লালন ফকির এই ভূ-ভাগের জনপদের মানুষের কাছে অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনার মূর্ত প্রতীক। তিনি জাত-পাত, শ্রেণী-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল প্রকার বিভেদ-বৈষ্যমের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেছেন। তাঁর সম্পর্কে অনৈতিহাসিক, কষ্ট-কল্পিত, ভিত্তিহীন কাহিনী চিত্রায়ণ বা উপস্থাপন করাকে বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মনে করি।

সাধক পুরুষ লালনকে হিন্দু অথবা মুসলমান হিসেবে চিহ্নিত করা অন্যায় এবং তা করার চেষ্টাকে গোষ্ঠীগত স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কাজ বলে মনে করি। কেননা লালন কখনো নিজের জন্মগত ধর্ম পরিচয় প্রকাশ্যে উপস্থাপন করেননি। বরং ধর্ম সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রচলিত ‘ধর্ম পরিচয়’-এর রাজনীতিকেই চ্যালেঞ্জ করে। যৌনতা এবং প্রেম সম্পর্কে বাউল সাধকদের ধ্যান-ধারণা এবং জীবনাচরণ অমার্জিত এবং স্থূলভাবে চিত্রায়ণ বা উপস্থাপনাকে অন্যায় বলে মনে করি। এতে করে সাধকদের প্রতি সীমাহীন উদাসীনতা এবং মূর্খতা প্রদর্শিত হয়।

যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’ এ আমরা এ বিষয়টির কিছু নমুনা ল্য করেছি। যা বানিজ্যিক মুনাফা এবং আন্তর্জাতিক লাভালাভের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে মনে করি। লালনের মতো একজন মরমী কবি এবং সাধকের প্রতি একে একটি পণ্যায়িত আগ্রাসন হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। যার গুরুত্ব এবং ভয়াবহতা সা¤প্রদায়িক আগ্রাসনের চেয়ে কোনোভাবেই কম নয়।

সার্বজনীন মানবধর্মের সাধক লালনকে নিয়ে সুনীল গঙ্গোপ্যাধায়ের উপন্যাস ‘মনের মানুষ’ এবং গৌতম ঘোষের চলচ্চিত্র ‘মনের মানুষ’ শুধুমাত্র দেশের সীমানার ভেতর নয় বরং আন্তর্জাতিক দর্শকদের কাছে কী ধরনের বার্তা পৌছে দেবে তা নিয়ে আশঙ্কা স্বাভাবিক এবং বিবেচনার দাবী রাখে। আমরা এই চলচ্চিত্রটির সচেতন পর্যবেণ আশা করছি। ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।